অস্ট্রেলিয়ান ওপেন: স্টিভেনসের স্বপ্নযাত্রা থামালেন আজারেঙ্কা- লি নার সামনে অসহায় শারাপোভা
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে কাল দুটি স্বপ্নের মৃত্যু ঘটল। দুর্দান্ত গতিতে ছুটতে থাকা মারিয়া শারাপোভাকে ‘ক্র্যাশ ল্যান্ড’ করালেন লি না। সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে আকাশে উড়তে থাকা স্লোয়ান স্টিভেনসকে বাস্তবতার জমিনে নামিয়ে আনলেন ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা।
এবার সত্যিই অবিশ্বাস্য খেলছিলেন শারাপোভা। কাল লির কাছে তাঁর পরাজয়টাও হলো অবিশ্বাস্য। শুধু হেরেছেন বলেই নয়, হেরে যাওয়ার ধরনটাও বুঝতে দেয়নি, এই শারাপোভাই আগের পাঁচটি ম্যাচে সাকল্যে মাত্র নয়টি গেম হেরেছেন। যেটি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে রেকর্ড। এই পাঁচ ম্যাচের প্রথম দুটি জিতেছিলেন ৬-০, ৬-০ গেমে! সেই শারাপোভা কাল দাঁড়াতেই পারলেন না। কোর্টে শারাপোভার দ্রুত নড়াচড়ায় দুর্বলতাটাকেই দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে লি জিতলেন ৬-২, ৬-২ গেমে। আগের ম্যাচে সেরেনাকে হারিয়ে চমকে দেওয়া স্টিভেনস প্রথম সেটে অসহায় আত্মসমর্পণের পর দ্বিতীয় সেটে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত সরাসরি সেটেই হেরেছেন।আজারেঙ্কার জয় ৬-১, ৬-৪ গেমে। অবশ্য দ্বিতীয় সেটের শেষ গেমটির আগে হুট করে ইনজুরি টাইমআউট নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন এই বেলারুশিয়ান। দ্বিতীয় সেটে ১৯ বছর বয়সী আমেরিকান তখন ৫-৩ গেমে পিছিয়ে। একটা গেম জিতলেই ফাইনালে আজারেঙ্কা। সার্ভিসও করছেন তিনি। কিন্তু সেই সময়ই দুর্দান্ত লড়াই করে আজারেঙ্কার পাঁচটি ম্যাচ পয়েন্ট নষ্ট করেছেন। শেষ পর্যন্ত গেমটাও জিতে স্কোর বানিয়ে দিয়েছেন ৫-৪। যেমন ছন্দে ছিলেন, নিজের সার্ভিসটা কাজে লাগিয়ে ৫-৫ করে ফেলতে পারতেন হয়তো। কিন্তু সেই সময়ই টাইমআউটের ১০ মিনিটের বিরতির সুযোগটা নিয়ে নেন আজারেঙ্কা। নিয়ম অনুযায়ী এই সুযোগ তিনি পেতেই পারেন। কিন্তু নৈতিকভাবে এটা কতটা ঠিক হয়েছে, প্রশ্ন সেখানেই। কারণ অনভিজ্ঞ স্টিভেনস আর ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁর সার্ভিস ব্রেক করেই ম্যাচটা জিতে নেন আজারেঙ্কা। এএফপি, রয়টার্স।
আজারেঙ্কার এই ‘কূটকৌশলের’ কড়া সমালোচনা করেছেন নামী ধারাভাষ্যকার প্যাম শ্রাইভার। ইএসপিএনে তাঁর সতীর্থ প্যাট্রিক ম্যাকেনরোও এটিকে ‘প্যারোডি’ আখ্যায়িত করে টুইট করেছেন। তবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আজারেঙ্কা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, ‘পুরো ম্যাচেই আমি আসলে খানিকটা সমস্যায় ভুগছিলাম। দ্বিতীয় সেট থেকে আমার পিঠেও সমস্যা হচ্ছিল। এটা আরও খারাপের দিকেই যাচ্ছিল। আমার আসলে আরও আগেই আমার ট্রেনারকে ডাকা উচিত ছিল। নিঃশ্বাসই নিতে পারছিলাম না। আমাকে আসলে কোর্টের বাইরে যেতেই হতো।’
এই ব্যাখ্যাতেও এই বিতর্ক হয়তো মুছে যাবে না। কিন্তু লি না একটা বিতর্ক মুছেই ফেলেছেন প্রায়। ২০১১ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে চীনে মহাতারকা বনে যাওয়া লিকে নিয়ে চীনেই অনেক ধরনের সমালোচনা হচ্ছিল গত কিছুদিন। লি অনুশীলনে মনোযোগী নন, এমন কথাও উঠেছিল। কিন্তু কাল এক ঝড়ে যেন সব উড়িয়ে দিলেন। ফর্মের কারণে শারাপোভাই ছিলেন ফেবারিট। কিন্তু লি না সব মিথ্যা বানিয়ে দিলেন।
No comments