পশ্চিমারা বিশ্বাসঘাতক- মানুষ আমাকে ভালোবাসে - গাদ্দাফির সাক্ষাৎকার
লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি পশ্চিমা বিশ্বের নেতাদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বিবিসিসহ পশ্চিমা মিডিয়াকে বলেন, দেশের সব মানুষ তাকে ভালোবাসে এবং রাস্তায় তার বিরুদ্ধে কোনো বিক্ষোভ হওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন।
গাদ্দাফি ক্ষমতা থেকে সরে না দাঁড়ালে লিবিয়ায় সামরিক অভিযান চালানো হতে পারে বলে ব্রিটেন সতর্কবাণী উচ্চারণের পর লিবীয় নেতা এ সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। ত্রিপোলিতে সাক্ষাৎকারটি একসঙ্গে গ্রহণ করেন বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সম্পাদক জেরিমি বোয়েন, এবিসির ক্রিস্টিয়ানি আমানপাউর ও সানডে টাইমসের এক রিপোর্টার। যেখান থেকে বিমানবন্দর দেখা যায়, ত্রিপোলির তেমন এক রেস্টুরেন্টে এ সাক্ষাৎকার প্রদানের সময় মোটেই মনে হয়নি যে, তিনি আদতে কোনো চাপের মধ্যে রয়েছেন। গোটা সাক্ষাৎকার পর্বেই তাকে নিরুদ্বেগ দেখা গেছে। তিনি পশ্চিমা নেতাদের সমালোচনা করতে গিয়ে উল্লেখ করেন, তারা লিবিয়াকে আবার উপনিবেশ বানাতে চায়।
গাদ্দাফির সাক্ষাৎকারটির অংশবিশেষ
জেরিমি বোয়েন : সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আপনার সখ্য লক্ষ্য করা যায়। টনি ব্লেয়ারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পশ্চিমা দেশের নেতাও এখানে এসেছেন। অথচ এখন অনেক পশ্চিমা দেশের নেতাই আপনাকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছেন। আপনি কি এটাকে এক অর্থে বিশ্বাসঘাতকতা বলে মনে করেন?
গাদ্দাফি : এটা অবশ্যই বিশ্বাসঘাতকতা। তাদের নৈতিকতার বালাই নেই। অধিকন্তু তারা যদি আমার ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো চেয়েই থাকেন, তাহলে আমার প্রশ্ন হলো, আমি এখন ক্ষমতার কোন আসনখানি অলঙ্কৃত করে আছি যে, আমাকে তা ত্যাগ করতে হবে? আমি কোনো সম্রাট বা বাদশাহ নই।
বোয়েন : কিন্তু এটা তো ঠিক, আপনি জাতিসংঘে লিবিয়ার নেতা হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন। আপনার আনুষ্ঠানিক পদ-পদবি না থাকলেও আপনাকে লিবিয়ার নেতা হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়।
গাদ্দাফি : এটা সম্মানী, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রয়োগের ক্ষেত্রে এর কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই। ব্রিটেনে কার হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে? রানী এলিজাবেথ বা প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের হাতেই কি থাকে ক্ষমতার দণ্ড? আপনারা আসলে লিবীয় পদ্ধতি উপলব্ধি করতে পারেন না।
বোয়েন : আমি পদ্ধতিটি ভালোই বুঝি। তবে আন্তর্জাতিকভাবে আপনাকেই লিবিয়ার নেতা মনে করা হয়।
গাদ্দাফি : আপনারা এখানকার পদ্ধতি বোঝেন না। 'আমি বুঝি'_ এ কথাটি আর বলবেন না, কারণ আসলে বিষয়টি আপনার উপলব্ধিতেই নেই। এখানে কর্তৃত্বটা হলো জনগণের। আপনারা সেটা বোঝেন না।
বোয়েন :তাহলে বুঝিয়ে বলুন যে, জনগণ তাদের কর্তৃত্বটা কীভাবে প্রয়োগ করে? কারণ এখানে কিছু মানুষ রাস্তায় বিক্ষোভ করে বলছে, আপনার লোকেরা তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে।
গাদ্দাফি : রাস্তায় কোনো বিক্ষোভই হয়নি। কোনো বিক্ষোভ কি আপনার চোখে পড়েছে?
বোয়েন : হ্যাঁ, এ ধরনের কিছু বিক্ষোভ আমি প্রত্যক্ষ করেছি।
গাদ্দাফি :কোথায়?
বোয়েন : এ ধরনের কিছু বিক্ষোভ আমি আজকেও দেখেছি।
গাদ্দাফি : কোথায়?
বোয়েন : কিছু বিক্ষোভ আমি জেইয়াতে সংঘটিত হতে দেখেছি। এর আগের দিনও আমি এ ধরনের বিক্ষোভ দেখেছিলাম।
গাদ্দাফি : তারা কি আমাদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছিল?
বোয়েন : না, তারা সবাই আপনাকে সমর্থন করছিল না। এদের মধ্যে কেউ ছিল আপনার পক্ষে, আবার কেউ ছিল বিরুদ্ধে।
গাদ্দাফি : তারা আমাদের বিরোধী নয়। এমন একজনও নেই যে আমাদের বিরোধিতা করে। আর আমাদের বিরোধিতা করবেই-বা কেন? কারণ আমি প্রেসিডেন্ট নই। তারা আমাকে ভালোবাসে। আমার সব লোক আমার সঙ্গেই রয়েছে। তারা সবাই আমাকে ভালোবাসে। জনগণ আমাকে রক্ষার জন্য জীবন বাজি রাখতেও পারবে।
ক্রিস্টিয়ানি আমানপাউর : আপনাকে ভালোবাসে বলে যদি আপনি দাবি করে থাকেন, তাহলে মানুষ বেনগাজি দখল করলই-বা কেন আর তারা আপনার বিরুদ্ধে এ কথাও-বা বলছে কেন?
গাদ্দাফি : এটা আল কায়দার কাজ। এরা আমার জনগণ নয়। তারা বাইরে থেকে এসেছে।
বোয়েন : অতএব এসব মানুষই আপনার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে এবং রাজার পতাকা টানিয়ে দিয়েছে?
গাদ্দাফি : এরা সব আল কায়দা। তারা সামরিক ঘাঁটিগুলোতে ঢুকে পড়ছে এবং সেখান থেকে অস্ত্রশস্ত্র দখল করে নিচ্ছে এবং তারা জনগণকে সন্ত্রস্ত করছে। যাদের হাতে অস্ত্র রয়েছে তারা তরুণ। এখন অবশ্য এরা অস্ত্র সমর্পণ করা শুরু করেছে, কারণ আল কায়দার প্রয়োগ করা মাদকের ঘোর কেটে যাচ্ছে।
বিবিসি থেকে ভাষান্তর : সুভাষ সাহা
গাদ্দাফির সাক্ষাৎকারটির অংশবিশেষ
জেরিমি বোয়েন : সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আপনার সখ্য লক্ষ্য করা যায়। টনি ব্লেয়ারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পশ্চিমা দেশের নেতাও এখানে এসেছেন। অথচ এখন অনেক পশ্চিমা দেশের নেতাই আপনাকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছেন। আপনি কি এটাকে এক অর্থে বিশ্বাসঘাতকতা বলে মনে করেন?
গাদ্দাফি : এটা অবশ্যই বিশ্বাসঘাতকতা। তাদের নৈতিকতার বালাই নেই। অধিকন্তু তারা যদি আমার ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো চেয়েই থাকেন, তাহলে আমার প্রশ্ন হলো, আমি এখন ক্ষমতার কোন আসনখানি অলঙ্কৃত করে আছি যে, আমাকে তা ত্যাগ করতে হবে? আমি কোনো সম্রাট বা বাদশাহ নই।
বোয়েন : কিন্তু এটা তো ঠিক, আপনি জাতিসংঘে লিবিয়ার নেতা হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন। আপনার আনুষ্ঠানিক পদ-পদবি না থাকলেও আপনাকে লিবিয়ার নেতা হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়।
গাদ্দাফি : এটা সম্মানী, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রয়োগের ক্ষেত্রে এর কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই। ব্রিটেনে কার হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে? রানী এলিজাবেথ বা প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের হাতেই কি থাকে ক্ষমতার দণ্ড? আপনারা আসলে লিবীয় পদ্ধতি উপলব্ধি করতে পারেন না।
বোয়েন : আমি পদ্ধতিটি ভালোই বুঝি। তবে আন্তর্জাতিকভাবে আপনাকেই লিবিয়ার নেতা মনে করা হয়।
গাদ্দাফি : আপনারা এখানকার পদ্ধতি বোঝেন না। 'আমি বুঝি'_ এ কথাটি আর বলবেন না, কারণ আসলে বিষয়টি আপনার উপলব্ধিতেই নেই। এখানে কর্তৃত্বটা হলো জনগণের। আপনারা সেটা বোঝেন না।
বোয়েন :তাহলে বুঝিয়ে বলুন যে, জনগণ তাদের কর্তৃত্বটা কীভাবে প্রয়োগ করে? কারণ এখানে কিছু মানুষ রাস্তায় বিক্ষোভ করে বলছে, আপনার লোকেরা তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে।
গাদ্দাফি : রাস্তায় কোনো বিক্ষোভই হয়নি। কোনো বিক্ষোভ কি আপনার চোখে পড়েছে?
বোয়েন : হ্যাঁ, এ ধরনের কিছু বিক্ষোভ আমি প্রত্যক্ষ করেছি।
গাদ্দাফি :কোথায়?
বোয়েন : এ ধরনের কিছু বিক্ষোভ আমি আজকেও দেখেছি।
গাদ্দাফি : কোথায়?
বোয়েন : কিছু বিক্ষোভ আমি জেইয়াতে সংঘটিত হতে দেখেছি। এর আগের দিনও আমি এ ধরনের বিক্ষোভ দেখেছিলাম।
গাদ্দাফি : তারা কি আমাদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছিল?
বোয়েন : না, তারা সবাই আপনাকে সমর্থন করছিল না। এদের মধ্যে কেউ ছিল আপনার পক্ষে, আবার কেউ ছিল বিরুদ্ধে।
গাদ্দাফি : তারা আমাদের বিরোধী নয়। এমন একজনও নেই যে আমাদের বিরোধিতা করে। আর আমাদের বিরোধিতা করবেই-বা কেন? কারণ আমি প্রেসিডেন্ট নই। তারা আমাকে ভালোবাসে। আমার সব লোক আমার সঙ্গেই রয়েছে। তারা সবাই আমাকে ভালোবাসে। জনগণ আমাকে রক্ষার জন্য জীবন বাজি রাখতেও পারবে।
ক্রিস্টিয়ানি আমানপাউর : আপনাকে ভালোবাসে বলে যদি আপনি দাবি করে থাকেন, তাহলে মানুষ বেনগাজি দখল করলই-বা কেন আর তারা আপনার বিরুদ্ধে এ কথাও-বা বলছে কেন?
গাদ্দাফি : এটা আল কায়দার কাজ। এরা আমার জনগণ নয়। তারা বাইরে থেকে এসেছে।
বোয়েন : অতএব এসব মানুষই আপনার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে এবং রাজার পতাকা টানিয়ে দিয়েছে?
গাদ্দাফি : এরা সব আল কায়দা। তারা সামরিক ঘাঁটিগুলোতে ঢুকে পড়ছে এবং সেখান থেকে অস্ত্রশস্ত্র দখল করে নিচ্ছে এবং তারা জনগণকে সন্ত্রস্ত করছে। যাদের হাতে অস্ত্র রয়েছে তারা তরুণ। এখন অবশ্য এরা অস্ত্র সমর্পণ করা শুরু করেছে, কারণ আল কায়দার প্রয়োগ করা মাদকের ঘোর কেটে যাচ্ছে।
বিবিসি থেকে ভাষান্তর : সুভাষ সাহা
No comments