ঠাকুরগাঁওয়ে ৮ এপ্রিল ও পঞ্চগড়ে ৪ এপ্রিল পর্যনত্ম আদালত মুলতবি- বিডিআরের মামলা
ঠাকুরগাঁওয়ে বিডিআর বিদ্রোহীদের বিচারের ২য় দিন বৃহস্পতিবার 'বিশেষ আদালত -২' এ অভিযুক্ত ও গ্রেফতারকৃত ৫১ বিডিআর সদস্যকে হাজির করা হয়। এরপর তাদের চার্জ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আসামিদের আত্মপ সমর্থন ও বিচার মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির জন্য বিডিআর আদালত আইনে কমপ ে২৭ দিনের সুযোগ দেয়ার নিয়মানুযায়ী ৬৪ দিনের সময় দিয়ে আগামী ৮ এপ্রিল সকাল ৯টা পর্যনত্ম আদালত মুলতবি ঘোষণা করা হয়। ঐদিন গ্রেফতারকৃত ৫১ আসামির চার্জ শুনানি ও বিচারের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এরপর আদালত নতুন করে গ্রেফতারকৃত ৩৯ জনসহ ৫১ আসামিকে আবার ঠাকুরগাঁও জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।অন্যদিকে পঞ্চগড় ২৫ রাইফেল ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযুক্ত ২৯ বিডিআর সদস্যকে বৃহস্পতিবার বিশেষ আদালত-২ এ হাজির করা হয়। সকাল সোয়া নয়টায় আদালতের কার্যক্রম শুরম্ন হলে আদালতের সভাপতি মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম প্রথমে আসামিদের হাজিরা ক্রস চেকের মাধ্যমে নিশ্চিত করেন। সকাল সাড়ে দশটায় আদালতের কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করে আগামী ৪ এপ্রিল আসামিদের বিরম্নদ্ধে অভিযোগ গঠনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। খবর নিজস্ব সংবাদদাতাদের।
ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলার প্রসিকিউটর ঠাকুরগাঁও-২০ রাইফেল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহফুজ আলম। গত ২৬ ফেব্রম্নয়ারি ঠাকুরগাঁও বিডিআর ক্যামপে উদ্ভূত নারকীয় পরিস্থিতির বর্ণনা করেন। ঘটনার সময় অভিযুক্তরা কে কি অপরাধে লিপ্ত হন তা উলেস্নখ করেন। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় তৎকালীন অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহেদ কামাল ছদ্মবেশ ধারণ করে পালিয়ে গিয়ে জীবন রা করেছিলেন। ঐদিন ঠাকুরগাঁও ব্যাট্যালিয়নে বিদ্রোহীরা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্রলুটের পর ৭৩৯ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ক্যাম্পের সামনে মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাসত্মায় ব্যারিকেড দেয়। অভিযুক্তরা ঠাকুরগাঁও ব্যাটালিয়নের বিদ্রোহকে পিলখানার বিদ্রোহ সমর্থনের ল্যে পরিকল্পিত উলেস্নখ করে অভিযুক্তদের দৃষ্টানত্মমূলক শাসত্মির দাবি করেন। আদালত আসামিদের কৃত অপরাধের সত্যতা এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আত্মপ সমর্থন করার জন্য তাদের মনোনীত আইনজীবী গ্রহণের সুযোগ রয়েছে বলে অবহিত করে। ডিজি স্বাীদের প্রদত্ত সা্যের সারসংপে আসামিদের কাছে সরবরাহ করার নির্দেশ দেন। আদালত এও বলে, এই সাীদের জেরা আসামি মনোনীত আইনজীবী করতে পারবেন না বরং আসামিদের নিজেদেরই এই জেরা করতে হবে। বেলা ১২টায় ২য় দিনের বিচার কার্যক্রম শুরম্ন হয়ে আদালত চলে বেলা পৌনে একটা পর্যনত্ম। বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম আদালতের সভাপতি হিসেবে আদালত পরিচালনা করেন। বিচার কাজে তাঁকে সহায়তা করেন, এ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতিনিধি ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় এবং বিচারকমণ্ডলীর সদস্য-১ লে.কর্নেল মাহফুজুর রহমান ও সদস্য-২ মেজর দিদার-আল-লতিফ মামলার প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পঞ্চগড় আদালতে মামলার প্রসিকিউটর ও ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল সেরাজুল হক আসামিদের বিরম্নদ্ধে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বক্তব্যে তিনি আসামি মহিবুর রহমানের বিরম্নদ্ধে সেনাবাহিনী কর্তৃক সদর দফতর আক্রমণের মিথ্যা গুজব ছড়ানোর অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, পিলখানার নারকীয় ও নৃশংস ঘটনার সমর্থন জানাতে আসামিরা পঞ্চগড় ব্যাটালিয়নে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটায়। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রম্নয়ারি ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে বিদ্রোহের ঘটনায় কোন রক্তপাত না ঘটলেও সেদিনের ঘটনাকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। তিনি আসামি মহিবুর রহমানের বিরম্নদ্ধে সেনা অভিযানের গুজব ছড়িয়ে বিদ্রোহ সংগঠন ও অন্য ২৮ জনের বিরম্নদ্ধেও বিদ্রোহ সংগঠনের প েনানা অভিযোগ আনেন। একই সঙ্গে তাদের বিরম্নদ্ধে চেন অব কমান্ড ভেঙ্গে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ক্যাপ্টেন (বর্তমানে মেজর) হাসিবুল হোসেন নবীর নির্দেশ অমান্যসহ তার সঙ্গে অশালীন ও ঔদ্ধত পূর্ণ আচরণ, প্রাক্তন ডিজির ছবি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে উলস্নাস প্রকাশ, সেনা অফিসারদের বিরম্নদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগসহ পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে ফাঁকা গুলি ছুড়ে বেসামরিক জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগ আনেন। আদালত প্রসিকিউটরের বক্তব্য শোনে এবং একই সঙ্গে আদালত আসামিদের প েআইনী সহায়তার জন্য একজন বিডিআর কর্মকতর্া নিয়োগ দিতে প্রসিকিউটরকে নির্দেশ দেন। এছাড়া আসামীরা নিজস্ব আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন বলেও আদালত মতামত দেয়। এ সময় আসামি মহিবুর হার্টের অপারেশন করেছে মর্মে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আদালত জেলকোট অনুযায়ী উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য পাবলিক প্রসিকিউটরকে নির্দেশ দেয়। সকাল সাড়ে দশটায় আদালতের কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করা হয়। পরে র্যাব ও পুলিশের কঠোর প্রহরায় আসামিদের পঞ্চগড় জেলা কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
প্রসিকিউটরকে সহায়তাকারী সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন কাজল জানান, ৪ এপ্রিল উভয় পরে শুনানি শেষে আসামিদের বিরম্নদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হলে আদালত ওইদিনই অভিযোগ গঠন করে সাী গ্রহণের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরম্ন করবেন।
বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিচারক প্যানেলে ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায়, লে. কর্নেল মাহফুজুর রহমান ও মেজর দীদার আল লতিফ দায়িত্ব পালন করেন। প্রসিকিউটরকে সহযোগিতা করেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন কাজল ও এ্যাডভোকেট শেখ বাহারম্নল ইসলাম।
No comments