যুদ্ধাপরাধীর দ্রুত বিচার চাই ॥ মানবপ্রাচীরে লাখো কণ্ঠে আওয়াজ
যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুতবিচার ও বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় কার্যকর দাবিতে হাতে হাত ধরে রাজধানীতে মানবপ্রাচীর তৈরি করল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। বৃহস্পতিবার গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেয়।
কর্মসূচীতে আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে অন্যান্য যুদ্ধপরাধীর বিচার কাজ ত্বরান্বিত করার দাবি জানানো হয়। এছাড়া মানববন্ধন কর্মসূচী থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে নতুন কর্মসুচী ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আগামী ৩০ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে ১৪ দলের উদ্যোগে গণসংযোগ ও জনসভা কর্মসূচী পালন করা হবে। এছাড়া আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণপদযাত্রা কর্মসূচীও পালন করা হবে। এরপর ঘোষণা করা হবে নতুন কর্মসূচী। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ১৪ দলের নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করেন।
১৪ দলের মানববন্ধন কর্মসূচী থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার পাশাপাশি ধারাবাহিক কর্মসূচীর মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জনমত তৈরির কথা বলা হয়। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশেও মানবপ্রাচীরে জনতার ঢল নামে। লাখো মানুষ এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে। তবে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার খুলনায় রাজনৈতিক কর্মসূচী থাকার কারণে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলা এই কর্মসূচীর আওতামুক্ত ছিল।
ঢাকায় বিকেল সাড়ে ৩টায় শুরু হয় এ মানববন্ধন কর্মসূচী। শেষ হয় সাড়ে ৪টায়। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ১৪ দলের নেতারা হাতে হাত ধরাধরি করে এ কর্মসূচীতে অংশ নেন। এছাড়া স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এ কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছে। রাজধানীর শ্যামলী থেকে আসাদ গেট পুরো এলাকায় স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীদের অংশ নিতে দেখা গেছে। বিভিন্ন দলের নারী কর্মীদের উপস্থিতিও ছিল ব্যাপক। তারা যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবি সংবলিত ব্যানার ফেস্টুন বহন করে।
রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশেও একই দাবিতে গড়ে তোলা হয় মানবপ্রাচীর। রাজধানীতে এ কর্মসূচীর রুট নির্ধারণ করা হয় গাবতলী থেকে শ্যামলী, আসাদ গেট, ধানম-ি ২৭ নম্বর, রাসেল স্কয়ার, গ্রীন রোড, পান্থপথ, বসুন্ধরা, সোনারগাঁও হোটেল, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, পল্টন মোড়, নূর হোসেন স্কয়ার, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, গুলিস্তান পার্ক, ইত্তেফাক মোড়, রাজধানী মার্কেট, সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড় পর্যন্ত। এই মানববন্ধন কর্মসূচীতে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি ও মহানগর ১৪ দলের বিপুলসংখ্যক নেকতাকর্মী এতে অংশগ্রহণ করেন। গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ১৩ স্থানে অবস্থান নেন ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
ঢাকা মহানগরীর প্রায় এক শ’ থানা থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে অজস্র মিছিল নির্দিষ্ট স্থানে এসে গড়ে তোলে এই মানবপ্রাচীর। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচী শেষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদীর কুশপুতুল দাহ করা হয়। কর্মসূচীতে বিপুলসংখ্যক একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণ এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি করে। মানববন্ধনে ছিল গগণবিদারী অভিন্ন আওয়াজ ‘দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই।’
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পাশের রাস্তায়। এখানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজিদুল ইসলাম খান, ন্যাপের আব্দুর রশিদ সরকার, গণতন্ত্রী পার্টির নূরুর রহমান সেলিম, শরীফ নুরুল আম্বিয়া, উপ-দফতর সম্পাদক এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসসহ ১৪ দলের সিনিয়র নেতারা।
মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া যোগ্য স্বামীর যোগ্য স্ত্রী। একদিকে জিয়াউর রহমান অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করেছেন। অপরদিকে তার স্ত্রী রাজাকারদের গাড়িতে পতাকা উড়িয়েছেন। এখনও তিনি তাদের সমর্থনে কথা বলছেন। খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন, অথচ তার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। জিয়াউর রহমান যে মুক্তিযোদ্ধা এ ব্যাপারেও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে তিনি বলেন, পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর খুনীরা বলেছিল কেউ তাদের বিচার করতে পারবে না। কিন্তু তাদের বিচার হয়েছে। মানবতাবিরোধীদের বিচারও বাংলার মাটিতেই হবে। আজকের যে মানবপ্রাচীর গড়ে উঠেছে এটা ভেদ করার সাধ্য কারও নেই।
একই স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, জনগণের অধিকার আদায়, শোষণ থেকে মুক্তি পেতে বাংলার মানুষ নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে নয় মাস যুদ্ধ করেছে। এ বিচার কোন দলের নয়, জনগণের রাজনৈতিক এজেন্ডা বলে তিনি মন্তব্য করেন। দিলীপ বড়ুয়া বলেন, দেশী ও আন্তর্জাতিক কোন চাপের কাছে মাথা নত করবে না মহাজোট সরকার। সকল চাপ মোকাবেলা করে বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্টমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বিএনপি প্রতিক্রিয়া জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। তারা বলছে, আলাপ-আলোচনা করে জানাবে। আসলে জনগণের অধিকার নিয়ে কথা না বলার কারণে তারা কথা বলার অধিকার হারিয়ে ফেলেছ।
প্রেসক্লাবের সামন্যে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। এ সময় তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর দেখতে চায় দেশের জনগণ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আজ জাতীয় দাবি। এই বিচারের মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হতে চায়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এই বিচার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে জামায়াত-শিবির পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। খালেদা জিয়াসহ তার দলের নেতাকর্মীরা এদের মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে কোন লাভ হবে না। তাদের বিচার দেশের জনগণ দেখতেও চায়। পর্যায় ক্রমে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা হবে বলে তিনি জানান।
প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শিরিন শারমিন চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক, সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে বাচ্চু রাজাকারকে গ্রেফতার করে তার ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। সংগঠনের পক্ষ থেকে হোটেল রূপসী বাংলা থেকে বাংলা মোটর পর্যন্ত ব্যানার-ফেস্টুন হাতে মানববন্ধন তৈরি করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) হেলাল মোর্শেদ খান, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান উদ্দিন আহমেদ (রাজা), মহাসচিব (প্রশাসন) এমদাদ হোসেন, মহাসচিব কল্যাণ ও পুনর্বাসন মনিরুল হক প্রমুখ। বাংলাদেশ টিএ্যান্ডটি শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষ থেকেও এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেয়। এ সময় সংগঠনের নেতারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে বাকি বিচার দ্রুত শেষ এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পলাতক খুনীদের দেশে এনে বিচার করতে হবে। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এসএমএ মুকিত হিরু।
১৪ দলের মানববন্ধন কর্মসূচী থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার পাশাপাশি ধারাবাহিক কর্মসূচীর মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জনমত তৈরির কথা বলা হয়। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশেও মানবপ্রাচীরে জনতার ঢল নামে। লাখো মানুষ এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে। তবে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার খুলনায় রাজনৈতিক কর্মসূচী থাকার কারণে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলা এই কর্মসূচীর আওতামুক্ত ছিল।
ঢাকায় বিকেল সাড়ে ৩টায় শুরু হয় এ মানববন্ধন কর্মসূচী। শেষ হয় সাড়ে ৪টায়। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ১৪ দলের নেতারা হাতে হাত ধরাধরি করে এ কর্মসূচীতে অংশ নেন। এছাড়া স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এ কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছে। রাজধানীর শ্যামলী থেকে আসাদ গেট পুরো এলাকায় স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীদের অংশ নিতে দেখা গেছে। বিভিন্ন দলের নারী কর্মীদের উপস্থিতিও ছিল ব্যাপক। তারা যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবি সংবলিত ব্যানার ফেস্টুন বহন করে।
রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশেও একই দাবিতে গড়ে তোলা হয় মানবপ্রাচীর। রাজধানীতে এ কর্মসূচীর রুট নির্ধারণ করা হয় গাবতলী থেকে শ্যামলী, আসাদ গেট, ধানম-ি ২৭ নম্বর, রাসেল স্কয়ার, গ্রীন রোড, পান্থপথ, বসুন্ধরা, সোনারগাঁও হোটেল, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, পল্টন মোড়, নূর হোসেন স্কয়ার, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, গুলিস্তান পার্ক, ইত্তেফাক মোড়, রাজধানী মার্কেট, সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড় পর্যন্ত। এই মানববন্ধন কর্মসূচীতে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি ও মহানগর ১৪ দলের বিপুলসংখ্যক নেকতাকর্মী এতে অংশগ্রহণ করেন। গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ১৩ স্থানে অবস্থান নেন ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
ঢাকা মহানগরীর প্রায় এক শ’ থানা থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে অজস্র মিছিল নির্দিষ্ট স্থানে এসে গড়ে তোলে এই মানবপ্রাচীর। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচী শেষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদীর কুশপুতুল দাহ করা হয়। কর্মসূচীতে বিপুলসংখ্যক একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণ এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি করে। মানববন্ধনে ছিল গগণবিদারী অভিন্ন আওয়াজ ‘দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই।’
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পাশের রাস্তায়। এখানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজিদুল ইসলাম খান, ন্যাপের আব্দুর রশিদ সরকার, গণতন্ত্রী পার্টির নূরুর রহমান সেলিম, শরীফ নুরুল আম্বিয়া, উপ-দফতর সম্পাদক এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসসহ ১৪ দলের সিনিয়র নেতারা।
মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া যোগ্য স্বামীর যোগ্য স্ত্রী। একদিকে জিয়াউর রহমান অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করেছেন। অপরদিকে তার স্ত্রী রাজাকারদের গাড়িতে পতাকা উড়িয়েছেন। এখনও তিনি তাদের সমর্থনে কথা বলছেন। খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন, অথচ তার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। জিয়াউর রহমান যে মুক্তিযোদ্ধা এ ব্যাপারেও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে তিনি বলেন, পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর খুনীরা বলেছিল কেউ তাদের বিচার করতে পারবে না। কিন্তু তাদের বিচার হয়েছে। মানবতাবিরোধীদের বিচারও বাংলার মাটিতেই হবে। আজকের যে মানবপ্রাচীর গড়ে উঠেছে এটা ভেদ করার সাধ্য কারও নেই।
একই স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, জনগণের অধিকার আদায়, শোষণ থেকে মুক্তি পেতে বাংলার মানুষ নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে নয় মাস যুদ্ধ করেছে। এ বিচার কোন দলের নয়, জনগণের রাজনৈতিক এজেন্ডা বলে তিনি মন্তব্য করেন। দিলীপ বড়ুয়া বলেন, দেশী ও আন্তর্জাতিক কোন চাপের কাছে মাথা নত করবে না মহাজোট সরকার। সকল চাপ মোকাবেলা করে বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্টমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বিএনপি প্রতিক্রিয়া জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। তারা বলছে, আলাপ-আলোচনা করে জানাবে। আসলে জনগণের অধিকার নিয়ে কথা না বলার কারণে তারা কথা বলার অধিকার হারিয়ে ফেলেছ।
প্রেসক্লাবের সামন্যে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। এ সময় তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর দেখতে চায় দেশের জনগণ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আজ জাতীয় দাবি। এই বিচারের মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হতে চায়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এই বিচার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে জামায়াত-শিবির পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। খালেদা জিয়াসহ তার দলের নেতাকর্মীরা এদের মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে কোন লাভ হবে না। তাদের বিচার দেশের জনগণ দেখতেও চায়। পর্যায় ক্রমে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা হবে বলে তিনি জানান।
প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শিরিন শারমিন চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক, সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে বাচ্চু রাজাকারকে গ্রেফতার করে তার ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। সংগঠনের পক্ষ থেকে হোটেল রূপসী বাংলা থেকে বাংলা মোটর পর্যন্ত ব্যানার-ফেস্টুন হাতে মানববন্ধন তৈরি করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) হেলাল মোর্শেদ খান, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান উদ্দিন আহমেদ (রাজা), মহাসচিব (প্রশাসন) এমদাদ হোসেন, মহাসচিব কল্যাণ ও পুনর্বাসন মনিরুল হক প্রমুখ। বাংলাদেশ টিএ্যান্ডটি শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষ থেকেও এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেয়। এ সময় সংগঠনের নেতারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে বাকি বিচার দ্রুত শেষ এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পলাতক খুনীদের দেশে এনে বিচার করতে হবে। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এসএমএ মুকিত হিরু।
No comments