বলিউড- ধরাশায়ী অক্ষয়-সোনাক্ষি
‘শাহরুখ খানকে বিচক্ষণ বলতেই হয়। ভারতবাসী আজ যা করতে চাইছে, শাহরুখ তা আট মাস আগেই করে দেখিয়েছিলেন—পরিচালক শিরিশ কুন্দরের গালে প্রকাশ্যে চড় বসিয়ে,’ এমন মন্তব্য রাজীব নাথ নামের এক সমালোচকের। এ সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া শিরিশ কুন্দরের জোকার ছবি নিয়ে সমালোচকের এমন মন্তব্য।
অক্ষয় কুমার-সোনাক্ষি সিনহা এই তো কয়েক মাস আগেই বক্স অফিস কাঁপিয়েছিলেন রৌডি রাঠোড় দিয়ে। সঞ্জয় লীলা বানসালি প্রযোজিত, প্রভু দেবা পরিচালিত সেই ছবিটি ১০০ কোটি রুপির ওপরে ব্যবসা করে অক্ষয়-সোনাক্ষি জুটিকে আশার আলো দেখিয়েছিল। কারণ, জোকার, ওহ মাই গড, ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই ২—তিনটি ছবি তাঁদের হাতে ছিল। হাত থেকে জোকার এ সপ্তাহে পিছলে পড়েছে। সোনাক্ষি সিনহা পেয়েছেন তাঁর অভিনয়জীবনের প্রথম ফ্লপ ছবি। সেই সঙ্গে অক্ষয় কুমারের বিগত তিন বছরের কোনো ছবিই এতটা নির্মমভাবে বক্স অফিসে ধরাশায়ী হয়নি। রেকর্ড বইয়ের বিবেচনায় এ বছরের সবচেয়ে বড় ফ্লপ ছবির কাতারে কালিমা লেপন করতে যাচ্ছে জোকার। সমালোচক কমল নাহাতা বলেন, ‘জোকার হলো এ বছরের সবচেয়ে বড় “জোক”। অক্ষয় কুমার কী করে এ ছবিটি অভিনয় ও প্রযোজনা করতে সাহস পেলেন?’ সমালোচক তরণ আদর্শ বলেন, ‘ছবির প্রথম ট্রেলার দেখে আগ্রহী হয়েছিলাম এই ভেবে, অনেক ছবির সংমিশ্রণ আছে অক্ষয়-সোনাক্ষির এই ছবিতে। কোই মিল গ্যায়ার ইউএফও, ভিন গ্রহের প্রাণী, স্বদেশের অনাবাসী ভারতীয়র মাটির টানে দেশে ফিরে আসা, লগান ছবির গ্রামের মানুষকে একতাবদ্ধ হয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করা, গোলমাল সিরিজের তুষার কাপুরের মতো বোবা-কমেডি চরিত্রের অন্তর্ভুক্তি, সেই সঙ্গে স্পিলবার্গের ইটি’র প্রভাব—সব মিলিয়ে আকর্ষণীয় প্যাকেজ মনে হয়েছিল জোকার। কিন্তু চকচক করলেই সোনা হয় না।’ তরণ আদর্শই লিখেছেন, ‘ছবির ব্যাপ্তি মাত্র এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। কিন্তু এক ঘণ্টা পেরোতেই সিটে বসে থাকা দায় হয়ে পড়েছিল। রীতিমতো মানসিক অত্যাচার!’
কী এমন দেখিয়েছেন পরিচালক, যার কারণে এত সমালোচনা? ছবির কাহিনি এক লাইনে সাজালে অনেকটা এ রকম—সরকারের রেকর্ড বইয়ে অক্ষয়দের গ্রামের অস্তিত্ব নেই বলে বিদেশফেরত অক্ষয় গ্রামবাসীকে একত্র করে সরকারের মনোযোগ পাওয়ার জন্য অন্য গ্রহের প্রাণী সেজে অভিনয় করেন! সমালোচক শোভা দে বলেন, ‘এই এক লাইনের গল্প নিয়ে এক মিনিটের ছবি হলেও স্বস্তি পেতাম। কিন্তু এক লাইনের গল্পকে টেনেহিঁচড়ে রীতিমতো দর্শকদের বিনোদন অধিকারের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলেছেন পরিচালক। কোই মিল গ্যায়ার অ্যালিয়েন জাদু যতটাই মায়াময়, জোকার-এর অ্যালিয়েন ঠিক ততটাই ভয়ংকর। বাচ্চাদের মজা দেওয়ার জন্য নির্মাতারা নাকি জোকার বানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা হয়তো জানেন না, জোকার দেখে এখন বাচ্চারা ভয় পাচ্ছে!’
পরিচালক শিরিশকে উদ্দেশ করে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে মহাক নামের এক দর্শক লিখেছেন, ‘দয়া করে কেউ নেট থেকে জোকার ডাউনলোড করে আমাদের মহামূল্যবান ব্যান্ডউইডথের অপমান করবেন না।’ পরিচালক রোহিত শেঠি বলেন, ‘অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে রাজ কাপুর আবারও আমাদের মাঝে জীবিত হয়ে ফিরে আসবেন। এক. শিরিশ কুন্দরকে চড় দেওয়ার জন্য, দুই. তাঁর ঐতিহাসিক মেরা নাম জোকার ছবি থেকে “জোকার” শব্দটি মুছে ফেলার জন্য।’ ফ্যাশন ডিজাইনার রোহিত বাল বলেন, ‘যদি কোনো মিসড কল কিংবা ব্ল্যাঙ্ক কল আসে আপনার মুঠোফোনে, ভুলেও রিসিভ করবেন না। ফোনের অপর প্রান্তে শিরিশ জোকার কুন্দর থাকতে পারেন!’ এ রকম আরও শত শত টুইটস, ফেসবুকে ভরে গেছে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট।
প্রথম ছবি জানেমান নির্মাণ করেও পরিচালক শিরিশ এতটা নিন্দা কুড়াননি। ছবিটি বক্স অফিসে পাত্তা না পেলেও অনেকে প্রশংসা করেছিল। তবে এবার অক্ষয়-সোনাক্ষিকে রীতিমতো ধরাশায়ী করল শিরিশের নতুন এই ছবি। এই ছবির ব্যর্থতার কারণেই সালমান খান তাঁর আগামী ছবি কিক থেকে পরিচালক শিরিশকে বাদ দেওয়ার জন্য প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। সাজিদও খান সাহেবের কথা ফেলতে পারেননি। শিরিশকে ‘কিক’ মেরে তিনি নিজেই প্রথমবারের মতো পরিচালকের আসনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এত ছবি থাকতে জোকার-এর ওপর কেন ভরসা করেছিলেন অক্ষয়? এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। পরিচালক ডেভিড ধাওয়ান বলেন, ‘জোকার দেখার পর শিরিশদের আগের ছবি তিস মার খানকে মনে হচ্ছে টাইটানিক। অথচ তিস মার খান দেখে সে সময় বিরক্ত হয়েছিলাম। তাহলে বুঝুন, জোকার-এর মান কতখানি নিচে।’ পর পর দুটি ১০০ কোটির ওপরে ব্লকবাস্টার হিট উপহার দেওয়া অক্ষয়-সোনাক্ষি অবস্থা দেখে দর্শকদের কাছে মাফ চেয়েছেন। সোনাক্ষি বলেন, ‘আর কখনো অন্ধভাবে কোনো প্রজেক্টের ওপর ভরসা করব না। সত্যি কথা বলতে, ছবির প্রযোজক, নায়ক, কাহিনি সংক্ষেপ জেনেই ছবিটি করতে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু বুঝতে পারিনি, বাজে নির্মাণ একটি ভালো প্রচেষ্টাকেও ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম।’ অক্ষয় তাঁর ব্যর্থতা নিয়ে বলতে নারাজ। শুধু এটুকু বলেছেন, ‘দিনের পর রাত আসে, রাতের পর দিন। আমিও আবার আঁধার কাটিয়ে আলোর দেখা পাব। আর সেই দিনটি খুব দূরে নয়। ওহ মাই গড, খিলাড়ি ৭৮৬, ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই ২, হাউজফুল ৩ সফল হবেই হবে!’
রুম্মান রশীদ খান
বিজনেস টুডে, হিন্দুস্তান টাইমস, রেডিফ, মিড ডে, বলিউড হাঙ্গামা, বক্স অফিস ইন্ডিয়া, বিজন্যাস অব সিনেমা ডট কম অবলম্বনে
কী এমন দেখিয়েছেন পরিচালক, যার কারণে এত সমালোচনা? ছবির কাহিনি এক লাইনে সাজালে অনেকটা এ রকম—সরকারের রেকর্ড বইয়ে অক্ষয়দের গ্রামের অস্তিত্ব নেই বলে বিদেশফেরত অক্ষয় গ্রামবাসীকে একত্র করে সরকারের মনোযোগ পাওয়ার জন্য অন্য গ্রহের প্রাণী সেজে অভিনয় করেন! সমালোচক শোভা দে বলেন, ‘এই এক লাইনের গল্প নিয়ে এক মিনিটের ছবি হলেও স্বস্তি পেতাম। কিন্তু এক লাইনের গল্পকে টেনেহিঁচড়ে রীতিমতো দর্শকদের বিনোদন অধিকারের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলেছেন পরিচালক। কোই মিল গ্যায়ার অ্যালিয়েন জাদু যতটাই মায়াময়, জোকার-এর অ্যালিয়েন ঠিক ততটাই ভয়ংকর। বাচ্চাদের মজা দেওয়ার জন্য নির্মাতারা নাকি জোকার বানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা হয়তো জানেন না, জোকার দেখে এখন বাচ্চারা ভয় পাচ্ছে!’
পরিচালক শিরিশকে উদ্দেশ করে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে মহাক নামের এক দর্শক লিখেছেন, ‘দয়া করে কেউ নেট থেকে জোকার ডাউনলোড করে আমাদের মহামূল্যবান ব্যান্ডউইডথের অপমান করবেন না।’ পরিচালক রোহিত শেঠি বলেন, ‘অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে রাজ কাপুর আবারও আমাদের মাঝে জীবিত হয়ে ফিরে আসবেন। এক. শিরিশ কুন্দরকে চড় দেওয়ার জন্য, দুই. তাঁর ঐতিহাসিক মেরা নাম জোকার ছবি থেকে “জোকার” শব্দটি মুছে ফেলার জন্য।’ ফ্যাশন ডিজাইনার রোহিত বাল বলেন, ‘যদি কোনো মিসড কল কিংবা ব্ল্যাঙ্ক কল আসে আপনার মুঠোফোনে, ভুলেও রিসিভ করবেন না। ফোনের অপর প্রান্তে শিরিশ জোকার কুন্দর থাকতে পারেন!’ এ রকম আরও শত শত টুইটস, ফেসবুকে ভরে গেছে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট।
প্রথম ছবি জানেমান নির্মাণ করেও পরিচালক শিরিশ এতটা নিন্দা কুড়াননি। ছবিটি বক্স অফিসে পাত্তা না পেলেও অনেকে প্রশংসা করেছিল। তবে এবার অক্ষয়-সোনাক্ষিকে রীতিমতো ধরাশায়ী করল শিরিশের নতুন এই ছবি। এই ছবির ব্যর্থতার কারণেই সালমান খান তাঁর আগামী ছবি কিক থেকে পরিচালক শিরিশকে বাদ দেওয়ার জন্য প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। সাজিদও খান সাহেবের কথা ফেলতে পারেননি। শিরিশকে ‘কিক’ মেরে তিনি নিজেই প্রথমবারের মতো পরিচালকের আসনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এত ছবি থাকতে জোকার-এর ওপর কেন ভরসা করেছিলেন অক্ষয়? এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। পরিচালক ডেভিড ধাওয়ান বলেন, ‘জোকার দেখার পর শিরিশদের আগের ছবি তিস মার খানকে মনে হচ্ছে টাইটানিক। অথচ তিস মার খান দেখে সে সময় বিরক্ত হয়েছিলাম। তাহলে বুঝুন, জোকার-এর মান কতখানি নিচে।’ পর পর দুটি ১০০ কোটির ওপরে ব্লকবাস্টার হিট উপহার দেওয়া অক্ষয়-সোনাক্ষি অবস্থা দেখে দর্শকদের কাছে মাফ চেয়েছেন। সোনাক্ষি বলেন, ‘আর কখনো অন্ধভাবে কোনো প্রজেক্টের ওপর ভরসা করব না। সত্যি কথা বলতে, ছবির প্রযোজক, নায়ক, কাহিনি সংক্ষেপ জেনেই ছবিটি করতে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু বুঝতে পারিনি, বাজে নির্মাণ একটি ভালো প্রচেষ্টাকেও ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম।’ অক্ষয় তাঁর ব্যর্থতা নিয়ে বলতে নারাজ। শুধু এটুকু বলেছেন, ‘দিনের পর রাত আসে, রাতের পর দিন। আমিও আবার আঁধার কাটিয়ে আলোর দেখা পাব। আর সেই দিনটি খুব দূরে নয়। ওহ মাই গড, খিলাড়ি ৭৮৬, ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই ২, হাউজফুল ৩ সফল হবেই হবে!’
রুম্মান রশীদ খান
বিজনেস টুডে, হিন্দুস্তান টাইমস, রেডিফ, মিড ডে, বলিউড হাঙ্গামা, বক্স অফিস ইন্ডিয়া, বিজন্যাস অব সিনেমা ডট কম অবলম্বনে
No comments