লিমনের ওপর হামলার ঘটনা তদন্ত করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ঈদের দিন বিকেলে হামলার শিকার হওয়ার পর পরিবার ও নিজের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় আবেদন করেছে র্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন হোসেন। এদিকে লিমনের ওপর এই হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব সি কিউ কে মুশতাক আহমেদ।
তিনি গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিমনের ওপর হামলার বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় চিন্তিত। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে, এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক তদন্ত করা হবে। এই হামলার পেছনে কারা আছে, তা খুঁজে বের করা হবে।’
লিমনের ওপর হামলার ঘটনায় রাজাপুর থানায় ওইদিনই পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় গত তিন দিনেও পুলিশ আনুষ্ঠানিক কোনো তদন্ত শুরু করেনি। রাজাপুর থানার পুলিশ জানায়, তারা এ বিষয়ে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন করবে। আদালত থেকে আদেশ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করবে।
পুলিশ সূত্র জানায়, লিমন পরিবার ও নিজের নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল দুপুরে রাজাপুর থানায় আবেদন করে। তাতে সে লিখেছে, ‘র্যাবের নিষ্ঠুর নির্যাতনের কারণে আমার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। র্যাবের সোর্স পরিচয়দানকারী মো. ইব্রাহীম হাওলাদার, নান্নু হাওলাদার, মানিক জমাদ্দার, মুনসুর জমাদ্দার ও বাদশা হাওলাদারসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তির ভয়ে পা কেটে ফেলার পর থেকেই আমি গ্রামের বাড়িতে থাকি না।’
সর্বশেষ ঈদে গ্রামের বাড়িতে আসে লিমন। ঈদের দিন ২০ আগস্ট বিকেলে গ্রামের বাড়ি থেকে পিরোজপুরের ভাড়া বাড়িতে ফেরার সময় ইব্রাহিমের নেতৃত্বে কয়েকজনের হামলার বিষয়টিও আবেদনে উল্লেখ করে লিমন। ওই হামলায় লিমনের মা হেনোয়ারা বেগমও আহত হন। তিনি এখনো রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিত্সাধীন।
জানতে চাইলে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিমনের আবেদন পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’
হামলা: প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রগুলো জানায়, ঈদের দিন বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে ঈদ উদ্যাপন শেষে পিরোজপুরের কাউখালীতে ফিরে যাচ্ছিল লিমন। এ সময় তাকে এগিয়ে দিচ্ছিলেন তার মাসহ আরও কয়েকজন নিকটাত্মীয়। পথে রাজাপুরের ইঁদুরবাড়ি সেতুর কাছে লিমন ও তার মা হেনোয়ারা বেগমের ওপর হামলা করেন র্যাবের সোর্স হিসেবে পরিচিত ইব্রাহীম হাওলাদার। লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা অস্ত্র মামলার অন্যতম সাক্ষী এই ইব্রাহীম।
হাসপাতালে চিকিত্সাধীন লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, ‘লিমনকে কাউখালী পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে তার সঙ্গে আমার চার বোন ছবি তুলছিল। এ সময় ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল র্যাবের সোর্স ইব্রাহীম। এ সময় ইব্রাহীম তাদের উদ্দেশে আজেবাজে মন্তব্য করে। লিমন এর প্রতিবাদ জানালে তাকে চড়-থাপড় মারে ইব্রাহীম। তখন লিমন রাস্তায় পড়ে গেলে আমি তাকে রক্ষা করতে যাই। ইব্রাহীম আমাকেও কিল-ঘুষি মেরে আহত করে।’ হেনোয়ারা বলেন, তাঁদের মারধর করার পর ইব্রাহীম নিজেই নিজের জামা-কাপড় ছিঁড়ে নখ দিয়ে নিজের বুকে আঁচড় দিয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অবশ্য একই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ইব্রাহীম হাওলাদার দাবি করেন, রাস্তা থেকে সরে ছবি তোলার অনুরোধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে লিমন, তার ভাই সুমন ও মা-খালারা মিলে তাঁর ওপর হামলা করেছেন।
এদিকে ইব্রাহীম ও লিমনের পরিবারের মধ্যে মারামারি হচ্ছে—এ খবর শুনে ওইদিন বিকেল পাঁচটা ৪৫ মিনিটের সময় সাতুরিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যান ইব্রাহীমের শ্যালক ফোরকান হাওলাদার (৩৬)। পথে সাতুরিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার সামনে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাদ্রাসার সামনে থেকে স্থানীয় হেলাল ও আরিফসহ কয়েকজন ব্যক্তি ফোরকানকে কাছাকাছি তাঁদের আত্মীয় নূর হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে সেবা-শুশ্রূষার একপর্যায়ে ফোরকান মারা যান। ফোরকানের মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের দাবি জানিয়ে তাঁর বোন লিলি বেগম (ইব্রাহীমের স্ত্রী) গত মঙ্গলবার রাজাপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। রাজাপুর থানার পুলিশ অভিযোগটি অপমৃত্যু মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করে ওইদিন ফোরকানের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
রাজাপুর থানার ওসি তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, লিমন ও তার মায়ের ওপর হামলার ঘটনায় দুই পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে দুটি জিডি করেছে। জিডি দুটি একজন উপপরিদর্শককে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ দুটি অধর্তব্য অপরাধের হওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে তদন্ত শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, ফোরকানের লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু বলা আইনসিদ্ধ হবে না।
আসকের উদ্বেগ: এদিকে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গতকাল এক বিবৃতিতে লিমন ও তার মায়ের ওপর র্যাবের এক সোর্সের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলা নিছক কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এ ধরনের ঘটনা সত্য প্রতিষ্ঠায় লিমনের লড়াই করার মানসিকতাকে আরও দুর্বল করবে। লিমনের নিরাপত্তা জোরদার, র্যাবের বিরুদ্ধে তার মায়ের করা মামলার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে আসক।
লিমনের ওপর হামলার ঘটনায় রাজাপুর থানায় ওইদিনই পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় গত তিন দিনেও পুলিশ আনুষ্ঠানিক কোনো তদন্ত শুরু করেনি। রাজাপুর থানার পুলিশ জানায়, তারা এ বিষয়ে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন করবে। আদালত থেকে আদেশ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করবে।
পুলিশ সূত্র জানায়, লিমন পরিবার ও নিজের নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল দুপুরে রাজাপুর থানায় আবেদন করে। তাতে সে লিখেছে, ‘র্যাবের নিষ্ঠুর নির্যাতনের কারণে আমার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। র্যাবের সোর্স পরিচয়দানকারী মো. ইব্রাহীম হাওলাদার, নান্নু হাওলাদার, মানিক জমাদ্দার, মুনসুর জমাদ্দার ও বাদশা হাওলাদারসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তির ভয়ে পা কেটে ফেলার পর থেকেই আমি গ্রামের বাড়িতে থাকি না।’
সর্বশেষ ঈদে গ্রামের বাড়িতে আসে লিমন। ঈদের দিন ২০ আগস্ট বিকেলে গ্রামের বাড়ি থেকে পিরোজপুরের ভাড়া বাড়িতে ফেরার সময় ইব্রাহিমের নেতৃত্বে কয়েকজনের হামলার বিষয়টিও আবেদনে উল্লেখ করে লিমন। ওই হামলায় লিমনের মা হেনোয়ারা বেগমও আহত হন। তিনি এখনো রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিত্সাধীন।
জানতে চাইলে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিমনের আবেদন পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’
হামলা: প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রগুলো জানায়, ঈদের দিন বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে ঈদ উদ্যাপন শেষে পিরোজপুরের কাউখালীতে ফিরে যাচ্ছিল লিমন। এ সময় তাকে এগিয়ে দিচ্ছিলেন তার মাসহ আরও কয়েকজন নিকটাত্মীয়। পথে রাজাপুরের ইঁদুরবাড়ি সেতুর কাছে লিমন ও তার মা হেনোয়ারা বেগমের ওপর হামলা করেন র্যাবের সোর্স হিসেবে পরিচিত ইব্রাহীম হাওলাদার। লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা অস্ত্র মামলার অন্যতম সাক্ষী এই ইব্রাহীম।
হাসপাতালে চিকিত্সাধীন লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, ‘লিমনকে কাউখালী পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে তার সঙ্গে আমার চার বোন ছবি তুলছিল। এ সময় ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল র্যাবের সোর্স ইব্রাহীম। এ সময় ইব্রাহীম তাদের উদ্দেশে আজেবাজে মন্তব্য করে। লিমন এর প্রতিবাদ জানালে তাকে চড়-থাপড় মারে ইব্রাহীম। তখন লিমন রাস্তায় পড়ে গেলে আমি তাকে রক্ষা করতে যাই। ইব্রাহীম আমাকেও কিল-ঘুষি মেরে আহত করে।’ হেনোয়ারা বলেন, তাঁদের মারধর করার পর ইব্রাহীম নিজেই নিজের জামা-কাপড় ছিঁড়ে নখ দিয়ে নিজের বুকে আঁচড় দিয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অবশ্য একই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ইব্রাহীম হাওলাদার দাবি করেন, রাস্তা থেকে সরে ছবি তোলার অনুরোধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে লিমন, তার ভাই সুমন ও মা-খালারা মিলে তাঁর ওপর হামলা করেছেন।
এদিকে ইব্রাহীম ও লিমনের পরিবারের মধ্যে মারামারি হচ্ছে—এ খবর শুনে ওইদিন বিকেল পাঁচটা ৪৫ মিনিটের সময় সাতুরিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যান ইব্রাহীমের শ্যালক ফোরকান হাওলাদার (৩৬)। পথে সাতুরিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার সামনে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাদ্রাসার সামনে থেকে স্থানীয় হেলাল ও আরিফসহ কয়েকজন ব্যক্তি ফোরকানকে কাছাকাছি তাঁদের আত্মীয় নূর হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে সেবা-শুশ্রূষার একপর্যায়ে ফোরকান মারা যান। ফোরকানের মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের দাবি জানিয়ে তাঁর বোন লিলি বেগম (ইব্রাহীমের স্ত্রী) গত মঙ্গলবার রাজাপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। রাজাপুর থানার পুলিশ অভিযোগটি অপমৃত্যু মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করে ওইদিন ফোরকানের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
রাজাপুর থানার ওসি তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, লিমন ও তার মায়ের ওপর হামলার ঘটনায় দুই পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে দুটি জিডি করেছে। জিডি দুটি একজন উপপরিদর্শককে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ দুটি অধর্তব্য অপরাধের হওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে তদন্ত শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, ফোরকানের লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু বলা আইনসিদ্ধ হবে না।
আসকের উদ্বেগ: এদিকে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গতকাল এক বিবৃতিতে লিমন ও তার মায়ের ওপর র্যাবের এক সোর্সের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলা নিছক কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এ ধরনের ঘটনা সত্য প্রতিষ্ঠায় লিমনের লড়াই করার মানসিকতাকে আরও দুর্বল করবে। লিমনের নিরাপত্তা জোরদার, র্যাবের বিরুদ্ধে তার মায়ের করা মামলার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে আসক।
No comments