ফরিদপুরে দখল হয়ে যাচ্ছে সোহরাওয়ার্দী সরোবর

দখল হয়ে যাচ্ছে ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা এলাকার সোহরাওয়ার্দী সরোবর। জেলা পরিষদ এ সরোবর ঘিরে দৃষ্টিনন্দন পার্ক নির্মাণের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। জেলা পরিষদের এ প্রকল্পের ফাইল মন্ত্রণালয়ে আটকে থাকলেও সরোবর দখল করে দোকান নির্মাণের কাজ অব্যাহত রয়েছে।


জেলা পরিষদ এ সরোবরের পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশের জায়গা শতাধিক ব্যক্তির কাছে ইজারা দিয়েছে। এসব ইজারাদারের কেউ কেউ পাকা ইমারতও নির্মাণ করে ফেলেছেন। ইজারা ছাড়াও অবৈধভাবে সরোবর দখলের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ১৯৭৬ সালে জেলা পরিষদ এ সরোবরটি সংস্কার করে রক্ষণাবেক্ষণ শুরু করে। ওই সময় থেকেই জেলা পরিষদ টেপাখোলা লঞ্চঘাট বাজারসংলগ্ন সরোবরের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে কিছু ব্যক্তিকে ইজারা দেয়।
জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরোবর ও সরোবরসংলগ্ন জেলা পরিষদের ২৫ একর জায়গাজুড়ে ‘এমিউজমেন্ট ওয়াটার কিংডম কাম শিশু পার্ক’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ১০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য তিন মাস আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, গত ১০ আগস্ট থেকে সরোবরের পশ্চিম পাশে মুজিব সড়কের কিনার ঘেঁষে আরও তিনটি দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের এ তিনটি দোকান নির্মাণে জেলা পরিষদের কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থক ও কর্মীরা এই সরোবর দখলের চেষ্টা করছেন।
১৭ আগস্ট সরেজমিনে দেখা গেছে, সরোবরের পাড় ও সরোবরের ভেতরে এ দোকান তিনটির আরসিসি খুঁটি পোঁতা হয়েছে। একটি দোকানের চারপাশে বেড়া দেওয়ার জন্য কাঠের কাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। এ কাজে নিয়োজিত শ্রমিক স্বপন বলেন, ‘তারেক ভাই আমাদের কাজে লাগিয়েছেন। এ দোকান তিনটির একটি তারেকের এবং অপর দুটি সলেমান মিয়া ও নজরুলের।’
তারেক বলেন, ‘আমরা ইজারা চেয়ে আবেদন করেছি। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে আমরা এ দোকান তিনটি নির্মাণ করছি। ঈদের পর চূড়ান্ত ইজারা দেওয়া হবে।’
তবে এ বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নতুন ইজারা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা সরোবর ও সরোবরসংলগ্ন জায়গায় একটি দৃষ্টিনন্দন পার্ক নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দিয়েছি। এ প্রস্তাব পাঠানোর কথা ইজারাদারদের জানানো হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে সরোবরের আশপাশের সবার ইজারা বাতিল করে কাজ শুরু করা হবে।’

No comments

Powered by Blogger.