বগুড়া-জয়পুরহাট সড়ক- ‘গেটলক সার্ভিস’-এর নামে প্রতারণা

বগুড়া-জয়পুরহাট সড়কে ‘গেটলক সার্ভিস’-এর নামে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা। সাধারণ বাসের চেয়ে দ্রুততম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো, সময় নিয়ন্ত্রণ, নির্দিষ্ট আসনের বেশি যাত্রী না ওঠানো এবং যেখানে-সেখানে যাত্রাবিরতির ভোগান্তি এড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলেও ন্যূনতম যাত্রীসেবা মিলছে না কথিত এসব গেটলক সার্ভিসে।


বগুড়া জেলা মোটর মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-জয়পুরহাট ৫৬ কিলোমিটার সড়কে ৫২টি বাস চলাচল করে। এর মধ্যে গেটলক সার্ভিসের বাস রয়েছে ১৫টি। গেটলক সার্ভিসের দুটি বাস সকালে বগুড়া থেকে ছাড়ে, বাকি ১৩টি সকাল সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টা এবং দুটি চলে আধ ঘণ্টা পর পর। সাধারণ বাসের ভাড়া ৫০-৬০ টাকা হলেও গেটলক বাসের ভাড়া আদায় করা হয় জনপ্রতি ৭৫ টাকা করে। বাস মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাধারণ বাসে গন্তব্যে পৌঁছানোর নির্ধারিত সময় দেড় ঘণ্টা নির্ধারিত থাকলেও গেটলক সার্ভিসে এক ঘণ্টা ১০ মিনিটের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানোর কথা। আবার ৫৬ কিলোমিটার যাত্রাপথে গেটলক সার্ভিসে শুধু বগুড়ার মোকামতলা ও জয়পুরহাটের কালাইয়ে যাত্রাবিরতি দেওয়ার কথা। নির্দিষ্ট আসনের অতিরিক্ত যাত্রীও গেটলক সার্ভিসে ওঠানোর কথা নয়। কিন্তু গেটলক সার্ভিসের নিয়মিত যাত্রীরা অভিযোগ করেন, এই যাত্রাপথে চলাচলকারী গেটলক বাসে মালিকদের দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতিই মানা হয় না। এসব বাসে নির্ধারিত আসনের দুই থেকে তিন গুণ অতিরিক্ত যাত্রী গাদাগাদি করে ওঠানো হয়। যাত্রাপথে দুটি স্থানের বদলে কমপক্ষে নয়টি স্থানে বিরতি দিয়ে যাত্রী তোলা হয়।
গেটলক সার্ভিসে নিয়মিত যাতায়াতকারী বেসরকারি সংস্থা রেহনুমা শবনম বলেন, ‘গেটলক সার্ভিসের নামে আসলে বাসমালিকেরা যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। বেশি ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি তাঁরা আলাদা সেবার কথা বলে যাত্রীদের ধোঁকা দিচ্ছেন।’ চাকরিজীবী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এক ঘণ্টা ১০ মিনিটের কথা বলা হলেও গন্তব্যে পৌঁছাতে দেড় থেকে পৌনে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়। সাধারণ বাসের মতো গেটলকেও যেখানে-সেখানে থেমে যাত্রী তোলা হয়।’
মালিকদের অতিরিক্ত প্রত্যাশার কারণেই বেশি যাত্রী ওঠাতে হয়। বেশি যাত্রী তুলতে গিয়ে যেখানে-সেখানে বাস থামাতে হয়।’
বগুড়া জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাগর কুমার রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ বাসের চেয়ে দ্রুততম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর মতো আলাদা যাত্রীসেবার জন্যই গেটলক সার্ভিস চালু করা হয়েছিল। কালাই ও মোকামতলা ছাড়া অন্য কোথাও যাত্রাবিরতি দেওয়ার কথা নয়। গেটলক সার্ভিসের ভাড়া নিয়ে কোনো যাত্রী হয়রানির শিকার হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

No comments

Powered by Blogger.