রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড-একটি কলঙ্ক থেকে মুক্ত হলো জাতি
'মুক্তির মন্দির সোপান তলে/কত প্রাণ হলো বলিদান/লেখা আছে অশ্রুজলে।' বাঙালির স্বপ্নের স্বাধীনতা সূর্য ছিনিয়ে আনতে গিয়ে কতজন অকাতরে জীবন দিয়েছেন, তার ইতিবৃত্ত লেখা আছে ইতিহাসে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে দেশের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান যেমন চিরস্মরণীয়, তেমনি এই
দেশের ঘৃণিত কিছু মানুষের নাম কোনো দিন মুছে ফেলা যাবে না মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে। একাত্তরে যখন জীবন নিয়ে বাঙালিরা যুদ্ধের ময়দানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মোকাবিলা করছে, তখনই এ দেশের কিছু ঘৃণিত মানুষ হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। এই নরপশুদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় একাত্তরে নারী ধর্ষণের ঘটনা যেমন ঘটেছে, তেমনি সংঘটিত হয়েছে যুদ্ধাপরাধ। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন যেমন আমাদের অহংকার, তেমনি কিছুসংখ্যক রাজাকার-আলবদর-আলশামস আমাদের লজ্জা। দীর্ঘদিন এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে না পারার বেদনা আমাদের সইতে হয়েছে।
একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর এ দেশের রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর নৃশংসতার বিষয়টি এ দেশের মানুষ সম্যক জ্ঞাত। মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা, নারী নির্যাতন, বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগের মতো মানবতাবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সদস্যরা জড়িত। পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর হিসেবে যেমন এরা কাজ করেছে, তেমনি প্রত্যক্ষভাবেও এরা মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়েছিল। কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর সাজাও হয়েছিল। কিন্তু পঁচাত্তরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিচার প্রক্রিয়া থেমে যায়। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে একাত্তরের অনেক যুদ্ধাপরাধীকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা পেতেও দেখা গেছে। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরের পর যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তাদেরই দেখা যায় পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর ভোল পাল্টে সমাজে মিশে যেতে। এরপর দীর্ঘদিন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাদের ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করলে দেশের মানুষ নতুন করে আবার এ ব্যাপারে সোচ্চার হয়। শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতেই একটি বিশেষ মহল থেকে এই প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধের বিচারের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়েও চেষ্টা করা হয়েছে; আর দেশের মধ্যে নাশকতার চেষ্টা করা হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টাও হয়েছে। কিন্তু তাতে বিচার প্রক্রিয়া থেমে থাকেনি। একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে গেছে। ফরিদপুরের আবুল কালাম আযাদ- বাচ্চু রাজাকার নামেই যার পরিচিতি, তার বিচারের রায় পাওয়া গেছে। এ রায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাচ্চু রাজাকার এখন পলাতক। তার অনুপস্থিতিতেই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
একাত্তরের বীর শহীদদের আত্মার শান্তি ও সেই বীরসেনানিদের স্বজনদের বুকভরা বেদনা আজ কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নতুন মাইলফলক রচনা করল। এ রায়ের মধ্য দিয়ে আরো একটি কলঙ্ক থেকে মুক্ত হলো জাতি। যুদ্ধাপরাধের আরো অনেক মামলা বিচারাধীন। আমরা আশা করব, সব মামলারই রায় হবে। শুধু রায় নয়, অবিলম্বে রায় কার্যকর করারও দাবি জানাই আমরা। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য শুধু ব্যক্তি নয়, কিছু রাজনৈতিক সংগঠনও দায়ী। এসব সংগঠনকেও বিচারের অধীনে আনা উচিত। সংশ্লিষ্ট সবাই বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে আমাদের আশা।
একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর এ দেশের রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর নৃশংসতার বিষয়টি এ দেশের মানুষ সম্যক জ্ঞাত। মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা, নারী নির্যাতন, বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগের মতো মানবতাবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সদস্যরা জড়িত। পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর হিসেবে যেমন এরা কাজ করেছে, তেমনি প্রত্যক্ষভাবেও এরা মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়েছিল। কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর সাজাও হয়েছিল। কিন্তু পঁচাত্তরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিচার প্রক্রিয়া থেমে যায়। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে একাত্তরের অনেক যুদ্ধাপরাধীকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা পেতেও দেখা গেছে। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরের পর যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তাদেরই দেখা যায় পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর ভোল পাল্টে সমাজে মিশে যেতে। এরপর দীর্ঘদিন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাদের ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করলে দেশের মানুষ নতুন করে আবার এ ব্যাপারে সোচ্চার হয়। শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতেই একটি বিশেষ মহল থেকে এই প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধের বিচারের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়েও চেষ্টা করা হয়েছে; আর দেশের মধ্যে নাশকতার চেষ্টা করা হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টাও হয়েছে। কিন্তু তাতে বিচার প্রক্রিয়া থেমে থাকেনি। একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে গেছে। ফরিদপুরের আবুল কালাম আযাদ- বাচ্চু রাজাকার নামেই যার পরিচিতি, তার বিচারের রায় পাওয়া গেছে। এ রায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাচ্চু রাজাকার এখন পলাতক। তার অনুপস্থিতিতেই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
একাত্তরের বীর শহীদদের আত্মার শান্তি ও সেই বীরসেনানিদের স্বজনদের বুকভরা বেদনা আজ কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নতুন মাইলফলক রচনা করল। এ রায়ের মধ্য দিয়ে আরো একটি কলঙ্ক থেকে মুক্ত হলো জাতি। যুদ্ধাপরাধের আরো অনেক মামলা বিচারাধীন। আমরা আশা করব, সব মামলারই রায় হবে। শুধু রায় নয়, অবিলম্বে রায় কার্যকর করারও দাবি জানাই আমরা। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য শুধু ব্যক্তি নয়, কিছু রাজনৈতিক সংগঠনও দায়ী। এসব সংগঠনকেও বিচারের অধীনে আনা উচিত। সংশ্লিষ্ট সবাই বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে আমাদের আশা।
No comments