আদালতে স্বীকারোক্তি দেননি রেজ্জাকুল, জেলে প্রেরণ- ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা
চাঞ্চল্যকর ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) রেজ্জাকুল হায়দারকে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানে রাজি করানো যায়নি।
অথচ বিগত জোট সরকারের প্রভাবশালী নীতিনির্ধারক ও হাওয়া ভবনের অত্যনত্ম ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত এ আসামির কাছে অনেক গুরম্নত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে বলে মনে করছে সিআইডি। ঢাকায় নিয়ে তৃতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের নির্দেশে তাঁকে প্রেরণ করা হয় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে।সিআইডি সূত্রে জানা যায়, অস্ত্র মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হলে গত বুধবার রাতে তাকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আনা হয়। সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে রেজ্জাকুল হায়দারকে মুখোমুখি করা হয় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের। এসময় তাঁরা ঘটনার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেছেন। রেজ্জাকুল হায়দার ঘুরে-ফিরে বলেছেন, ঐ সময় তিনি এনএসআইতে ছিলেন না। ছিলেন ডিজিএফআই'র পরিচালক। একজন সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁকে চলতে হয়েছে। তিনি অনেক কথা বললেও তা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি হিসেবে তুলে ধরতে রাজি নন। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে তাঁকে চট্টগ্রাম আদালতে নেয়া হয়। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানে সম্মত না হওয়ায় শেষ পর্যনত্ম সোর্পদ করা হয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুল হকের আদালতে। পরে আদালতের নির্দেশে এ আসামিকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
মামলার তদনত্মের সঙ্গে সংশিস্নষ্ট সিআইডি'র এক কর্মকর্তা জানান, কেউ স্বেচ্ছায় জবানবন্দী প্রদান না করলে জোরাজুরি চলে না। আসামির কাছে কোন গুরম্নত্বপূর্ণ তথ্য থাকলে তিনি নিজেই আদালতে তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরবেন। তবে এ কথাও সত্য যে, কোন আসামি নিজের অপরাধ স্বীকার করতে চান না। কিন্তু সে স্বীকার না করলেই তিনি নির্দোষ হবেন, তা নয়। কারণ অন্য আসামিদের বক্তব্য ও সা্য প্রমাণের ওপরও নির্ভর করবে সংশিস্নষ্ট আসামি অপরাধী কিনা। পুনরায় দীর্ঘ সময় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেজ্জাকুল হায়দারকে আবারও রিমান্ডে নেয়া হতে পারে বলে সিআইডি সূত্রে জানা যায়।
উলেস্নখ্য, ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় আসামি হিসেবে গ্রেফতার রয়েছেন এনএসআই'র ৫ কর্মকর্তা। তাঁরা হলেন-এনএসআই'র সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আবদুর রহিম, মেজর জেনারেল (অব) রেজ্জাকুল হায়দার, পরিচালক উইং কমান্ডার (অব) শাহাব উদ্দিন, উপ-পরিচালক মেজর (অব) লিয়াকত হোসেন ও ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন। এ পাঁচ কর্মকর্তার মধ্যে চার জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। শুধুমাত্র ১৬৪ ধারায় এখনও জবানবন্দী দেননি রেজ্জাকুল হায়দার।
No comments