বাংলাদেশের নারীরা কি নিরাপদ by মাহফুজ উল্লাহ
ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, শিক্ষা, সামাজিক অবস্থান কোন ক্ষেত্রে আজ বাংলাদেশের নারী নিরাপদ? এ প্রশ্নের জবাব দেয়া উচিত মানবাধিকার সংগঠন, নারী সংগঠন ও সরকারের। কিন্তু সর্বত্র এক নিশ্চুপ অবস্থার আবরণ পুরো বিষয়টিকে ঢেকে রেখেছে। মনে হচ্ছে কোথাও কিছু ঘটছে না। নারী তার মর্যাদা নিয়ে বহাল তবিয়তে আছে। অথচ এমন কোনো দিন নেই যেদিন নারীর লাঞ্ছনার খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় না। এই লাঞ্ছনায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরাও জড়িয়ে পড়ছেন।
খবরটি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় প্রকাশিত হয়নি। অথচ পড়ে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। বলতে ইচ্ছে হচ্ছে—ধিক্ এই শিক্ষকতা! ঘটনার বিবরণ খুবই সাধারণ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের অফিস সহকারী অঞ্জলী মণ্ডল আগামী ৪ এপ্রিল থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য উপাচার্য বরাবর আবেদন করেন গত ৪ মার্চ। দেশের প্রচলিত আইনে মাতৃত্ব কোনো অপরাধ নয় এবং চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি একজন নারীর জন্য অধিকারের বিষয়। এ সময় ছুটির সঙ্গে তাকে বেতনও দিতে হবে। দেশের প্রচলিত আইনে অন্য কোনো ছুটি অধিকার নয়, সুবিধা। সেসব ছুটির মঞ্জুরি সাধারণত নির্ভর করে অফিসের কর্তার ওপর। অঞ্জলী মণ্ডলের ছুটির আবেদনে ওই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মহসিন উদ্দিন আহমেদ যে সুপারিশ করেছেন তার জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাথা লজ্জায় অবনত হওয়া উচিত। মহসিন উদ্দিন ছুটির দরখাস্তের ওপর মন্তব্য করেছেন—অঞ্জলী মণ্ডলের পরিবর্তে একজন পুরুষ কর্মচারী দিতে হবে, লাইব্রেরিতে বসে কাজ করা ছাড়াও তাকে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করতে হবে। রাত ১০টা পর্যন্ত ডিউটি করতে হবে। প্রয়োজনে অফিসের বাইরেও যেতে হবে। মহিলা বলে অঞ্জলীকে অফিসের বাইরে পাঠানো সম্ভব নয় এবং তিনি যেতেও চাননি। ছুটি ভোগ করে আসার পর অঞ্জলীকে তার বিভাগে না নেয়ার দাবি জানান তিনি। তার মতে, তখন চাকরির দায়িত্ব পালনের চেয়ে সন্তানের দায়িত্ব পালনই অঞ্জলীর কাছে বড় হয়ে উঠবে। এ কারণে জানতে ইচ্ছে করে, অধ্যাপক মহসিন উদ্দিন কোন্ মায়ের সন্তান?
এই ঘটনার সঙ্গে সমপ্রতি যুক্ত হয়েছে আরেকটি ঘটনা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষিত হয়েছে এক ছাত্রী এবং সে অপরাধে এক ছাত্রকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দৃষ্টিতে ধর্ষণের শাস্তি যদি সাময়িক বরখাস্তে সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে বলার কিছু নেই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং ধর্ষণে সেঞ্চুরি করার কাহিনীও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। শুধু কি ছাত্ররাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্রী নির্যাতনের জন্য দায়ী? জাহাঙ্গীরনগর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও এসব অভিযোগ আছে। দলীয় রাজনীতির কারণে অভিযুক্ত শিক্ষক গুরুপাপ করে লঘুদণ্ড পেয়ে যান। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে চাকরিচ্যুতির একমাত্র কারণ নৈতিক স্খলন। শিক্ষকরা কোনটিকে নৈতিক স্খলন হিসেবে আখ্যায়িত করবেন জানি না। তবে সমাজ তাদের সম্পর্কে ধীরে ধীরে বিশ্বাস হারাচ্ছে।
এমন একটি পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইডেন কলেজের সাম্প্রতিক ঘটনা। সাংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যে দুষ্কর্মের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তাকে আর যাই বলা হোক শিক্ষাঙ্গনের মর্যাদা দেয়া যাবে না। অভিযোগ উঠেছে, কলেজের সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের নেত্রীরা ভর্তি বাণিজ্য থেকে শুরু করে হেন কর্ম নেই যার সঙ্গে জড়িত নন। ভর্তি বাণিজ্য, সিট দখল এসব অনিয়ম সমর্থনযোগ্য না হলেও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র রাজনীতির ধারায় মেনে নিতে হয়। কিন্তু যে অভিযোগটি সবাইকে উত্কণ্ঠিত ও বেদনাগ্রস্ত করেছে তা হচ্ছে, রাতের অন্ধকারে শিক্ষার্থীদের এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য করা যা বর্ণনা করা যায় না এবং এই দুষ্কর্মে জড়িত থাকছে রাজনৈতিক ও ছাত্রনেতারা। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে—এজন্যই কি কৈশোর উত্তীর্ণ মেয়েরা কলেজে ভর্তি হয়েছিল? সংবাদপত্রে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা বা অভিভাবকরা কী জবাব দেবেন? অথচ এক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বলা হচ্ছে, ক’জন মেয়েই-বা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত? প্রশ্ন হচ্ছে, যদি দশজন ছাত্রীও এই লোভ ও নিষ্ঠুরতার শিকার হয় তাহলে কি তা সমর্থনযোগ্য? যদ্দূর মনে পড়ে, বর্তমান মন্ত্রিসভার দু’জন প্রভাবশালী সদস্য এই কলেজের ছাত্রী ছিলেন। একজন তো কলেজ সংসদের ভিপিও ছিলেন। অবশ্য অতীতে ছাত্র হওয়ার কারণে বর্তমানের দায় তাদের বহন করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু সবাই আশা করে সরকারিভাবেই এ সমস্যার সমাধান করা হবে, কেননা সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন সম্পর্কেই অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
সংবাদপত্রের পাতা ওল্টালে প্রতিদিন নারী নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা চোখে পড়ে। বখাটেদের উত্পাতে মেয়েদের আত্মহত্যা, স্কুল ছেড়ে দেয়া এখন কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। হিন্দু হওয়ার কারণে সম্পত্তিচ্যুত হচ্ছে এমন ঘটনাও ঘটছে। সংবাদপত্রে যেসব ঘটনা প্রকাশিত হয় তার বাইরে প্রতিদিন নারী নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। কিন্তু প্রতিকারের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
নারী নির্যাতন মূলত ঘটে থাকে পুরুষের যৌনলিপ্সার কারণে। কয়েক দিন আগে যৌন নির্যাতন রোধে হাইকোর্ট কিছু নির্দেশাবলি দিয়েছিলেন এবং সরকারকে বলেছিলেন তা বাস্তবায়ন করতে। সেক্ষেত্রে খুব একটা অগ্রগতি হয়েছে এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে এখানে যে আবেদনটি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ। অনেক ক্ষেত্রেই হাইকোর্টের বিজ্ঞ ও সচেতন বিচারপতিরা স্ব-উদ্যোগেই অনেক সমস্যার সমাধানের জন্য নির্দেশ দেন। উপরে আলোচিত তিনটি ঘটনার একটিতেও যদি হাইকোর্ট কোনো নির্দেশনা বা কারণ দর্শাও নোটিশ জারি করতেন তাহলে জনমনে স্বস্তি আসত। একই কথা প্রযোজ্য নারী সংগঠন ও নাগরিক সমাজের ক্ষেত্রে। অতীতে এ ধরনের ঘটনায় নারী সংগঠন যে পরিমাণ সোচ্চার ছিল, বর্তমানে সে কণ্ঠ আর শুনতে পাওয়া যায় না। তাহলে কি ধরে নিতে হবে, তাদের ব্যক্তিগত অনুভূতিও ভোঁতা হয়ে গেছে? নারী ও শিশুদের অবস্থা সংরক্ষণ ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের একটি মন্ত্রণালয় আছে। এসব ঘটনায় এ মন্ত্রণালয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় কিনা তা জানা যায়নি। প্রতিক্রিয়া হলে তা নিশ্চয়ই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতো।
বিচ্ছিন্নভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় প্রতিদিন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে নারী। একটি ঘটনার সঙ্গে আরেকটি ঘটনার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ না থাকলেও এসব ঘটনা সম্ভব হচ্ছে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব ও প্রশাসনিক নির্লিপ্ততার কারণে। কয়েকদিন আগে সরকার ও বিরোধী দল নারী নির্যাতনের প্রশ্নে বাহাসে লিপ্ত হয়েছিল। কিন্তু উপরে উল্লিখিত ঘটনাগুলো কি বাহাসকে যথার্থতা দেয়? আজ একথা মানতেই হবে, বাংলাদেশে বর্তমানে সব বয়সের নারীদের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন।
এই ঘটনার সঙ্গে সমপ্রতি যুক্ত হয়েছে আরেকটি ঘটনা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষিত হয়েছে এক ছাত্রী এবং সে অপরাধে এক ছাত্রকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দৃষ্টিতে ধর্ষণের শাস্তি যদি সাময়িক বরখাস্তে সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে বলার কিছু নেই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং ধর্ষণে সেঞ্চুরি করার কাহিনীও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। শুধু কি ছাত্ররাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্রী নির্যাতনের জন্য দায়ী? জাহাঙ্গীরনগর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও এসব অভিযোগ আছে। দলীয় রাজনীতির কারণে অভিযুক্ত শিক্ষক গুরুপাপ করে লঘুদণ্ড পেয়ে যান। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে চাকরিচ্যুতির একমাত্র কারণ নৈতিক স্খলন। শিক্ষকরা কোনটিকে নৈতিক স্খলন হিসেবে আখ্যায়িত করবেন জানি না। তবে সমাজ তাদের সম্পর্কে ধীরে ধীরে বিশ্বাস হারাচ্ছে।
এমন একটি পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইডেন কলেজের সাম্প্রতিক ঘটনা। সাংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যে দুষ্কর্মের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তাকে আর যাই বলা হোক শিক্ষাঙ্গনের মর্যাদা দেয়া যাবে না। অভিযোগ উঠেছে, কলেজের সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের নেত্রীরা ভর্তি বাণিজ্য থেকে শুরু করে হেন কর্ম নেই যার সঙ্গে জড়িত নন। ভর্তি বাণিজ্য, সিট দখল এসব অনিয়ম সমর্থনযোগ্য না হলেও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র রাজনীতির ধারায় মেনে নিতে হয়। কিন্তু যে অভিযোগটি সবাইকে উত্কণ্ঠিত ও বেদনাগ্রস্ত করেছে তা হচ্ছে, রাতের অন্ধকারে শিক্ষার্থীদের এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য করা যা বর্ণনা করা যায় না এবং এই দুষ্কর্মে জড়িত থাকছে রাজনৈতিক ও ছাত্রনেতারা। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে—এজন্যই কি কৈশোর উত্তীর্ণ মেয়েরা কলেজে ভর্তি হয়েছিল? সংবাদপত্রে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা বা অভিভাবকরা কী জবাব দেবেন? অথচ এক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বলা হচ্ছে, ক’জন মেয়েই-বা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত? প্রশ্ন হচ্ছে, যদি দশজন ছাত্রীও এই লোভ ও নিষ্ঠুরতার শিকার হয় তাহলে কি তা সমর্থনযোগ্য? যদ্দূর মনে পড়ে, বর্তমান মন্ত্রিসভার দু’জন প্রভাবশালী সদস্য এই কলেজের ছাত্রী ছিলেন। একজন তো কলেজ সংসদের ভিপিও ছিলেন। অবশ্য অতীতে ছাত্র হওয়ার কারণে বর্তমানের দায় তাদের বহন করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু সবাই আশা করে সরকারিভাবেই এ সমস্যার সমাধান করা হবে, কেননা সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন সম্পর্কেই অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
সংবাদপত্রের পাতা ওল্টালে প্রতিদিন নারী নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা চোখে পড়ে। বখাটেদের উত্পাতে মেয়েদের আত্মহত্যা, স্কুল ছেড়ে দেয়া এখন কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। হিন্দু হওয়ার কারণে সম্পত্তিচ্যুত হচ্ছে এমন ঘটনাও ঘটছে। সংবাদপত্রে যেসব ঘটনা প্রকাশিত হয় তার বাইরে প্রতিদিন নারী নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। কিন্তু প্রতিকারের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
নারী নির্যাতন মূলত ঘটে থাকে পুরুষের যৌনলিপ্সার কারণে। কয়েক দিন আগে যৌন নির্যাতন রোধে হাইকোর্ট কিছু নির্দেশাবলি দিয়েছিলেন এবং সরকারকে বলেছিলেন তা বাস্তবায়ন করতে। সেক্ষেত্রে খুব একটা অগ্রগতি হয়েছে এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে এখানে যে আবেদনটি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ। অনেক ক্ষেত্রেই হাইকোর্টের বিজ্ঞ ও সচেতন বিচারপতিরা স্ব-উদ্যোগেই অনেক সমস্যার সমাধানের জন্য নির্দেশ দেন। উপরে আলোচিত তিনটি ঘটনার একটিতেও যদি হাইকোর্ট কোনো নির্দেশনা বা কারণ দর্শাও নোটিশ জারি করতেন তাহলে জনমনে স্বস্তি আসত। একই কথা প্রযোজ্য নারী সংগঠন ও নাগরিক সমাজের ক্ষেত্রে। অতীতে এ ধরনের ঘটনায় নারী সংগঠন যে পরিমাণ সোচ্চার ছিল, বর্তমানে সে কণ্ঠ আর শুনতে পাওয়া যায় না। তাহলে কি ধরে নিতে হবে, তাদের ব্যক্তিগত অনুভূতিও ভোঁতা হয়ে গেছে? নারী ও শিশুদের অবস্থা সংরক্ষণ ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের একটি মন্ত্রণালয় আছে। এসব ঘটনায় এ মন্ত্রণালয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় কিনা তা জানা যায়নি। প্রতিক্রিয়া হলে তা নিশ্চয়ই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতো।
বিচ্ছিন্নভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় প্রতিদিন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে নারী। একটি ঘটনার সঙ্গে আরেকটি ঘটনার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ না থাকলেও এসব ঘটনা সম্ভব হচ্ছে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব ও প্রশাসনিক নির্লিপ্ততার কারণে। কয়েকদিন আগে সরকার ও বিরোধী দল নারী নির্যাতনের প্রশ্নে বাহাসে লিপ্ত হয়েছিল। কিন্তু উপরে উল্লিখিত ঘটনাগুলো কি বাহাসকে যথার্থতা দেয়? আজ একথা মানতেই হবে, বাংলাদেশে বর্তমানে সব বয়সের নারীদের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন।
No comments