সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিন-সাংবাদিককে পেটানোর ঘোষণা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতারা প্রকাশ্যে সমাবেশ করে প্রথম আলোর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ওয়ালিদ সিকদারকে পেটানোর ঘোষণা দিয়েছেন। প্রথম আলোয় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা এই হুমকি দেন।


তাঁরা হুমকি দিয়েই বসে থাকেননি, সমাবেশ শেষে ‘জেএমবি’ আরাফাতের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অর্ধশত নেতা-কর্মী ওয়ালিদের বাসায় গিয়ে তাঁকে খুঁজতে থাকেন এবং ওয়ালিদকে বাসায় না পেয়ে পরে শহরের বিভিন্ন স্থানে তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালান। প্রথম আলোর কপিতে তাঁরা আগুন ধরান। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে সাংবাদিকের প্রতি এমন বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। সাংবাদিককে মারতে খোঁজ করা এবং পত্রিকা পোড়ানোর ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পথে যাঁরা তাঁর জীবনকে বিপন্ন করে তুলছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সম্প্রসারিত ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর ভেঙে ফেলা বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনা ঘটে। কোনো প্রতিবেদন নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে বা ভুলভ্রান্তি থাকলে তা আইনগতভাবেই মোকাবিলা সম্ভব। কিন্তু ক্ষমতার দাপটে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সে পথে না গিয়ে সাংবাদিককে পেটানোর হুমকি দিলেন। এই আচরণ স্বৈরতান্ত্রিক এবং গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী।
সাংবাদিকেরা যেন নির্ভয়ে এবং নির্বিঘ্নে তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তা দেখার দায়িত্ব সরকারের। আশা করি, সরকার সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। কেননা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
প্রকাশ্য সমাবেশ থেকে কারা সাংবাদিককে পেটানোর হুমকি দিয়েছেন, তা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের অজানা থাকার কথা নয়। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয় এবং সাংগঠনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না, আমরা তা দেখার অপেক্ষায় আছি।

No comments

Powered by Blogger.