বিকল্প ব্যবস্থা না রাখা অপরিণামদর্শিতা-ভিস্যাট বন্ধ
কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ চালু রাখার ব্যবস্থা ভিস্যাট বন্ধ করে দিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিসিএল)। ইন্টারনেট ও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগের জন্য একটিমাত্র সাবমেরিন কেব্ল সংযোগের বাইরে কোনো বিকল্প তাই আর খোলা রইল না।
এত দিন ভিস্যাটের মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে বিকল্পভাবে অথবা জরুরি অবস্থায় ইন্টারনেট ও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগের কাজ চালাতে পারত। বিকল্প না রেখে ভিস্যাট বন্ধের এই সিদ্ধান্তকে সংশ্লিষ্ট সবাই বিতর্কিতই মনে করছেন।
ভিস্যাট হলো কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত হওয়ার প্রযুক্তি। বিটিআরসি ভিস্যাট বন্ধের সিদ্ধান্তের পক্ষে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা বন্ধের কথা বলেছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ভিস্যাট ব্যয়বহুল হওয়ায় একে ব্যবহার করে ভিওআইপি ব্যবসা মোটেই লাভজনক নয়। সুতরাং ভিওআইপি বন্ধ করার জন্য ভিস্যাট বন্ধ করার কথা বলা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার শামিল। বিটিআরসি তাহলে কোন উদ্দেশ্যে ভিস্যাট বন্ধ করে দিল, তা জানা প্রয়োজন। ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির পক্ষ থেকে বিটিআরসির এই সিদ্ধান্তকে ‘বিরাট ভুল’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট যুক্ততার প্রধান উপায় হলো সাবমেরিন কেব্ল। কিন্তু দেখা যায়, মাঝেমাঝেই সমুদ্রের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া এই কেব্ল কাটা পড়ে সেই সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৫৭ লাখ আর কম্পিউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত সাড়ে চার লাখ গ্রাহকের সামনে সাবমেরিন কেব্ল সংযোগ বন্ধ থাকার সময় কোনো বিকল্প আর রইল না। আচমকা ভিস্যাট ব্যবহার বন্ধ করা তাই অপরিণামদর্শী কাজ। সরকারের উচিত, ভিওআইপি বন্ধের আরও কার্যকর পদ্ধতির আশ্রয় নেওয়া, বিকল্প সাবমেরিন কেবলের বন্দোবস্ত রাখা। এক বিকল্প বন্ধ করার আগে আরও সহজ ও আইনানুগ বিকল্পের ব্যবস্থা থাকা উচিত।
No comments