জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি-নন্দিত একজন নেত্রী by আনোয়ারুল আজিম আরিফ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিশ্বজুড়ে নন্দিত নেত্রী। মানবসম্পদ উন্নয়ন, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরলস সংগ্রামী এক মানুষ। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রচেষ্টার মানুষও। এই শুদ্ধতম নির্ভীক আদর্শ বাঙালি মানুষটির ওপর হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছে বহুবার। আপসহীন থেকে তিনি ব্যর্থ করে দিয়েছেন সব ষড়যন্ত্র। ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে শুভেচ্ছা। স্বজন হারানোর বেদনা বুকে নিয়ে যিনি এগিয়ে চলছেন, তাঁর পথচলা শঙ্কামুক্ত হোক_এটাই আমাদের চাওয়া। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ৬ জানুয়ারি, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠা অর্জন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ী সব মানুষই জানেন_এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ওপর জনগণের প্রচণ্ড আস্থা এবং প্রত্যাশা। আর নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তিনি ডাক দিয়েছেন নতুন বাংলাদেশ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চায় তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছেন বিশ্বের দরবারে।
খেলার কথাই ধরি। অবশেষে ক্রিকেট নিয়ে দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে চট্টগ্রামবাসীর। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তেই ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামেই হয়েছে বিশ্বকাপের ম্যাচ। চট্টগ্রামে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে যখন চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, ঠিক সেই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারস্থ হয় চট্টগ্রামবাসী। সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল দেখা করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। উচ্চপর্যায়ের ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন চট্টগ্রামের চারজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এবং ১৭ জন সংসদ সদস্য। এ ছাড়াও ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিসিবি সদস্য, ক্রীড়া সংগঠকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রামবাসীকে নিরাশ করেননি নেত্রী। টানা দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, 'চট্টগ্রামে বিশ্বকাপের একাধিক ম্যাচ হবে।' প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের পরিপূর্ণ মর্যাদা দিয়ে দুটি জয় উপহার দিয়েছি আমরা। বন্দরনগরীতে বিরাজ করেছিল সে সময় উৎসবের আমেজ। কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভুল করেনি চট্টগ্রামবাসী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গুণী শিক্ষক অধ্যাপক ঢালী আল মামুন বর্তমানে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই গুণী শিল্পী আমাদের সহকর্মীই শুধু নন, বন্ধুও। আরো বড় পরিচয়, তিনি মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতামুক্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত সৈনিক। ছাত্র-শিক্ষক-দেশবাসীর সংকটে যাঁকে আমরা কাছে পেয়েছিলাম_তাঁর জীবন সংকটে পাশে দাঁড়িয়েছেন শেখ হাসিনা। মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় আমরা হারিয়েছি দুই বরেণ্য ব্যক্তিত্ব তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরকে। একই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চারুশিল্পী ঢালী আল মামুন।
মামুনের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীকে তাৎক্ষণিক চিঠি লিখেছিলাম আমি। চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরাও লিখেছেন। সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো চিঠিতে আমরা তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম, মামুনকে উন্নত চিকিৎসা দিতে দ্রুত বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থের দরকার। তাই আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আশু কাম্য। চিঠিতে বলি, চিত্রকলাসহ ঢালী আল মামুনের স্থাপনা শিল্পকর্ম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও প্রশংসিত হয়েছে। এ রকম এক গুণী শিল্পীর সংকটাপন্ন অবস্থায় আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, আমাদের আকুতিমাখা চিঠির সন্তোষজনক উত্তর আমরা পেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার মনোজ কান্তি বড়াল স্কয়ার হাসপাতালে মামুনের স্ত্রী শিল্পী দিলারা বেগম জলির কাছে ১০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। শিক্ষক ঢালী আল মামুন এ দেশের ক্ষণজন্মা শিল্পীদের অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শের শিল্পী মামুনের পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী আবারও গুণী মানুষের কদর করতে ভোলেননি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। বাবার রাজনৈতিক আদর্শ, আন্দোলন-সংগ্রাম, কারাবন্দি জীবন_সবই তিনি শৈশব-কৈশোর থেকে দেখে আসছেন। এই অভিজ্ঞতা তাঁকে বাবার আদর্শ উত্তরাধিকারী হিসেবে গড়ে তোলে।
১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে অনার্সে ভর্তি হয়ে '৬৯-এর গণ-আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রে দীক্ষিত এই আদর্শবাদী নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হয়ে দেশকে একটি সুখী, সমৃদ্ধিশালী এবং আধুনিক বাংলাদেশ_সর্বোপরি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বেন_এটাই আমাদের চাওয়া। মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আসুন নেত্রীর হাত শক্তিশালী করি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে নেত্রীকে আবারও জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
লেখক : উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
vccu66@gmail.com
খেলার কথাই ধরি। অবশেষে ক্রিকেট নিয়ে দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে চট্টগ্রামবাসীর। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তেই ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামেই হয়েছে বিশ্বকাপের ম্যাচ। চট্টগ্রামে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে যখন চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, ঠিক সেই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারস্থ হয় চট্টগ্রামবাসী। সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল দেখা করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। উচ্চপর্যায়ের ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন চট্টগ্রামের চারজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এবং ১৭ জন সংসদ সদস্য। এ ছাড়াও ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিসিবি সদস্য, ক্রীড়া সংগঠকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রামবাসীকে নিরাশ করেননি নেত্রী। টানা দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, 'চট্টগ্রামে বিশ্বকাপের একাধিক ম্যাচ হবে।' প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের পরিপূর্ণ মর্যাদা দিয়ে দুটি জয় উপহার দিয়েছি আমরা। বন্দরনগরীতে বিরাজ করেছিল সে সময় উৎসবের আমেজ। কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভুল করেনি চট্টগ্রামবাসী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গুণী শিক্ষক অধ্যাপক ঢালী আল মামুন বর্তমানে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই গুণী শিল্পী আমাদের সহকর্মীই শুধু নন, বন্ধুও। আরো বড় পরিচয়, তিনি মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতামুক্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত সৈনিক। ছাত্র-শিক্ষক-দেশবাসীর সংকটে যাঁকে আমরা কাছে পেয়েছিলাম_তাঁর জীবন সংকটে পাশে দাঁড়িয়েছেন শেখ হাসিনা। মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় আমরা হারিয়েছি দুই বরেণ্য ব্যক্তিত্ব তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরকে। একই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চারুশিল্পী ঢালী আল মামুন।
মামুনের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীকে তাৎক্ষণিক চিঠি লিখেছিলাম আমি। চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরাও লিখেছেন। সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো চিঠিতে আমরা তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম, মামুনকে উন্নত চিকিৎসা দিতে দ্রুত বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থের দরকার। তাই আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আশু কাম্য। চিঠিতে বলি, চিত্রকলাসহ ঢালী আল মামুনের স্থাপনা শিল্পকর্ম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও প্রশংসিত হয়েছে। এ রকম এক গুণী শিল্পীর সংকটাপন্ন অবস্থায় আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, আমাদের আকুতিমাখা চিঠির সন্তোষজনক উত্তর আমরা পেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার মনোজ কান্তি বড়াল স্কয়ার হাসপাতালে মামুনের স্ত্রী শিল্পী দিলারা বেগম জলির কাছে ১০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। শিক্ষক ঢালী আল মামুন এ দেশের ক্ষণজন্মা শিল্পীদের অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শের শিল্পী মামুনের পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী আবারও গুণী মানুষের কদর করতে ভোলেননি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। বাবার রাজনৈতিক আদর্শ, আন্দোলন-সংগ্রাম, কারাবন্দি জীবন_সবই তিনি শৈশব-কৈশোর থেকে দেখে আসছেন। এই অভিজ্ঞতা তাঁকে বাবার আদর্শ উত্তরাধিকারী হিসেবে গড়ে তোলে।
১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে অনার্সে ভর্তি হয়ে '৬৯-এর গণ-আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রে দীক্ষিত এই আদর্শবাদী নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হয়ে দেশকে একটি সুখী, সমৃদ্ধিশালী এবং আধুনিক বাংলাদেশ_সর্বোপরি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বেন_এটাই আমাদের চাওয়া। মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আসুন নেত্রীর হাত শক্তিশালী করি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে নেত্রীকে আবারও জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
লেখক : উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
vccu66@gmail.com
No comments