অগ্নিবাহিনী দিয়ে এবার জনশক্তি রফতানি সেক্টর ধ্বংসের মিশন- সাউথ পয়েন্টে হামলা তদন্তে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য by আজাদ সুলায়মান
গার্মেন্টস সেক্টর অশান্ত করার পর এবার
জনশক্তি রফতানি সেক্টর ধ্বংসের মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে দুর্বৃত্তরা। আর এ
মিশনও শুরু করা হয়েছে সেই আশুলিয়া থেকেই।
এখানকার
দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের নিয়েই গড়ে তোলা হয়েছে অগ্নিবাহিনী। যার কাজই হচ্ছে
ভাড়াটে হামলাকারী হিসেবে রফতানিমুখী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে এলাকায়
নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। এসব দুর্বৃত্তদের পেছনে দেশী বিদেশী
অপশক্তি সক্রিয় রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় দেশের
শীর্ষস্থানীয় জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান সাউথ পয়েন্টে অগ্নিহামলার ঘটনা
তদন্ত করতে গিয়ে এ ধরনের ভয়াবহ তথ্য পেয়েছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এ
ঘটনায় আশুলিয়া থানায় দায়েরকৃত দুটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ আরও
নিশ্চিত হয়েছে- এটা সাধারণ কোন হামলা নয়। এটা খুবই সুপরিকল্পিত নাশকতা।
পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে দাহ্য পদার্থের আলামত পেয়েছে।সিঙ্গাপুরগামী
বেকার তরুণ যুবকরা সাধারণ ক্ষোভের বশে এ জাতীয় নাশকতা করবে এটা মানতে নারাজ
পুলিশ ও এলাকার সাধারণ মানুষ। শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা
যায়Ñ সেখানে অভাবনীয় কায়দায় দুর্বৃত্তরা অগ্নিহামলা চালিয়েছে। তারা এটা
গোপনে করেনি। আগের রাতে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেছেÑ যে কোন সময় আগুনে
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হবে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের হুমকিকে আমলে নেয়নি
কর্তৃপক্ষ। পরদিন সত্যি সত্যিই রাতের অন্ধকারে কয়েকশ লোক আগুন লাগিয়ে
প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। সাউথ পয়েন্টে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মীরা
তাদের নিব্ত্তৃ করতে গিয়েও হুমকির শিকার হয়। মুহূর্তেই গোটা প্রতিষ্ঠানটিতে
আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একে একে আগুন লাগানো হয় ১নং ও ২নং আশ্রমে। যেখানে
সিঙ্গাপুরগামী যুবকরা প্রশিক্ষণ শেষে রাতে ঘুমাত। এক পর্যায়ে ছুটে আসে
ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট। দুর্বৃত্তরা তাতেও হামলা চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই হামলাকারীরা ব্যাপক নাশকতা ও তা-বলীলা চালিয়ে
নির্বিঘেœ কেটে পড়ে। প্রায় দু কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়।
এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় দুটি মামলা হয়েছে। একটিতে পুলিশ বাদী অপরটিতে বাদী হয়েছে ফায়ার সার্ভিস। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। এরা সাউথ পয়েন্টেরই সিঙ্গাপুরগামী প্রশিক্ষণার্থী। তাদের এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এখন আশুলিয়াসহ গোটা জনশক্তি রফতানি সেক্টরের প্রশ্নÑকেন এ হামলা। জানতে চাইলে এলাকার দীর্ঘদিনের ইট ব্যবসায়ী জিকু মিয়া বলেন, এতদিন আগুন লাগানো হতো গার্মেন্টসে। এখন শুরু হয়েছে জনশক্তি রফতানি সেক্টরেও। এ লক্ষণ তো ভাল নয়। যেভাবে বৃহস্পতিবার রাতে হামলা চালিয়েছে সেটা নজিরবিহীন। আশুলিয়া শিল্প এলাকায় গড়ে ওঠা শত শত গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতন ভাতাদির দাবিতে আন্দোলন করে রাস্তাঘাট অবরোধ করে। কিন্তু কোথাও প্রতিবাদের ফসল হিসেবে কারখানার ভেতরে অগ্নিসংযোগ ঘটেনি। কিন্তু এবার সাউথ পয়েন্টে কিজন্য সিঙ্গাপুরগামী বেকার যুবকরা আগুন দিয়েছে সেটা রহস্যজনক। পুলিশ সঠিক তদন্ত করলে প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব।
বিশিষ্ট জনশক্তি রফতানি বিশ্লেষক হাসান আহমদ চৌধুরী কিরণ এ সম্পর্কে বলেন, গার্মেন্টস সেক্টর অশান্ত করার পর এখন দুর্বৃত্তরা টার্গেট করেছে জনশক্তি রফতানি সেক্টরের ওপর। কারণ শত প্রতিকূলতার মাঝেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শীর্ষদেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম আজ বিশ্বব্যাপী। বছরে ১৪ বিলিয়ন ডলার আসছে এ খাত থেকে। সঙ্গত কারণেই এ সেক্টরকে শকুনের শ্যান দৃষ্টি পড়েছে। সাউথ পয়েন্টের ঘটনা খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। এটি দেশের শীর্ষস্থানীয় জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে প্রতিমাসে কমপক্ষে ৩ শতাধিক দক্ষ শ্রমিক পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরে। হতে পারে এটা প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের ঈর্ষা বা প্রতিহিংসার কারণ। এ ছাড়া আর কোন কারণ আছে কিনা পুলিশের তদন্তেই বের হয়ে আসবে।
অকৃতকার্যদের সিঙ্গাপুর না পাঠানোর জের ধরে এ হামলা চালানো হয়েছে শ্রমিকদের এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মনজুর কাদের জনকণ্ঠকে বলেন, ইচ্ছে করলেই কাউকে কর্তৃপক্ষ পাস-ফেল করাতে বা সিঙ্গাপুরে পাঠাতে পারে না। এটা আর দশটা আদম পাঠানোর মতো প্রতিষ্ঠান নয়। সাউথ পয়েন্ট চলে সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা ও নিয়মকানুনের মধ্যে। এটা দক্ষ জনশক্তি রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠান। টাকা দিলেই কেউ এখান থেকে সিঙ্গাপুর যেতে পারে না। যারাই এখানকার পরীক্ষায় পাস করে কেবল তারাই যেতে পারে। অনেক প্রার্থী আছে যারা প্রথম তিন মাসের প্রশিক্ষণেই উৎরে যায়। অনেকে আছে যারা বছরেও পারে না। এ অবস্থায় তো ফেল করা প্রার্থীকে পাঠানো সম্ভব নয়। এমন ক্ষোভ থেকে কেউ আগুন লাগিয়েছে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এটা সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী জনশক্তির যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে সেটা ধ্বংসেরই ষড়যন্ত্র বলে মনে করছি।
এ দিকে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য জনকণ্ঠকে জানায়, আশুলিয়া এলাকায় গড়ে ওঠেছে আগুন বাহিনী যার কাজই হচ্ছে অত্যন্ত ঠা-া মাথায় বিভিন্ন শিল্প কারখানায় আগুন দেয়া। বিভিন্ন কায়দায় এরা প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীদের নানা ক্ষোভ ও রোষানলকে পুঁজি করে ফায়দা লুঠে। এ সব অগ্নি সন্ত্রাসীদের ভাড়াটে হিসেবে কাজে লাগায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিপক্ষ ও শত্রুগোষ্ঠী। কারখানার ভেতরের ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের যোগসাজশে তারা পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ হামলা ভাংচুর লুণ্ঠনের মতো অপরাধ সংঘটিত করে। এতে তারা দুদিক থেকেই লাভবান হয়। একদিকে প্রতিষ্ঠানের মালামাল লুটপাট অন্যদিকে ভাড়াটে হিসেবে চুক্তির পারিশ্রমিক আদায়ের মতো দ্বৈতস্বার্থ হাসিল করে।
স্থানীয় সূত্রগুলো আরও জানায়, সাউথ পয়েন্টে আগুন লাগানোর আগের কয়েকজন প্রশিক্ষাণার্থী এলাকার একটি সন্ত্রাসী চক্রের সঙ্গে জামতলার একটি বাসায় মিলিত হয়। সেখানে বসেই তারা আগুন লাগানোর পরিকল্পনা করে ।
এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, ঘটনাস্থলে দাহ্য পদার্থ থাকার আলামত পাওয়া গেছে। এটা যে অনেক বড় পরিকল্পনার অংশ তার বড় প্রমাণ হচ্ছে- ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট সেখানে আগুন নিভাতে গিয়েও অগ্নি হামলার শিকার হয়েছে। আগুন লাগলে সাধারণত ঘটনাস্থলে বিল্েম্ব পৌঁছার দরুন বিক্ষ্্ুব্ধ জনতা হামলা চালানোর রেওয়াজ আছে। কিন্তু আগুন নিভাতে গিয়ে প্রতিহতের শিকার হওয়ার ঘটনার নজির খুব একটা নেই। ঘটনাস্থলে পৌঁছা মাত্রই কয়েকজন যুবক অতর্কিতে অগ্নিনির্বাপণ গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে। এটা মামুলি ব্যাপার নয়। শুধু বিদেশ যেতে না পারার ক্ষোভের বশে এরা এমন ভয়াবহ নাশকতায় লিপ্ত হয়নি। এটা রীতিমতো রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। এদের নেপথ্যে দেশ বিদেশের অশুভ শক্তি থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলার এএসপি মনোয়ার হোসেন বলেন, আপাতত মনে হচ্ছে প্রশিক্ষণার্থীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহির্প্রকাশেই এ হামলা। তবে এর নেপথ্যে অন্য কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা সেটাও তদন্ত করা হচ্ছে। নাশকতা হলেও তদন্তে বের হয়ে আসবে।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল থানার একজন দারোগা জানানÑ সিঙ্গাপুুরে একচেটিয়া ব্যবসা করার সুবাদে সাউথ পয়েন্ট অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বীর রোষানলের শিকার হয়েছে কিনা সেটাই আগে তদন্তের মূল বিষয় হওয়া উচিত। এ ছাড়া বিক্ষুব্ধ প্রশিক্ষণার্থী ছাড়াও সেন্টারের কোন কর্মকর্তা এতে জড়িত কিনা, তাদের কি ভূমিকা ছিল সে রাতে সেটা তদন্তের দাবি রাখে।
এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় দুটি মামলা হয়েছে। একটিতে পুলিশ বাদী অপরটিতে বাদী হয়েছে ফায়ার সার্ভিস। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। এরা সাউথ পয়েন্টেরই সিঙ্গাপুরগামী প্রশিক্ষণার্থী। তাদের এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এখন আশুলিয়াসহ গোটা জনশক্তি রফতানি সেক্টরের প্রশ্নÑকেন এ হামলা। জানতে চাইলে এলাকার দীর্ঘদিনের ইট ব্যবসায়ী জিকু মিয়া বলেন, এতদিন আগুন লাগানো হতো গার্মেন্টসে। এখন শুরু হয়েছে জনশক্তি রফতানি সেক্টরেও। এ লক্ষণ তো ভাল নয়। যেভাবে বৃহস্পতিবার রাতে হামলা চালিয়েছে সেটা নজিরবিহীন। আশুলিয়া শিল্প এলাকায় গড়ে ওঠা শত শত গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতন ভাতাদির দাবিতে আন্দোলন করে রাস্তাঘাট অবরোধ করে। কিন্তু কোথাও প্রতিবাদের ফসল হিসেবে কারখানার ভেতরে অগ্নিসংযোগ ঘটেনি। কিন্তু এবার সাউথ পয়েন্টে কিজন্য সিঙ্গাপুরগামী বেকার যুবকরা আগুন দিয়েছে সেটা রহস্যজনক। পুলিশ সঠিক তদন্ত করলে প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব।
বিশিষ্ট জনশক্তি রফতানি বিশ্লেষক হাসান আহমদ চৌধুরী কিরণ এ সম্পর্কে বলেন, গার্মেন্টস সেক্টর অশান্ত করার পর এখন দুর্বৃত্তরা টার্গেট করেছে জনশক্তি রফতানি সেক্টরের ওপর। কারণ শত প্রতিকূলতার মাঝেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শীর্ষদেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম আজ বিশ্বব্যাপী। বছরে ১৪ বিলিয়ন ডলার আসছে এ খাত থেকে। সঙ্গত কারণেই এ সেক্টরকে শকুনের শ্যান দৃষ্টি পড়েছে। সাউথ পয়েন্টের ঘটনা খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। এটি দেশের শীর্ষস্থানীয় জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে প্রতিমাসে কমপক্ষে ৩ শতাধিক দক্ষ শ্রমিক পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরে। হতে পারে এটা প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের ঈর্ষা বা প্রতিহিংসার কারণ। এ ছাড়া আর কোন কারণ আছে কিনা পুলিশের তদন্তেই বের হয়ে আসবে।
অকৃতকার্যদের সিঙ্গাপুর না পাঠানোর জের ধরে এ হামলা চালানো হয়েছে শ্রমিকদের এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মনজুর কাদের জনকণ্ঠকে বলেন, ইচ্ছে করলেই কাউকে কর্তৃপক্ষ পাস-ফেল করাতে বা সিঙ্গাপুরে পাঠাতে পারে না। এটা আর দশটা আদম পাঠানোর মতো প্রতিষ্ঠান নয়। সাউথ পয়েন্ট চলে সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা ও নিয়মকানুনের মধ্যে। এটা দক্ষ জনশক্তি রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠান। টাকা দিলেই কেউ এখান থেকে সিঙ্গাপুর যেতে পারে না। যারাই এখানকার পরীক্ষায় পাস করে কেবল তারাই যেতে পারে। অনেক প্রার্থী আছে যারা প্রথম তিন মাসের প্রশিক্ষণেই উৎরে যায়। অনেকে আছে যারা বছরেও পারে না। এ অবস্থায় তো ফেল করা প্রার্থীকে পাঠানো সম্ভব নয়। এমন ক্ষোভ থেকে কেউ আগুন লাগিয়েছে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এটা সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী জনশক্তির যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে সেটা ধ্বংসেরই ষড়যন্ত্র বলে মনে করছি।
এ দিকে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য জনকণ্ঠকে জানায়, আশুলিয়া এলাকায় গড়ে ওঠেছে আগুন বাহিনী যার কাজই হচ্ছে অত্যন্ত ঠা-া মাথায় বিভিন্ন শিল্প কারখানায় আগুন দেয়া। বিভিন্ন কায়দায় এরা প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীদের নানা ক্ষোভ ও রোষানলকে পুঁজি করে ফায়দা লুঠে। এ সব অগ্নি সন্ত্রাসীদের ভাড়াটে হিসেবে কাজে লাগায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিপক্ষ ও শত্রুগোষ্ঠী। কারখানার ভেতরের ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের যোগসাজশে তারা পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ হামলা ভাংচুর লুণ্ঠনের মতো অপরাধ সংঘটিত করে। এতে তারা দুদিক থেকেই লাভবান হয়। একদিকে প্রতিষ্ঠানের মালামাল লুটপাট অন্যদিকে ভাড়াটে হিসেবে চুক্তির পারিশ্রমিক আদায়ের মতো দ্বৈতস্বার্থ হাসিল করে।
স্থানীয় সূত্রগুলো আরও জানায়, সাউথ পয়েন্টে আগুন লাগানোর আগের কয়েকজন প্রশিক্ষাণার্থী এলাকার একটি সন্ত্রাসী চক্রের সঙ্গে জামতলার একটি বাসায় মিলিত হয়। সেখানে বসেই তারা আগুন লাগানোর পরিকল্পনা করে ।
এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, ঘটনাস্থলে দাহ্য পদার্থ থাকার আলামত পাওয়া গেছে। এটা যে অনেক বড় পরিকল্পনার অংশ তার বড় প্রমাণ হচ্ছে- ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট সেখানে আগুন নিভাতে গিয়েও অগ্নি হামলার শিকার হয়েছে। আগুন লাগলে সাধারণত ঘটনাস্থলে বিল্েম্ব পৌঁছার দরুন বিক্ষ্্ুব্ধ জনতা হামলা চালানোর রেওয়াজ আছে। কিন্তু আগুন নিভাতে গিয়ে প্রতিহতের শিকার হওয়ার ঘটনার নজির খুব একটা নেই। ঘটনাস্থলে পৌঁছা মাত্রই কয়েকজন যুবক অতর্কিতে অগ্নিনির্বাপণ গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে। এটা মামুলি ব্যাপার নয়। শুধু বিদেশ যেতে না পারার ক্ষোভের বশে এরা এমন ভয়াবহ নাশকতায় লিপ্ত হয়নি। এটা রীতিমতো রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। এদের নেপথ্যে দেশ বিদেশের অশুভ শক্তি থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলার এএসপি মনোয়ার হোসেন বলেন, আপাতত মনে হচ্ছে প্রশিক্ষণার্থীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহির্প্রকাশেই এ হামলা। তবে এর নেপথ্যে অন্য কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা সেটাও তদন্ত করা হচ্ছে। নাশকতা হলেও তদন্তে বের হয়ে আসবে।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল থানার একজন দারোগা জানানÑ সিঙ্গাপুুরে একচেটিয়া ব্যবসা করার সুবাদে সাউথ পয়েন্ট অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বীর রোষানলের শিকার হয়েছে কিনা সেটাই আগে তদন্তের মূল বিষয় হওয়া উচিত। এ ছাড়া বিক্ষুব্ধ প্রশিক্ষণার্থী ছাড়াও সেন্টারের কোন কর্মকর্তা এতে জড়িত কিনা, তাদের কি ভূমিকা ছিল সে রাতে সেটা তদন্তের দাবি রাখে।
No comments