জাতীয় অধ্যাপক নুরুল ইসলাম স্মরণে by আবুল মাল আবদুল মুহিত
চিকিৎসাবিদ এবং জাতীয় অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে আমার যৌবনকাল থেকে চিনি এবং সবসময় একজন সম্মানিত গুণী ব্যক্তি হিসেবে দেখেছি। চিকিৎসা জগতে তার অবস্থান সম্বন্ধে আমার কিছু বলা সাজে না। কিন্তু তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কিছু বিষয়ে কাজ করার সুযোগ আমার হয়।
তার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে এবং তার স্মৃতিকে স্মরণ করে আমি তাই দু'চারটি কথা বলতে চাই।
তিনি আমাদের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে (যা এখন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়েছে) নানাভাবে সুসংগঠিত করেন এবং বহুদিন এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমি জানি তিনি তার ছাত্রছাত্রীদের কাছে অতিপ্রিয় ছিলেন। তারা তাকে শুধু শিক্ষক হিসেবে চেনেন না, তারা তাকে সার্বিক অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করতেন। শিক্ষার্থী এবং তার শিক্ষক সহকর্মীর উন্নয়ন, সুখ এবং মঙ্গল কামনা ছিল তার সার্বক্ষণিক আগ্রহের বিষয়।
গত শতাব্দীর সত্তর দশকের শেষদিকে আমাদের সমস্যা হয় কলেরা রিসার্চ ল্যাবরেটরিকে বাংলাদেশে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থাপন করা। এই সময় সিয়াটো-সেন্টো নিরাপত্তা জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এই প্রতিষ্ঠানটিকে একটি সেন্টার অব এক্সসিলেন্স হিসেবে স্থাপনের উদ্দেশ্যে তিনি অত্যন্ত মূল্যবান ভূমিকা পালন করেন। আইসিডিডিআরবির যে টেকনিক্যাল কমিটি প্রতিষ্ঠানটির লেখাপড়া এবং গবেষণার বিষয় নির্ধারণ করে দেয়, তিনি ছিলেন তার আহ্বায়ক এবং তখন বিভিন্ন মতের সমন্বয় সাধন করে এই প্রতিষ্ঠানটির গঠনে ও উন্নয়নে রূপ দিতে তার ছিল অনন্য অবদান।
পরবর্তীকালে তিনি আর একটি বিষয়ে যুগান্তকারী পদক্ষেপের ছিলেন রচয়িতা। যে ওষুধনীতি বাংলাদেশে ওষুধশিল্পের বিকাশের রাস্তা উন্মুক্ত করে দেয়, সেখানেও তিনি প্রধান পরামর্শকের ভূমিকা পালন করেন। আমার মনে হয়, একটি সার্থক ওষুধনীতি প্রণয়নে তিনি যে মূল্যবান অবদান রাখেন তারই দীর্ঘমেয়াদি ফসল হচ্ছে ওষুধশিল্পে বাংলাদেশের অগ্রগতি।
চিকিৎসা শিক্ষার প্রসারেও তিনি মূল্যবান অবদান রাখেন। ব্যক্তিমালিকানা খাতে চিকিৎসা শিক্ষার বর্তমান অবস্থান আমার জানামতে তিনি এবং শিল্পপতি জহুরুল ইসলামই শুরুতে চিন্তা করেন এবং এই চিন্তার বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ নেন। ক্যান্সার প্রতিহত করার আন্দোলনেও তিনি মূল্যবান ভূমিকা রাখেন। তামাকের ব্যবহার হ্রাস করার উদ্যোগে তিনি ছিলেন পথিকৃৎ।
ব্যক্তিগতভাবে তিনি ছিলেন আমার ডাক্তার বোন জাতীয় অধ্যাপক শাহলা খাতুনের গুরু ও পরামর্শক। তিনি আরও ছিলেন আমার পিতামাতার আর একজন সন্তান এবং তাদের স্বাস্থ্যসেবায় নিবেদিত বড়মাপের চিকিৎসক। তবে সর্বোপরি তিনি ছিলেন একজন বিশ্বস্ত এবং সহানুভূতিশীল বন্ধু, পৃষ্ঠপোষক এবং সহযোগী। তার তিরোধানে সত্যিই চিকিৎসা জগতে একটি সাময়িক শূন্যতার সৃষ্টি হলো। সেই শূন্যতা পূরণের দায়িত্ব তার উত্তরসূরিদের।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সেই দায়িত্ব আমাদের সমাজ এবং চিকিৎসক গোষ্ঠী অবশ্যই গ্রহণ করবেন এবং তাতে হবে তার প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন। প্রার্থনা করি মহান আল্লাহতায়ালা তার মাগফিরাত করুন এবং তার আত্মীয়-স্বজনকে এই শোক সহ্য করার ক্ষমতা প্রদান করুন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত
অর্থমন্ত্রী
তিনি আমাদের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে (যা এখন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়েছে) নানাভাবে সুসংগঠিত করেন এবং বহুদিন এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমি জানি তিনি তার ছাত্রছাত্রীদের কাছে অতিপ্রিয় ছিলেন। তারা তাকে শুধু শিক্ষক হিসেবে চেনেন না, তারা তাকে সার্বিক অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করতেন। শিক্ষার্থী এবং তার শিক্ষক সহকর্মীর উন্নয়ন, সুখ এবং মঙ্গল কামনা ছিল তার সার্বক্ষণিক আগ্রহের বিষয়।
গত শতাব্দীর সত্তর দশকের শেষদিকে আমাদের সমস্যা হয় কলেরা রিসার্চ ল্যাবরেটরিকে বাংলাদেশে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থাপন করা। এই সময় সিয়াটো-সেন্টো নিরাপত্তা জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এই প্রতিষ্ঠানটিকে একটি সেন্টার অব এক্সসিলেন্স হিসেবে স্থাপনের উদ্দেশ্যে তিনি অত্যন্ত মূল্যবান ভূমিকা পালন করেন। আইসিডিডিআরবির যে টেকনিক্যাল কমিটি প্রতিষ্ঠানটির লেখাপড়া এবং গবেষণার বিষয় নির্ধারণ করে দেয়, তিনি ছিলেন তার আহ্বায়ক এবং তখন বিভিন্ন মতের সমন্বয় সাধন করে এই প্রতিষ্ঠানটির গঠনে ও উন্নয়নে রূপ দিতে তার ছিল অনন্য অবদান।
পরবর্তীকালে তিনি আর একটি বিষয়ে যুগান্তকারী পদক্ষেপের ছিলেন রচয়িতা। যে ওষুধনীতি বাংলাদেশে ওষুধশিল্পের বিকাশের রাস্তা উন্মুক্ত করে দেয়, সেখানেও তিনি প্রধান পরামর্শকের ভূমিকা পালন করেন। আমার মনে হয়, একটি সার্থক ওষুধনীতি প্রণয়নে তিনি যে মূল্যবান অবদান রাখেন তারই দীর্ঘমেয়াদি ফসল হচ্ছে ওষুধশিল্পে বাংলাদেশের অগ্রগতি।
চিকিৎসা শিক্ষার প্রসারেও তিনি মূল্যবান অবদান রাখেন। ব্যক্তিমালিকানা খাতে চিকিৎসা শিক্ষার বর্তমান অবস্থান আমার জানামতে তিনি এবং শিল্পপতি জহুরুল ইসলামই শুরুতে চিন্তা করেন এবং এই চিন্তার বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ নেন। ক্যান্সার প্রতিহত করার আন্দোলনেও তিনি মূল্যবান ভূমিকা রাখেন। তামাকের ব্যবহার হ্রাস করার উদ্যোগে তিনি ছিলেন পথিকৃৎ।
ব্যক্তিগতভাবে তিনি ছিলেন আমার ডাক্তার বোন জাতীয় অধ্যাপক শাহলা খাতুনের গুরু ও পরামর্শক। তিনি আরও ছিলেন আমার পিতামাতার আর একজন সন্তান এবং তাদের স্বাস্থ্যসেবায় নিবেদিত বড়মাপের চিকিৎসক। তবে সর্বোপরি তিনি ছিলেন একজন বিশ্বস্ত এবং সহানুভূতিশীল বন্ধু, পৃষ্ঠপোষক এবং সহযোগী। তার তিরোধানে সত্যিই চিকিৎসা জগতে একটি সাময়িক শূন্যতার সৃষ্টি হলো। সেই শূন্যতা পূরণের দায়িত্ব তার উত্তরসূরিদের।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সেই দায়িত্ব আমাদের সমাজ এবং চিকিৎসক গোষ্ঠী অবশ্যই গ্রহণ করবেন এবং তাতে হবে তার প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন। প্রার্থনা করি মহান আল্লাহতায়ালা তার মাগফিরাত করুন এবং তার আত্মীয়-স্বজনকে এই শোক সহ্য করার ক্ষমতা প্রদান করুন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত
অর্থমন্ত্রী
No comments