প্রশাসন পুনর্বিন্যাস-দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন কাম্য নয়
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্যতম শর্ত হলো দলনিরপেক্ষ প্রশাসন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের নিকট অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, দলীয় সরকারগুলো বরাবরই প্রশাসনের সেই দলনিরপেক্ষ অবস্থানটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে; বিশেষ করে, মেয়াদের শেষ বছরে বা নির্বাচনের আগে আগে প্রশাসনে দলীয় আনুগত্য বাড়ানোর চেষ্টায় তারা মরিয়া হয়ে ওঠে।
এবারও তার ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে না। প্রশাসনকে দলীয়করণের লক্ষণগুলো এরই মধ্যে বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জেলা প্রশাসক বা ডিসি নিয়োগের জন্য পছন্দের কর্মকর্তাদের দিয়ে এরই মধ্যে দুটি স্তর তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগ আছে, পক্ষপাতদুষ্ট পদোন্নতির মাধ্যমে তৃতীয় স্তর তৈরির প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলেছে। উদ্দেশ্য একটাই, কোনো কারণে একজন জেলা প্রশাসককে বদলি করা হলেও পরবর্তী জেলা প্রশাসক যেন পছন্দের তালিকা থেকেই আসে। এরই মধ্যে পুলিশ প্রশাসনেও দলীয়করণের প্রভাব পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নির্বাচনে জেলা প্রশাসন একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। ডিসি জেলা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভোটগ্রহণ স্থগিত কিংবা কেন্দ্র বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনীসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ সময় ডিসিদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। অভিযোগ আছে, শুধু ওপর দিকেই নয়, পুলিশের তৃণমূল পর্যায়েও দলীয়করণের প্রভাব পড়েছে। নির্বাচনের আগে আগে যদি বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বেই। কারণ বিগত চার বছরে বিরোধী দলের বহু নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়েছে। ধরপাকড় শুরু হলে তারা এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হবে, দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না। অতীতে প্রশাসনের দলীয়করণ হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর সমান সুবিধাজনক পরিবেশ বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হতো। এবার যেহেতু সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে দাবি করে আসছে, তাই এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে কি না এবং সেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে কি না, তা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে বিরোধী দলও মরিয়া হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করে আসছে। জানিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো অবস্থায়ই তারা নির্বাচনে যাবে না। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হলে সেই সরকারের কাছে তাদের প্রধান দাবিটিই হবে দলীয়করণ থেকে প্রশাসনকে মুক্ত করা। ফলে আগামী নির্বাচন নিয়ে ক্রমেই সব জটিল সমীকরণ তৈরি হয়ে চলেছে।
বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে প্রশাসনকে দলীয়করণমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, ক্ষমতায় এলে তারা সে কাজটি করবে। কিন্তু বাস্তবে আমাদের কেবল হতাশই হতে হচ্ছে। দলীয়করণের কারণে শুধু নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়, প্রশাসনের কর্মদক্ষতা হ্রাস পায়, দেশের উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হয়। তাই বর্তমান মহাজোট সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দেশের স্বার্থে ও আগামী নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার প্রয়োজনে অবিলম্বে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশাসন পুনর্বিন্যাসের সব চেষ্টা বন্ধ করা হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে সঠিক লোকটিকে সঠিক স্থানে স্থাপন করা হবে। প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, নিরপেক্ষতা যেন কোনোক্রমেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচনে জেলা প্রশাসন একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। ডিসি জেলা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভোটগ্রহণ স্থগিত কিংবা কেন্দ্র বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনীসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ সময় ডিসিদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। অভিযোগ আছে, শুধু ওপর দিকেই নয়, পুলিশের তৃণমূল পর্যায়েও দলীয়করণের প্রভাব পড়েছে। নির্বাচনের আগে আগে যদি বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বেই। কারণ বিগত চার বছরে বিরোধী দলের বহু নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়েছে। ধরপাকড় শুরু হলে তারা এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হবে, দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না। অতীতে প্রশাসনের দলীয়করণ হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর সমান সুবিধাজনক পরিবেশ বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হতো। এবার যেহেতু সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে দাবি করে আসছে, তাই এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে কি না এবং সেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে কি না, তা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে বিরোধী দলও মরিয়া হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করে আসছে। জানিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো অবস্থায়ই তারা নির্বাচনে যাবে না। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হলে সেই সরকারের কাছে তাদের প্রধান দাবিটিই হবে দলীয়করণ থেকে প্রশাসনকে মুক্ত করা। ফলে আগামী নির্বাচন নিয়ে ক্রমেই সব জটিল সমীকরণ তৈরি হয়ে চলেছে।
বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে প্রশাসনকে দলীয়করণমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, ক্ষমতায় এলে তারা সে কাজটি করবে। কিন্তু বাস্তবে আমাদের কেবল হতাশই হতে হচ্ছে। দলীয়করণের কারণে শুধু নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়, প্রশাসনের কর্মদক্ষতা হ্রাস পায়, দেশের উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হয়। তাই বর্তমান মহাজোট সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দেশের স্বার্থে ও আগামী নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার প্রয়োজনে অবিলম্বে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশাসন পুনর্বিন্যাসের সব চেষ্টা বন্ধ করা হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে সঠিক লোকটিকে সঠিক স্থানে স্থাপন করা হবে। প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, নিরপেক্ষতা যেন কোনোক্রমেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
No comments