জাতীয় জনস্বাস্থ্য সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা- বিশ্ববাসী প্রতিবছর গড়ে পাঁচটি নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাসী প্রতিবছর গড়ে পাঁচটি নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশের মানুষও এসব নতুন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। গতকাল সোমবার প্রথম জাতীয় জনস্বাস্থ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
রাজধানীর একটি হোটেলে এই সম্মেলন চলছে। আজ সম্মেলন শেষ হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বিষয়ভিত্তিক অধিবেশনে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ওয়ান হেলথ বাংলাদেশের আহ্বায়ক নিথীশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বার্ড-ফ্লু, নিপাহ, অ্যানথ্রাক্সের মতো নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই নতুন প্রেক্ষাপটে জীবজন্তু ও পরিবেশকে আলোচনায় না এনে মানুষের স্বাস্থ্যকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এবং এখানে জীবজন্তুর সংখ্যাও বেশি। তাই এ দেশে ঝুঁকিও বেশি। এই ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্য, বন, কৃষি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।সম্মেলনে একাধিক অধিবেশনে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর। এসব নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুনভাবে সমস্যা সমাধানের কথা ভাবতে হবে।
প্রথম বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান স্বাস্থ্য প্রতিবেশ এবং ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের সামনে সম্ভাব্য সমস্যা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের একটি বিরাট অঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সুন্দরবনের প্রায় ৮৪ শতাংশ পানির নিচে ডুবে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। বহু মানুষ ২০৫০ সাল নাগাদ উদ্বাস্তু জীবন যাপন করবে।
বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, ঝড়-ঝঞ্ঝার প্রকোপ আরও ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। কৃষি উৎপাদন কমে যাবে। এর সবচেয়ে মারাত্মক প্রভাব পড়বে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর। এর আগে প্রথম বিষয়ভিত্তিক অধিবেশনে স্বাস্থ্যসচিব মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, স্বাস্থ্যনীতি, জনসংখ্যা নীতি এবং চলমান স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি কর্মসূচিকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার পানি ও স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টিরোগের ওপর নজরদারি অসংক্রামক রোগের প্রবণতা বিষয়ে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।
No comments