পবিত্র কোরআনের আলো-আখেরি নবীকে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার ছিল সব নবীর
৮০. ওয়ালা- ইয়া'মুরাকুম আন তাত্তাখিযুল মালা-ইকাতা ওয়ান্নাবিয়্যীনা আরবা-বান; আঁইয়া'মুরুকুম বিলকুফরি বা'দা ইয্ আনতুম্ মুছলিমূন। ৮১. ওয়া ইয্ আখাযাল্লা-হু মীছা-ক্বান্নাবিয়্যীনা লামা- আ-তাইতুকুম্ মিন কিতা-বি ওঁয়াহিকমাতিন ছুম্মা জা-আকুম রাসূলুম্ মুসাদ্দিক্বুল্ লিমা- মাআ'কুম লাতু'মিনুন্না বিহী ওয়ালা তানসুরুন্নাহূ; ক্বা-লা
আআক্বরারতুম ওয়াআখায্তুম আ'লা- যা-লিকুম ইসরী; ক্বা-লূ আক্বরারনা-; ক্বা-লা ফাশ্হাদূ ওয়াআনা- মাআকুম্ মিনাশ্ শা-হিদীন।
৮২. ফামান তাওয়াল্লা- বা'দা যা-লিকা ফাউলা-ইকা হুমুল ফা-ছিক্বূন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৮০-৮২]
অনুবাদ
৮০. আর তিনি (সেই নবী) এমন নির্দেশও দেবেন না যে তোমরা ফেরেশতা ও নবীদের প্রভু বানিয়ে ফেলো। একবার আল্লাহর অনুগত মুসলিম হওয়ার পর তিনি কিভাবে পুনরায় কুফরির আদেশ দিতে পারেন?
৮১. যখন আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়ে ছিলেন যে, যে কিতাব ও প্রজ্ঞা তোমাদের দান করা হয়েছে। অতঃপর তোমাদের উম্মতের কাছে যখন আরো রাসুল আসবে যে তোমাদের কাছে রক্ষিত কিতাবের সত্যায়ন করবে তখন তোমরা অবশ্যই তাঁর ওপর ইমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে। আল্লাহ তায়ালা তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছ? এবং আমার সঙ্গে গ্রহণ করা অঙ্গীকার অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছ? তখন তারা বলল, হ্যাঁ, আমরা অঙ্গীকার গ্রহণ করছি। তখন আল্লাহ বললেন, তাহলে তোমরা সাক্ষী হয়ে থেকো এবং আমিও তোমাদের সঙ্গে অঙ্গীকারের সাক্ষী হয়ে রইলাম।
৮২. এরপর যারা তা ভঙ্গ করে এবং মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা অবশ্যই পাপিষ্ঠ বলে গণ্য হবে।
ব্যাখ্যা
৮০ নম্বর আয়াতটি আগে উলি্লখিত ৭৯ নম্বর আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। সে আয়াতে বলা হয়েছে, নবীরা কখনো মানুষকে আল্লাহর উপাসক থেকে ফিরিয়ে এনে নিজেদের উপাসক হতে বলতে পারেন না। অনুরূপভাবে এই আয়াতে কোনো মোশরেক ও বিভ্রান্ত জনগোষ্ঠীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে। যিনি প্রকৃত নবী তিনি কখনোই মানুষকে নির্দেশ দিতে পারেন না ফেরেশতাদের ও নবীদের উপাসক বানিয়ে ফেলার। আর আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যাপারে তো এ ধরনের শিরকি ও কুফরির প্রশ্নই ওঠে না।
৮১ নম্বর আয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা সব নবীর কাছ থেকেই অঙ্গীকার নিয়েছেন যে তাদের যে কিতাব, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করা হয়েছে, সেই কিতাব ও জ্ঞানকে পরবর্তী নবীরা এসে যখন সত্যায়ন করবে তখন তাদের উম্মতরা যেন সেই সব নবীর ওপর ইমান আনে এবং তাদের সাহায্য -সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। এই আয়াতে বেশ ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, 'আল্লাহ তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি এই অঙ্গীকার গ্রহণ করেছ? এবং আমার সঙ্গে গ্রহণ করা অঙ্গীকারকে নিজেদের দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছ, তখন তারা বলল, হ্যাঁ, আমরা অঙ্গীকার গ্রহণ করেছি এবং ও অঙ্গীকারকে দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছি। তখন আল্লাহ বললেন, তোমরা সাক্ষী হয়ে থেকো, আমিও তোমাদের সঙ্গে সাক্ষী হয়ে রইলাম। এ হলো নবুয়তের ধারাবাহিকতা সম্পর্কে আল্লাহর দেওয়া অঙ্গীকারের বিবরণ। আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগে যত নবী এসেছেন প্রত্যেকের উম্মতের জন্যই এই নির্দেশ জারি ছিল। আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)সহ সব নবীই পূর্ববর্তী নবী ও তাদের কিতাবকে সত্যায়িত করেছেন। ইসলাম ধর্মে সব নবী ও তাদের কিতাবকে সত্য বলে বিশ্বাস করে ফরজ করা হয়েছে। এর আগের অন্য নবীদের ধর্মেও অনুরূপ নির্দেশই ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, আহলে কিতাবের অনেকেই পরবর্তী নবীদের প্রতি ইমান আনতে এবং তাদের ধর্ম মেনে নিতে কুণ্ঠাবোধ করেছে। পরবর্তী নবীরা আসলে পূর্ববর্তী নবীদের ধর্ম-সংস্কারের পক্ষেই আবির্ভূত হয়েছেন। শেষ নবীর ধর্ম ইসলামেও অনুরূপ কথাই বলা হয়েছে। ৮২ নম্বর আয়াতে যারা এই অঙ্গীকার ভঙ্গ করে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তাদের করুণ পরিণতির কথা বলা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৮২. ফামান তাওয়াল্লা- বা'দা যা-লিকা ফাউলা-ইকা হুমুল ফা-ছিক্বূন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৮০-৮২]
অনুবাদ
৮০. আর তিনি (সেই নবী) এমন নির্দেশও দেবেন না যে তোমরা ফেরেশতা ও নবীদের প্রভু বানিয়ে ফেলো। একবার আল্লাহর অনুগত মুসলিম হওয়ার পর তিনি কিভাবে পুনরায় কুফরির আদেশ দিতে পারেন?
৮১. যখন আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়ে ছিলেন যে, যে কিতাব ও প্রজ্ঞা তোমাদের দান করা হয়েছে। অতঃপর তোমাদের উম্মতের কাছে যখন আরো রাসুল আসবে যে তোমাদের কাছে রক্ষিত কিতাবের সত্যায়ন করবে তখন তোমরা অবশ্যই তাঁর ওপর ইমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে। আল্লাহ তায়ালা তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছ? এবং আমার সঙ্গে গ্রহণ করা অঙ্গীকার অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছ? তখন তারা বলল, হ্যাঁ, আমরা অঙ্গীকার গ্রহণ করছি। তখন আল্লাহ বললেন, তাহলে তোমরা সাক্ষী হয়ে থেকো এবং আমিও তোমাদের সঙ্গে অঙ্গীকারের সাক্ষী হয়ে রইলাম।
৮২. এরপর যারা তা ভঙ্গ করে এবং মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা অবশ্যই পাপিষ্ঠ বলে গণ্য হবে।
ব্যাখ্যা
৮০ নম্বর আয়াতটি আগে উলি্লখিত ৭৯ নম্বর আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। সে আয়াতে বলা হয়েছে, নবীরা কখনো মানুষকে আল্লাহর উপাসক থেকে ফিরিয়ে এনে নিজেদের উপাসক হতে বলতে পারেন না। অনুরূপভাবে এই আয়াতে কোনো মোশরেক ও বিভ্রান্ত জনগোষ্ঠীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে। যিনি প্রকৃত নবী তিনি কখনোই মানুষকে নির্দেশ দিতে পারেন না ফেরেশতাদের ও নবীদের উপাসক বানিয়ে ফেলার। আর আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যাপারে তো এ ধরনের শিরকি ও কুফরির প্রশ্নই ওঠে না।
৮১ নম্বর আয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা সব নবীর কাছ থেকেই অঙ্গীকার নিয়েছেন যে তাদের যে কিতাব, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করা হয়েছে, সেই কিতাব ও জ্ঞানকে পরবর্তী নবীরা এসে যখন সত্যায়ন করবে তখন তাদের উম্মতরা যেন সেই সব নবীর ওপর ইমান আনে এবং তাদের সাহায্য -সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। এই আয়াতে বেশ ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, 'আল্লাহ তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি এই অঙ্গীকার গ্রহণ করেছ? এবং আমার সঙ্গে গ্রহণ করা অঙ্গীকারকে নিজেদের দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছ, তখন তারা বলল, হ্যাঁ, আমরা অঙ্গীকার গ্রহণ করেছি এবং ও অঙ্গীকারকে দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছি। তখন আল্লাহ বললেন, তোমরা সাক্ষী হয়ে থেকো, আমিও তোমাদের সঙ্গে সাক্ষী হয়ে রইলাম। এ হলো নবুয়তের ধারাবাহিকতা সম্পর্কে আল্লাহর দেওয়া অঙ্গীকারের বিবরণ। আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগে যত নবী এসেছেন প্রত্যেকের উম্মতের জন্যই এই নির্দেশ জারি ছিল। আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)সহ সব নবীই পূর্ববর্তী নবী ও তাদের কিতাবকে সত্যায়িত করেছেন। ইসলাম ধর্মে সব নবী ও তাদের কিতাবকে সত্য বলে বিশ্বাস করে ফরজ করা হয়েছে। এর আগের অন্য নবীদের ধর্মেও অনুরূপ নির্দেশই ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, আহলে কিতাবের অনেকেই পরবর্তী নবীদের প্রতি ইমান আনতে এবং তাদের ধর্ম মেনে নিতে কুণ্ঠাবোধ করেছে। পরবর্তী নবীরা আসলে পূর্ববর্তী নবীদের ধর্ম-সংস্কারের পক্ষেই আবির্ভূত হয়েছেন। শেষ নবীর ধর্ম ইসলামেও অনুরূপ কথাই বলা হয়েছে। ৮২ নম্বর আয়াতে যারা এই অঙ্গীকার ভঙ্গ করে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তাদের করুণ পরিণতির কথা বলা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments