গণতন্ত্রের স্বার্থে বর্ণপ্রথার বিলোপ by কুলদীপ নায়ার
স্বাধীনতা অর্জনের পর প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু প্রথম যে কাজগুলো হাতে নিয়েছিলেন, তার মধ্যে বর্ণপ্রথার বিলোপ ছিল অন্যতম। সব সরকারি নথিপত্র, দলিল ও দরখাস্তে বর্ণ চিহ্নিত করার কলামটি মুছে দেওয়া হয়। এভাবে ঔপনিবেশিক যুগের একটি অভ্যাস বাতিল হলো, পূর্ণ করা হলো স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ের একটি প্রতিশ্রুতি। বর্ণ উল্লেখ করার ব্রিটিশ রীতি প্রবর্তনের ৮৮ বছর পর ভারত বৈষম্যের এই কলঙ্কচিহ্ন থেকে মুক্ত হলো।
কিন্তু স্বাধীনতাসংগ্রামীরা কল্পনাও করতে পারেননি, স্বাধীনতার ৬২ বছর পর স্বাধীন দেশের সার্বভৌম সংসদ ব্রিটিশ যুগের সেই কলঙ্ক আবার ফিরিয়ে আনবে। পরিহাস আর কী, যে কংগ্রেস দল ব্রিটিশদের তাড়িয়ে ছিল, তারাই আবার ব্রিটিশদের চালু করা বর্ণবাদী নিয়মটি ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিল। গত সপ্তাহে ঘোষণা করা হয়েছে, আগামী বছরের আদমশুমারির ফরমে যার যার বর্ণ চিহ্নিত করার একটি ঘর থাকবে। মনমোহন সিং সরকার খুব একটা উৎসাহের সঙ্গে এটা করেছে বলে মনে হয় না। কারণ, মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য এমন বিধিকে বৈষম্যমূলক বলে এর বিরোধিতা করেন। কিন্তু এটাও মনে হয় যে কোনো মন্ত্রীই বর্ণবৈষম্যহীন একটি সমাজের জন্য ততটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নন। কিন্তু পূর্ণ গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য আবশ্যিক শর্ত হলো বর্ণপ্রথার সম্পূর্ণ বিলোপ।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এখন এ বিষয়ে কিছু করার রয়েছে। কারণ, সরকার ততটা সাহসী নয়। এবং এটাও সত্য যে লোকসভায় কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাহলেও কংগ্রেস যদি চাইত তাহলে বর্ণপ্রথার বিরুদ্ধে যথেষ্ট সমর্থন তারা পেত। কিন্তু অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে তুষ্ট করার প্রয়োজন কংগ্রেস বোধ করেনি।
জাত নিয়ে সংকীর্ণতাকে উসকে দেওয়ার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে তা কংগ্রেস বুঝতে পারেনি। ভাগ করো, শাসন করো, এই ছিল ব্রিটিশনীতি। বিভক্তির শক্তিগুলো যতই সবল হোক, স্বাধীনতা-উত্তর সমাজকে হতে হবে সমন্বিত।
সরকারের নিদেনপক্ষে জাতীয় সমন্বয় পরিষদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত ছিল। এ ধরনের সমস্যা আলোচনার জন্য সেটাই উপযুক্ত জায়গা। বর্ণপ্রথা সমগ্র জাতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। যে সংসদ ভোটারদের ৫০ শতাংশেরও প্রতিনিধিত্ব করে না, তারা দেশকে অন্ধকার যুগে ঠেলে দিতে পারে না।
বিশ্বাসঘাতকতা
নির্বাচনী রাজনীতি তিন যাদব নেতাকে অন্ধ করে দিয়েছে—জনতা দলের বিচ্ছিন্ন অংশের নেতা শারদ যাদব এবং দুই মুখ্যমন্ত্রী উত্তর প্রদেশের মুলায়ম সিং যাদব আর বিহারের লালু প্রসাদ যাদব। এঁরা তিনজনই তাঁদের গুরু সমাজতন্ত্রী রাম মনোহর লোহিয়া এবং গান্ধীতে জয়প্রকাশ নারায়ণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। লোহিয়া ও জয়প্রকাশ বর্ণভেদহীন সমাজে বিশ্বাস করতেন।
যাদব নেতাদের যুক্তি হচ্ছে, আদমশুমারিতে বর্ণ চিহ্নিত করে রাখা হলে তাঁরা যেসব পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর (ওবিসি—আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস) স্বার্থ দেখেন, তারা জাতিগত সংরক্ষণ কোটায় আরও বেশি করে চাকরি ও পড়ালেখার সুযোগ পাবে। তাঁদের ধারণা, আদমশুমারি হলে দেখা যাবে, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বর্তমানের থেকে অনেক বেশি হবে। এখনই তাদের জন্য ২৭ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রয়েছে। এই পরিমাণ তফসিলি সম্প্রদায় ও উপজাতীয়দের জন্য সংরক্ষিত আসনের থেকে চার শতাংশ বেশি। সংবিধানে কিন্তু তফসিলি সম্প্রদায় ও উপজাতীয় ছাড়া আর কোনো সামাজিক গোষ্ঠীকে স্বীকার করা হয় না।
সুপ্রিম কোর্ট ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সংরক্ষণের বিধান দিতে পারে। অর্থাৎ চাকরি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির বেলায় কমপক্ষে ৫০ শতাংশকে মেধার ভিত্তিতে আসতে হবে। এখন যাদবরা যদি আরও বেশি চান, তাহলে তাঁদের সুপ্রিম কোর্টে যেতে হবে। আদমশুমারি করে বা সংসদ তাঁদের এর বেশি সুবিধা দিতে পারবে না।
আদমশুমারির মাধ্যমেই সঠিক সংখ্যাটি জানার নিশ্চয়তা কী? শুমারকর্মী হয়তো কোনো সাধারণ মানুষকে তাঁর বর্ণ জানতে চাইবেন, উত্তরে ব্যক্তিটি যেকোনো কিছু বলতে পারে। উত্তরটি সঠিক কিনা তা জানার কোনো উপায় নেই। শুমারকারীর দায়িত্ব কেবল তাঁকে, যা বলা হবে তা লিপিবদ্ধ করা।
আইন বিষয়ে আমার জ্ঞান সীমিত। তার পরও আমার ধারণা, আদমশুমারিতে বর্ণ চিহ্নিত করা সংবিধানবিরোধী। সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা রয়েছে যে জনগণ ভারতকে একটি ‘সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’ হিসেবে গঠন করবেন। কেশবানন্দ ভারতীর মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে এই প্রস্তাবনার মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোটি দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংসদ কোনোভাবেই এটা বদলাতে পারবে না।
বর্ণপ্রথা গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের বিরোধী। জনগণকে বর্ণপ্রথার মাধ্যমে বিভক্ত করা অসাংবিধানিক। সরকার যদি এ বিষয়ে আরও এগোতে চায়, তাহলে তাদের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হবে। এখনই সেটা করা হচ্ছে না কেন?
উদ্দেশ্য
খুবই অবাক করা ব্যাপার যে বিজেপিও শুমারির ফরমে বর্ণের বিষয়টি উল্লেখ করাকে মেনে নিয়েছে। এই দলটি সবসময় আবেগের ঐক্যের কথা বলে আসছে। অথচ তারাই নির্বাচনী সুবিধার জন্য বর্ণপ্রথাকে মেনে নিচ্ছে। তারাও যাদবদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মেলাচ্ছে। যাদবরা দেখাতে চাইছেন এটাই প্রগতিশীলতা। কেননা, তাঁরাও বুঝে গেছেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য কেবল বর্ণই নয়, উপবর্ণীয়দেরও সমর্থন দরকার।
দারিদ্র্য কেবল ওবিসিদের মধ্যেই সীমিত নয়। যে দেশের ৪০ ভাগ মানুষের দৈনিক রোজগার এক ডলারেরও কম, সে দেশে সব রাজনৈতিক দলেরই উচিত দারিদ্র্যমুক্তির জন্য একযোগে কাজ করে যাওয়া। এখন সময় এসেছে সংরক্ষণ ও কোটাব্যবস্থাকে বর্ণের ভিত্তিতে নয়, দারিদ্র্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করার।
সংরক্ষণের পেছনে ভালো উদ্দেশ্য থাকলেও, এর প্রধান সুফলভোগী হয়েছে ওবিসি এবং অন্যান্য তফসিলী সম্প্রদায় ও উপজাতীয় নেতারা। সুপ্রিম কোর্ট বারবার বলেছে যে পরের প্রজন্মের এর সুফল পাওয়া উচিত। কিন্তু এসব গোষ্ঠীর নেতারা বিশেষত যাদবরা লাভবান হতে মরিয়া। ভারতকে সত্যিকারভাবে বর্ণভেদহীন দেশে পরিণত হতে হলে সংরক্ষণ ও কোটাব্যবস্থার ওপর থেকে এসব নেতার একচেটিয়া অবসান হওয়া উচিত।
ইংরেজি থেকে ভাষান্তরিত।
কুলদীপ নায়ার: ভারতীয় প্রবীণ সাংবাদিক।
কিন্তু স্বাধীনতাসংগ্রামীরা কল্পনাও করতে পারেননি, স্বাধীনতার ৬২ বছর পর স্বাধীন দেশের সার্বভৌম সংসদ ব্রিটিশ যুগের সেই কলঙ্ক আবার ফিরিয়ে আনবে। পরিহাস আর কী, যে কংগ্রেস দল ব্রিটিশদের তাড়িয়ে ছিল, তারাই আবার ব্রিটিশদের চালু করা বর্ণবাদী নিয়মটি ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিল। গত সপ্তাহে ঘোষণা করা হয়েছে, আগামী বছরের আদমশুমারির ফরমে যার যার বর্ণ চিহ্নিত করার একটি ঘর থাকবে। মনমোহন সিং সরকার খুব একটা উৎসাহের সঙ্গে এটা করেছে বলে মনে হয় না। কারণ, মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য এমন বিধিকে বৈষম্যমূলক বলে এর বিরোধিতা করেন। কিন্তু এটাও মনে হয় যে কোনো মন্ত্রীই বর্ণবৈষম্যহীন একটি সমাজের জন্য ততটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নন। কিন্তু পূর্ণ গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য আবশ্যিক শর্ত হলো বর্ণপ্রথার সম্পূর্ণ বিলোপ।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এখন এ বিষয়ে কিছু করার রয়েছে। কারণ, সরকার ততটা সাহসী নয়। এবং এটাও সত্য যে লোকসভায় কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাহলেও কংগ্রেস যদি চাইত তাহলে বর্ণপ্রথার বিরুদ্ধে যথেষ্ট সমর্থন তারা পেত। কিন্তু অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে তুষ্ট করার প্রয়োজন কংগ্রেস বোধ করেনি।
জাত নিয়ে সংকীর্ণতাকে উসকে দেওয়ার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে তা কংগ্রেস বুঝতে পারেনি। ভাগ করো, শাসন করো, এই ছিল ব্রিটিশনীতি। বিভক্তির শক্তিগুলো যতই সবল হোক, স্বাধীনতা-উত্তর সমাজকে হতে হবে সমন্বিত।
সরকারের নিদেনপক্ষে জাতীয় সমন্বয় পরিষদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত ছিল। এ ধরনের সমস্যা আলোচনার জন্য সেটাই উপযুক্ত জায়গা। বর্ণপ্রথা সমগ্র জাতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। যে সংসদ ভোটারদের ৫০ শতাংশেরও প্রতিনিধিত্ব করে না, তারা দেশকে অন্ধকার যুগে ঠেলে দিতে পারে না।
বিশ্বাসঘাতকতা
নির্বাচনী রাজনীতি তিন যাদব নেতাকে অন্ধ করে দিয়েছে—জনতা দলের বিচ্ছিন্ন অংশের নেতা শারদ যাদব এবং দুই মুখ্যমন্ত্রী উত্তর প্রদেশের মুলায়ম সিং যাদব আর বিহারের লালু প্রসাদ যাদব। এঁরা তিনজনই তাঁদের গুরু সমাজতন্ত্রী রাম মনোহর লোহিয়া এবং গান্ধীতে জয়প্রকাশ নারায়ণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। লোহিয়া ও জয়প্রকাশ বর্ণভেদহীন সমাজে বিশ্বাস করতেন।
যাদব নেতাদের যুক্তি হচ্ছে, আদমশুমারিতে বর্ণ চিহ্নিত করে রাখা হলে তাঁরা যেসব পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর (ওবিসি—আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস) স্বার্থ দেখেন, তারা জাতিগত সংরক্ষণ কোটায় আরও বেশি করে চাকরি ও পড়ালেখার সুযোগ পাবে। তাঁদের ধারণা, আদমশুমারি হলে দেখা যাবে, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বর্তমানের থেকে অনেক বেশি হবে। এখনই তাদের জন্য ২৭ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রয়েছে। এই পরিমাণ তফসিলি সম্প্রদায় ও উপজাতীয়দের জন্য সংরক্ষিত আসনের থেকে চার শতাংশ বেশি। সংবিধানে কিন্তু তফসিলি সম্প্রদায় ও উপজাতীয় ছাড়া আর কোনো সামাজিক গোষ্ঠীকে স্বীকার করা হয় না।
সুপ্রিম কোর্ট ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সংরক্ষণের বিধান দিতে পারে। অর্থাৎ চাকরি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির বেলায় কমপক্ষে ৫০ শতাংশকে মেধার ভিত্তিতে আসতে হবে। এখন যাদবরা যদি আরও বেশি চান, তাহলে তাঁদের সুপ্রিম কোর্টে যেতে হবে। আদমশুমারি করে বা সংসদ তাঁদের এর বেশি সুবিধা দিতে পারবে না।
আদমশুমারির মাধ্যমেই সঠিক সংখ্যাটি জানার নিশ্চয়তা কী? শুমারকর্মী হয়তো কোনো সাধারণ মানুষকে তাঁর বর্ণ জানতে চাইবেন, উত্তরে ব্যক্তিটি যেকোনো কিছু বলতে পারে। উত্তরটি সঠিক কিনা তা জানার কোনো উপায় নেই। শুমারকারীর দায়িত্ব কেবল তাঁকে, যা বলা হবে তা লিপিবদ্ধ করা।
আইন বিষয়ে আমার জ্ঞান সীমিত। তার পরও আমার ধারণা, আদমশুমারিতে বর্ণ চিহ্নিত করা সংবিধানবিরোধী। সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা রয়েছে যে জনগণ ভারতকে একটি ‘সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’ হিসেবে গঠন করবেন। কেশবানন্দ ভারতীর মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে এই প্রস্তাবনার মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোটি দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংসদ কোনোভাবেই এটা বদলাতে পারবে না।
বর্ণপ্রথা গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের বিরোধী। জনগণকে বর্ণপ্রথার মাধ্যমে বিভক্ত করা অসাংবিধানিক। সরকার যদি এ বিষয়ে আরও এগোতে চায়, তাহলে তাদের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হবে। এখনই সেটা করা হচ্ছে না কেন?
উদ্দেশ্য
খুবই অবাক করা ব্যাপার যে বিজেপিও শুমারির ফরমে বর্ণের বিষয়টি উল্লেখ করাকে মেনে নিয়েছে। এই দলটি সবসময় আবেগের ঐক্যের কথা বলে আসছে। অথচ তারাই নির্বাচনী সুবিধার জন্য বর্ণপ্রথাকে মেনে নিচ্ছে। তারাও যাদবদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মেলাচ্ছে। যাদবরা দেখাতে চাইছেন এটাই প্রগতিশীলতা। কেননা, তাঁরাও বুঝে গেছেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য কেবল বর্ণই নয়, উপবর্ণীয়দেরও সমর্থন দরকার।
দারিদ্র্য কেবল ওবিসিদের মধ্যেই সীমিত নয়। যে দেশের ৪০ ভাগ মানুষের দৈনিক রোজগার এক ডলারেরও কম, সে দেশে সব রাজনৈতিক দলেরই উচিত দারিদ্র্যমুক্তির জন্য একযোগে কাজ করে যাওয়া। এখন সময় এসেছে সংরক্ষণ ও কোটাব্যবস্থাকে বর্ণের ভিত্তিতে নয়, দারিদ্র্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করার।
সংরক্ষণের পেছনে ভালো উদ্দেশ্য থাকলেও, এর প্রধান সুফলভোগী হয়েছে ওবিসি এবং অন্যান্য তফসিলী সম্প্রদায় ও উপজাতীয় নেতারা। সুপ্রিম কোর্ট বারবার বলেছে যে পরের প্রজন্মের এর সুফল পাওয়া উচিত। কিন্তু এসব গোষ্ঠীর নেতারা বিশেষত যাদবরা লাভবান হতে মরিয়া। ভারতকে সত্যিকারভাবে বর্ণভেদহীন দেশে পরিণত হতে হলে সংরক্ষণ ও কোটাব্যবস্থার ওপর থেকে এসব নেতার একচেটিয়া অবসান হওয়া উচিত।
ইংরেজি থেকে ভাষান্তরিত।
কুলদীপ নায়ার: ভারতীয় প্রবীণ সাংবাদিক।
No comments