প্রসঙ্গ ইসলাম- মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ by অধ্যাপক হাসান আবদুল কাইয়ূম
অসত্যের আশ্রয় গ্রহণ, অসত্য কথা বলা,
মিথ্যাচার করা কবিরা গোনাহ বা মহাপাপ। সত্য হচ্ছে আলো আর মিথ্যা হচ্ছে
অন্ধকার। মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর লা'নত বর্ষিত হয়।
কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : লা'নাতাল্লাহি 'আলাল কাযিবীন_ মিথ্যাবাদীদের ওপর বর্ষে আল্লাহর লা'নত। (সূরা আল ইমরান : আয়াত ৬১)
মিথ্যা কল্পনাপ্রসূত, অবাস্তব এবং বানোয়াট। ফলে মিথ্যার কোনো শেকড় থাকার সম্ভাবনাই থাকে না, অথচ মিথ্যার আশ্রয়ে একশ্রেণীর মানুষ স্বার্থ হাসিল করতে সচেষ্ট হয়, সে বুঝে ওঠে না যে, সে মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে নিজেকে অন্ধত্বের মধ্যে নিমজ্জিত করছে।
প্রিয় নবী সরকারে দোআলম হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহ আলায়ইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের জন্য সত্য কথা বলা অবশ্য কর্তব্য, কেননা সত্য কথা তোমাদের সৎকর্মের পথ দেখিয়ে দেবে এবং সৎকর্ম তোমাদের জান্নাতের পথ দেখিয়ে দেবে। যদি কোন ব্যক্তি সদা সর্বদা সত্যকথা বলে এবং সত্যকথা বলার চেষ্টা করতে থাকে, তাহলে তার নাম আল্লাহর নিকট সিদ্দীক বলে লিখিত হয়ে থাকে। মিথ্যাকথা হতে বিরত থাকা তোমাদের জন্য অবশ্য কর্তব্য, কেননা মিথ্যা কথা তোমাদের অসৎ কর্মের দিকে পথ দেখিয়ে দেবে এবং অসৎকর্ম তোমাদের জাহান্নামের দিকে পথ দেখিয়ে দেবে। যদি কোন ব্যক্তি সদাসর্বদা মিথ্যাকথা বলে এবং মিথ্যাকথা বলার চেষ্টা করতে থাকে, তাহলে আল্লাহর নিকট তার নাম কায্যাব বলে লিখিত হয়ে থাকে।
মিথ্যাকথা, অসত্য কথন, মিথ্যাচার, মিথ্যা আলাপ মানুষের নৈতিকতাকে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করে দেয়। স্মরণ রাখতে হবে, সত্য নৈতিকতাকে শক্তিশালী ও উন্নত করে আর অসত্য বা মিথ্যা নৈতিকতাকে ভংগুর ও কমজোরী করে। সত্যের বিপরীতই হচ্ছে মিথ্যা। আল্লাহ জাল্লা শানুহু ইরশাদ করেন : তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশিয়ে ফেলো না এবং জেনেশুনে সত্য গোপন করো না। (সূরা বাকারা : আয়াত ৪২)।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণনা করেন যে, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়াইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : তোমরা অবশ্যই সত্যকে অবলম্বন করবে, কেননা সত্য সৎকর্মের দিকে ধাবিত করে আর সৎকর্ম ধাবিত করে জান্নাতের দিকে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়ইহি ওয়া সাল্লাম সত্য নবী। সত্যকে কায়েম করার জন্য, হককে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি যারপরনাই কোশেশ করেছেন। ইসলাম হচ্ছে আদ দীনুল হক অর্থাৎ সত্য দীন। আল্লাহ এই দীনকেই মনোনীত করেছেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের ৯ জিলহজ শুক্রবার বিদায় হজের ভাষণ শেষে আল্লাহ জাল্লা শানুহু ইসলামের পরিপূর্ণতা ঘোষণা করে ইরশাদ করেন : আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিআমত পূর্ণ করে দিলাম এবং সানন্দ অনুমোদন দান করলাম তোমাদের দীন ইসলামকে। (সূরা মায়িদা : আয়াত ৩)
সত্য দীন ইসলামে মিথ্যার কোন স্থান নেই। উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়িশা সিদ্দীকা রাদি আল্লাহু তা'আলা আনহা থেকে বর্ণিত আছে যে, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলায়হি ওয়া সাল্লাম যে আচরণের জন্য সবচেয়ে রাগান্বিত হতেন তাহলো_ কেউ মিথ্যা বললে। যতক্ষণ না সেই ব্যক্তি তওবা করত ততক্ষণ তাঁর অন্তরে তা বিঁধতে থাকত। (তিরমিযী শরীফ)।
মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যাচার করা কঠিন ও জঘন্য অপরাধ। মিথ্যা আদৌ সুফল আনতে পারে না, মিথ্যা কখনও মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না, বরং মিথ্যার ভিত্তি নড়বড়ে হওয়ায় পরিণামে মিথ্যা বয়ে আনে ধ্বংস। আমরা যদি ইতিহাস পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখতে পাব মিথ্যা বেসাতির কারণে অনেক জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে, অনেক বড় বড় সভ্যতা বিলীন হয়ে গেছে, নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : ফাসীরূ ফীল আরদি ফানযুরূ কায়ফা কানা 'আকিবাতুল মুকাযযিবীন_ সুতরাং পৃথিবীতে পবিভ্রমণ কর এবং দেখ, যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে তাদের পরিণাম কি হয়েছে? (সূরা নহল : আয়াত ৩৬)।
আসলে মিথ্যা হচ্ছে যাবতীয় পাপকর্মের উৎস। হাদীস শরীফে আছে যে, আল কিযবু ইউহলিকব্- মিথ্যা হচ্ছে ধ্বংস আনয়নকারী।
মিথ্যা ঈমানকে ধ্বংস করে দেয়, আত্মবিশ্বাস, মানবিক সৌন্দর্য, আত্মানুভব প্রভৃতির শেকড় উৎপাটিত করে দেয় এবং মানবিক মূল্যবোধকে কলুষিত, অপমানিত ও লাঞ্ছিত করে।
একবার প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম খুতবায় বললেন : হে মানুষ! মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার সমপর্যায় হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন ফাজতানিবুর রিজসা মিনাল আওছানি ওয়াজতানিবু কাওলায্ যুর_ সুতরাং তোমরা বর্জন কর মূর্তিপূজার অপবিত্রতা এবং দূরে থাক মিথ্যা বলা থেকে। (তিরমিযী শরীফ)
হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে বললেন : আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বেশি মহাপাপ সম্পর্কে জানাব! সাহাবায়ে কেরাম বললেন : হ্যা, হে আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি বললেন : আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, পিতা-মাতার নাফরমানি করা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া কিংবা মিথ্যাকথা বলা। (তিরমিযী শরীফ)।
কুরআন মজীদে মিথ্যাচারীদের প্রতি অভিশাপ প্রদান করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : কুতিলা খাররাসূন। (সূরা যারিয়াত : আয়াত ১০)।
মিথ্যাকথা বলা বা মিথ্যাচার করার মাধ্যমে অতি সাময়িক ফায়দা লাভ হলেও কিম্বা ক্ষণিক আত্মতৃপ্তির আস্বাদন লাভ হলেও মূলত তা দীর্ঘকালীন ফায়দা আনয়ন করে না, বরং তা দীর্ঘ ফায়দা থেকে বঞ্চিত করে। মিথ্যাবাদীর জন্য শেষমেশ দুর্ভোগই বয়ে আনে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে, দুর্ভোগ প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপীর। (সূরা জাছিয়া : আয়াত ৭)।
কারও প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করাও মহাপাপ। মিথ্যা শপথ করতেও নিষেধ করা হয়েছে। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : প্রায় ত্রিশজন মিথ্যাবাদী ও প্রতারকের আবির্ভাব না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হবে না। ওরা প্রত্যেকেই আল্লাহর বার্তাবাহক বলে দাবি করবে। (তিরমিযী শরীফ)।
কিছু মিথ্যাবাদী, লম্পট, প্রতারক ও ভণ্ডদের উল্লেখ হাদিস শরীফে আছে, যাদের কথাবার্তা হবে নবীদের মতো, কাজকর্ম হবে ফেরাউনের মতো আর অন্তর হবে হিংস্র সিংহের মতো। অন্য বর্ণনায় আছে, তাদের অন্তর হবে শয়তানের অন্তরের মতো।
হাদিস শরীফে আছে : সত্য সন্তোষ প্রদান করে এবং মিথ্যা সন্দেহ উদ্রেক করে। (তিরমিযী শরীফ)
৬৩০ খ্রিস্টাব্দে মক্কা বিজয়কালে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বার বার বলছিলেন : সত্য সমাগত, মিথ্যা দূরীভূত, নিশ্চয়ই মিথ্যা দূর হবার। (সূরা বনী ইসরাইল : আয়াত ৮১)
লেখক_ পীর সাহেব, দ্বারিয়াপুর শরিফ
মিথ্যা কল্পনাপ্রসূত, অবাস্তব এবং বানোয়াট। ফলে মিথ্যার কোনো শেকড় থাকার সম্ভাবনাই থাকে না, অথচ মিথ্যার আশ্রয়ে একশ্রেণীর মানুষ স্বার্থ হাসিল করতে সচেষ্ট হয়, সে বুঝে ওঠে না যে, সে মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে নিজেকে অন্ধত্বের মধ্যে নিমজ্জিত করছে।
প্রিয় নবী সরকারে দোআলম হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহ আলায়ইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের জন্য সত্য কথা বলা অবশ্য কর্তব্য, কেননা সত্য কথা তোমাদের সৎকর্মের পথ দেখিয়ে দেবে এবং সৎকর্ম তোমাদের জান্নাতের পথ দেখিয়ে দেবে। যদি কোন ব্যক্তি সদা সর্বদা সত্যকথা বলে এবং সত্যকথা বলার চেষ্টা করতে থাকে, তাহলে তার নাম আল্লাহর নিকট সিদ্দীক বলে লিখিত হয়ে থাকে। মিথ্যাকথা হতে বিরত থাকা তোমাদের জন্য অবশ্য কর্তব্য, কেননা মিথ্যা কথা তোমাদের অসৎ কর্মের দিকে পথ দেখিয়ে দেবে এবং অসৎকর্ম তোমাদের জাহান্নামের দিকে পথ দেখিয়ে দেবে। যদি কোন ব্যক্তি সদাসর্বদা মিথ্যাকথা বলে এবং মিথ্যাকথা বলার চেষ্টা করতে থাকে, তাহলে আল্লাহর নিকট তার নাম কায্যাব বলে লিখিত হয়ে থাকে।
মিথ্যাকথা, অসত্য কথন, মিথ্যাচার, মিথ্যা আলাপ মানুষের নৈতিকতাকে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করে দেয়। স্মরণ রাখতে হবে, সত্য নৈতিকতাকে শক্তিশালী ও উন্নত করে আর অসত্য বা মিথ্যা নৈতিকতাকে ভংগুর ও কমজোরী করে। সত্যের বিপরীতই হচ্ছে মিথ্যা। আল্লাহ জাল্লা শানুহু ইরশাদ করেন : তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশিয়ে ফেলো না এবং জেনেশুনে সত্য গোপন করো না। (সূরা বাকারা : আয়াত ৪২)।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণনা করেন যে, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়াইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : তোমরা অবশ্যই সত্যকে অবলম্বন করবে, কেননা সত্য সৎকর্মের দিকে ধাবিত করে আর সৎকর্ম ধাবিত করে জান্নাতের দিকে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়ইহি ওয়া সাল্লাম সত্য নবী। সত্যকে কায়েম করার জন্য, হককে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি যারপরনাই কোশেশ করেছেন। ইসলাম হচ্ছে আদ দীনুল হক অর্থাৎ সত্য দীন। আল্লাহ এই দীনকেই মনোনীত করেছেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের ৯ জিলহজ শুক্রবার বিদায় হজের ভাষণ শেষে আল্লাহ জাল্লা শানুহু ইসলামের পরিপূর্ণতা ঘোষণা করে ইরশাদ করেন : আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিআমত পূর্ণ করে দিলাম এবং সানন্দ অনুমোদন দান করলাম তোমাদের দীন ইসলামকে। (সূরা মায়িদা : আয়াত ৩)
সত্য দীন ইসলামে মিথ্যার কোন স্থান নেই। উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়িশা সিদ্দীকা রাদি আল্লাহু তা'আলা আনহা থেকে বর্ণিত আছে যে, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলায়হি ওয়া সাল্লাম যে আচরণের জন্য সবচেয়ে রাগান্বিত হতেন তাহলো_ কেউ মিথ্যা বললে। যতক্ষণ না সেই ব্যক্তি তওবা করত ততক্ষণ তাঁর অন্তরে তা বিঁধতে থাকত। (তিরমিযী শরীফ)।
মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যাচার করা কঠিন ও জঘন্য অপরাধ। মিথ্যা আদৌ সুফল আনতে পারে না, মিথ্যা কখনও মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না, বরং মিথ্যার ভিত্তি নড়বড়ে হওয়ায় পরিণামে মিথ্যা বয়ে আনে ধ্বংস। আমরা যদি ইতিহাস পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখতে পাব মিথ্যা বেসাতির কারণে অনেক জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে, অনেক বড় বড় সভ্যতা বিলীন হয়ে গেছে, নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : ফাসীরূ ফীল আরদি ফানযুরূ কায়ফা কানা 'আকিবাতুল মুকাযযিবীন_ সুতরাং পৃথিবীতে পবিভ্রমণ কর এবং দেখ, যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে তাদের পরিণাম কি হয়েছে? (সূরা নহল : আয়াত ৩৬)।
আসলে মিথ্যা হচ্ছে যাবতীয় পাপকর্মের উৎস। হাদীস শরীফে আছে যে, আল কিযবু ইউহলিকব্- মিথ্যা হচ্ছে ধ্বংস আনয়নকারী।
মিথ্যা ঈমানকে ধ্বংস করে দেয়, আত্মবিশ্বাস, মানবিক সৌন্দর্য, আত্মানুভব প্রভৃতির শেকড় উৎপাটিত করে দেয় এবং মানবিক মূল্যবোধকে কলুষিত, অপমানিত ও লাঞ্ছিত করে।
একবার প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম খুতবায় বললেন : হে মানুষ! মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার সমপর্যায় হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন ফাজতানিবুর রিজসা মিনাল আওছানি ওয়াজতানিবু কাওলায্ যুর_ সুতরাং তোমরা বর্জন কর মূর্তিপূজার অপবিত্রতা এবং দূরে থাক মিথ্যা বলা থেকে। (তিরমিযী শরীফ)
হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে বললেন : আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বেশি মহাপাপ সম্পর্কে জানাব! সাহাবায়ে কেরাম বললেন : হ্যা, হে আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি বললেন : আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, পিতা-মাতার নাফরমানি করা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া কিংবা মিথ্যাকথা বলা। (তিরমিযী শরীফ)।
কুরআন মজীদে মিথ্যাচারীদের প্রতি অভিশাপ প্রদান করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : কুতিলা খাররাসূন। (সূরা যারিয়াত : আয়াত ১০)।
মিথ্যাকথা বলা বা মিথ্যাচার করার মাধ্যমে অতি সাময়িক ফায়দা লাভ হলেও কিম্বা ক্ষণিক আত্মতৃপ্তির আস্বাদন লাভ হলেও মূলত তা দীর্ঘকালীন ফায়দা আনয়ন করে না, বরং তা দীর্ঘ ফায়দা থেকে বঞ্চিত করে। মিথ্যাবাদীর জন্য শেষমেশ দুর্ভোগই বয়ে আনে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে, দুর্ভোগ প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপীর। (সূরা জাছিয়া : আয়াত ৭)।
কারও প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করাও মহাপাপ। মিথ্যা শপথ করতেও নিষেধ করা হয়েছে। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : প্রায় ত্রিশজন মিথ্যাবাদী ও প্রতারকের আবির্ভাব না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হবে না। ওরা প্রত্যেকেই আল্লাহর বার্তাবাহক বলে দাবি করবে। (তিরমিযী শরীফ)।
কিছু মিথ্যাবাদী, লম্পট, প্রতারক ও ভণ্ডদের উল্লেখ হাদিস শরীফে আছে, যাদের কথাবার্তা হবে নবীদের মতো, কাজকর্ম হবে ফেরাউনের মতো আর অন্তর হবে হিংস্র সিংহের মতো। অন্য বর্ণনায় আছে, তাদের অন্তর হবে শয়তানের অন্তরের মতো।
হাদিস শরীফে আছে : সত্য সন্তোষ প্রদান করে এবং মিথ্যা সন্দেহ উদ্রেক করে। (তিরমিযী শরীফ)
৬৩০ খ্রিস্টাব্দে মক্কা বিজয়কালে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বার বার বলছিলেন : সত্য সমাগত, মিথ্যা দূরীভূত, নিশ্চয়ই মিথ্যা দূর হবার। (সূরা বনী ইসরাইল : আয়াত ৮১)
লেখক_ পীর সাহেব, দ্বারিয়াপুর শরিফ
No comments