যৌবন হারানো নদীর কান্না থেমে যাচ্ছে প্রমত্তা পদ্মার গর্জন
পানির অভাবে প্রমত্তা পদ্মা হারিয়েছে তার
যৌবন। নেই উচ্চ শব্দে গর্জনের ডাক। এ পর্যন্ত প্রথম ছয়টি কিস্তিতে ভারত
পানি দিলেও প্রাপ্ত হিস্যা অনুযায়ী পানি না দেবার কারণে পদ্মার ধু ধু
বালুচরে লাগেনি একটুও পানিরি আঁচ।
ঈশ্বরদী-কুষ্টিয়াতে
পদ্মা নদীর উপরে অবস্থিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালনশাহ্ সেতু দুইটি সৌন্দর্য
হারিয়ে জোড়া সেতু রূপ নিয়েছে "জোড়া মইয়ের" সাঁকো। পানি শূন্যতায় নদীর দুই
পাশে শত শত মাইল জুড়ে চাষাবাদ হচ্ছে কুলবড়ই, ধান, আলু, বাদাম, সবজিসহ নানা
ধরনের শস্য। নদীতে পানি না থাকার ফলে অনাহারে জীবনযাপন করছে শত-শত পরিবার।
এদের জীবিকা নির্বাহের এক মাত্র মাধ্যম নৌকা। শুক্রবারসহ ছুটির দিনগুলোতে
হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসু দর্শনার্থী আসে প্রমত্তা নদীর বুকে সময় কাটাতে।
এদের মধ্যে শখ করে নৌকায় চড়ে ভ্রমণে বাজারে যায় মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে। এই
আয়ের উপরে নির্ভর করতে হয় মাঝিদের।
প্রচ- গরম ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাকশী পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে প্রায় প্রতিদিনই পানির উচ্চতা কমে যাচ্ছে। গত বছরের জুন থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমাণ ছিল ৮২ হাজার ১৩৪ কিউসেক এবং উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৩৫ মিটার। প্রতিদিনই ৫/৬ সেঃমিঃ করে পানির উচ্চতা কমে যাচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই বাড়ছে নদী এলাকার তাপমাত্রা। এই কারণে নদীর তীরবর্তী এলাকার ফসল, পশুকুল ও মানুষ নানাভাবে তিগ্রসত্ম হচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জেলেদের মাছ ধরা। বন্ধ থাকা নদীনির্ভর সেচ প্রকল্পগুলো পানির অভাবে এখনও চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। পানি ধারণের জন্য যে ড্রেজিং দরকার ছিল তা করা হয়নি। এদিকে বর্ষা মৌসুম শুরম্ন হলেও পদ্মায় পানির দেখা নেই। এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মা পুরো যৌবন হারিয়ে আজ মরা খালে পরিণত হয়েছে। ফলে পদ্মার ভবিষ্যতই এখন অন্ধকার।
নদীসংশিষ্ট সূত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী দেড় যুগের বেশি সময় ধরে পদ্মায় পানির পরিমাণ কমছে। আর প্রতিবছরই সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করছে। বর্ষা মৌসুমে যে পরিমাণ পানি জমে তার স্থায়িত্ব খুবই কম। ফলে নদীর দুই কূল জুড়ে ছোট বড় অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। নদী শুকিয়ে বিশাল চর ও বালুকা রাশিতে একাকার হয়ে গেছে। নদীর শাখা-প্রশাখা, খাল- বিল এমনকি পুকুরেও পানি নেই। এর পরও ভূ-গর্ভস্থ পানির সত্মর ক্রমেই নেমে যাচ্ছে। সর্বত্র চলছে পানির জন্য হাহাকার। শুধু নদী ও খাল বিলে কিংবা ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগেই নয়, এই অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ পানির সত্মরও প্রতিবছর নিচে নেমে যাচ্ছে।
অন্যদিকে ঢাকার দোহারে পদ্মা নদীতে বাঁশ ও জাল দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি গাড়া পাতন বাঁধ স্থাপন করে ইলিশ, জাটকা, পোনা মাছসহ বিভিন্ন মাছ শিকার ও চাষ করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে দীঘদিন ধরে এ কাজ চলে এলেও বিষয়টি স্থানীয় প্রসাশনের নজরে আসছে না। বাঁধের পাশাপাশি নদীতে নিষিদ্ধ বেড়জাল ব্যবহারের ফলে পদ্মাসহ স্থানীয় অন্যান্য নদী ও খাল-বিল মৎস্যশূন্য হতে চলেছে। উপজেলার নারিশা এলাকায় প্রতি বছরই জেলে পরিচয়ধারী স্থানীয় প্রভাবশালীরা বাঁশ ও জাল দিয়ে বিশেষ বাঁধ নদীর বিরাট এলাকায় আড়াআড়ি পেতে ইলিশ, জাটকাসহ অন্যান্য মাছ, মাছের ডিম ও পোনা শিকার করে। প্রতি বছর এ এলাকায় অনত্মত ৪/৫টি এ ধরনের বাঁধ স্থাপন করা হয়। এক একটি বাঁধ তৈরিতে শত শত বাঁশ নদীতে পুঁততে হয়। বিশাল একেকটি বাঁধ নদীর তীর থেকে বিসত্মৃত রয়েছে। ১৯৫০ সালের মৎস্য সংরণ আইনে নদীতে গাড়া পাতন বাঁধ স্থাপন করে মাছ শিকার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা আছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় এ ধরনের বাঁধ স্থাপন ও কারেন্ট জাল, বেড় জালের মতো নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে দিন দিন স্থানীয় নদ-নদী ও খাল-বিলে আশঙ্কাজনকভাবে মাছের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে শত শত সাধারণ জেলে পরিবার।
স্থানীয় জেলেরা জানান লুৎফর মেম্বারের নেতৃত্বে ইউনুস বেপারী, হেলন বেপারী, সেলিম মৃধা, নূর মোহম্মদ মোলস্না, ফয়জল মোলস্নাসহ ১৫/১৬ জনের একটি দল বাঁধ তৈরি করে মাছ শিকার ও চাষ করছে। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে বিভিন্নভাবে তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং কাউকে কাউকে এলাকা ছেড়ে দেবার হুমকি দিচ্ছে তারা। তারা জানায়, এ বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে উপজেলা প্রশাসনকে জানালে ইউএনও আমাদেরকে বাঁধ উঠিয়ে দেবার আশ্বাস দিলেও তা আজও বাসত্মবায়িত হয়নি।
- তৌহিদ আক্তার পান্না, ঈশ্বরদী
অমিতাভ পাল অপু, দোহার
প্রচ- গরম ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাকশী পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে প্রায় প্রতিদিনই পানির উচ্চতা কমে যাচ্ছে। গত বছরের জুন থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমাণ ছিল ৮২ হাজার ১৩৪ কিউসেক এবং উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৩৫ মিটার। প্রতিদিনই ৫/৬ সেঃমিঃ করে পানির উচ্চতা কমে যাচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই বাড়ছে নদী এলাকার তাপমাত্রা। এই কারণে নদীর তীরবর্তী এলাকার ফসল, পশুকুল ও মানুষ নানাভাবে তিগ্রসত্ম হচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জেলেদের মাছ ধরা। বন্ধ থাকা নদীনির্ভর সেচ প্রকল্পগুলো পানির অভাবে এখনও চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। পানি ধারণের জন্য যে ড্রেজিং দরকার ছিল তা করা হয়নি। এদিকে বর্ষা মৌসুম শুরম্ন হলেও পদ্মায় পানির দেখা নেই। এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মা পুরো যৌবন হারিয়ে আজ মরা খালে পরিণত হয়েছে। ফলে পদ্মার ভবিষ্যতই এখন অন্ধকার।
নদীসংশিষ্ট সূত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী দেড় যুগের বেশি সময় ধরে পদ্মায় পানির পরিমাণ কমছে। আর প্রতিবছরই সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করছে। বর্ষা মৌসুমে যে পরিমাণ পানি জমে তার স্থায়িত্ব খুবই কম। ফলে নদীর দুই কূল জুড়ে ছোট বড় অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। নদী শুকিয়ে বিশাল চর ও বালুকা রাশিতে একাকার হয়ে গেছে। নদীর শাখা-প্রশাখা, খাল- বিল এমনকি পুকুরেও পানি নেই। এর পরও ভূ-গর্ভস্থ পানির সত্মর ক্রমেই নেমে যাচ্ছে। সর্বত্র চলছে পানির জন্য হাহাকার। শুধু নদী ও খাল বিলে কিংবা ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগেই নয়, এই অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ পানির সত্মরও প্রতিবছর নিচে নেমে যাচ্ছে।
অন্যদিকে ঢাকার দোহারে পদ্মা নদীতে বাঁশ ও জাল দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি গাড়া পাতন বাঁধ স্থাপন করে ইলিশ, জাটকা, পোনা মাছসহ বিভিন্ন মাছ শিকার ও চাষ করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে দীঘদিন ধরে এ কাজ চলে এলেও বিষয়টি স্থানীয় প্রসাশনের নজরে আসছে না। বাঁধের পাশাপাশি নদীতে নিষিদ্ধ বেড়জাল ব্যবহারের ফলে পদ্মাসহ স্থানীয় অন্যান্য নদী ও খাল-বিল মৎস্যশূন্য হতে চলেছে। উপজেলার নারিশা এলাকায় প্রতি বছরই জেলে পরিচয়ধারী স্থানীয় প্রভাবশালীরা বাঁশ ও জাল দিয়ে বিশেষ বাঁধ নদীর বিরাট এলাকায় আড়াআড়ি পেতে ইলিশ, জাটকাসহ অন্যান্য মাছ, মাছের ডিম ও পোনা শিকার করে। প্রতি বছর এ এলাকায় অনত্মত ৪/৫টি এ ধরনের বাঁধ স্থাপন করা হয়। এক একটি বাঁধ তৈরিতে শত শত বাঁশ নদীতে পুঁততে হয়। বিশাল একেকটি বাঁধ নদীর তীর থেকে বিসত্মৃত রয়েছে। ১৯৫০ সালের মৎস্য সংরণ আইনে নদীতে গাড়া পাতন বাঁধ স্থাপন করে মাছ শিকার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা আছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় এ ধরনের বাঁধ স্থাপন ও কারেন্ট জাল, বেড় জালের মতো নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে দিন দিন স্থানীয় নদ-নদী ও খাল-বিলে আশঙ্কাজনকভাবে মাছের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে শত শত সাধারণ জেলে পরিবার।
স্থানীয় জেলেরা জানান লুৎফর মেম্বারের নেতৃত্বে ইউনুস বেপারী, হেলন বেপারী, সেলিম মৃধা, নূর মোহম্মদ মোলস্না, ফয়জল মোলস্নাসহ ১৫/১৬ জনের একটি দল বাঁধ তৈরি করে মাছ শিকার ও চাষ করছে। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে বিভিন্নভাবে তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং কাউকে কাউকে এলাকা ছেড়ে দেবার হুমকি দিচ্ছে তারা। তারা জানায়, এ বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে উপজেলা প্রশাসনকে জানালে ইউএনও আমাদেরকে বাঁধ উঠিয়ে দেবার আশ্বাস দিলেও তা আজও বাসত্মবায়িত হয়নি।
- তৌহিদ আক্তার পান্না, ঈশ্বরদী
অমিতাভ পাল অপু, দোহার
No comments