বঙ্গবন্ধুর অনুসারীদের ঐক্য
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ও বঙ্গবন্ধুর অনুসারী আইনজীবীদের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী এমন এক সময় এ আহ্বান জানালেন, যখন স্বাধীনতাবিরোধীরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে বঙ্গবন্ধুর অনুসারীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘যারা আমাদের মধ্যে বিভেদের চেষ্টা করছে তাদের অবশ্যই শনাক্ত করতে হবে। কারণ সাপকে যতই দুধ-কলা দিয়ে পোষা হোক না কেন একদিন সে ছোবল মারবেই।’ বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য, সর্বস্তরে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ পুনর্প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষণমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গত চার বছর ধরে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অনুসারী আইনজীবীদের অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সর্বস্তরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তাদের সদাসতর্ক থাকতে হবে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণ করেন। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রচারে এ সংগঠনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে পরে যে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ পড়ে উঠেছে তার ভূমিকাও কম নয়। কিন্তু এই দুটি সংগঠনের মধ্যে এতটুকু সংঘাত থাকা উচিত নয়; প্রতিটি কাজে তাদের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।স্বাধীনতাবিরোধী ও কট্টরপন্থীরা সারাদেশকে পিছিয়ে দিতে চায়; তারা দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়। তাদের অন্যতম লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে ধ্বংস করা। বঙ্গবন্ধুর অনুসারী আইনজীবীদের মধ্যে এরা সুকৌশলে অনুপ্রবেশ করে বিভেদের মন্ত্র ছড়াচ্ছে। এই বিভাজনপন্থীদের এতটুকু প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। যদি তা করা হয়, তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বঙ্গবন্ধু সারা জীবন আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করেছেন। সর্বস্তরে আইনের শাসন ছাড়া গণতন্ত্র কখনোই টিকতে পারে না। বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ ও আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্যদের সর্বক্ষণিকভাবে এ কথা মনে রাখতে হবে। সরকার বিচার বিভাগকে পৃথক করেছে। তারা বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগ ও জাতীয় সংসদকে শক্তিশালী করার জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি যাতে দুর্নীতি বা অনিয়মের শিকার না হয় তা দেখার অন্যতম দায়িত্ব আইনজীবীদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ক্ষেত্রে আইনজীবীদের লক্ষ্য করে বলেছেন, কেউ যাতে অকারণে হাজতবাস না করে বা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আইনজীবীরা যদি সততা, ন্যায়নীতি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকেন, তবে এ দেশ থেকে যাবতীয় অন্যায় অনিয়ম দূর হবে। এ ক্ষেত্রে গণভবনে মতবিনিময় সভায় কোন কোন আইনজীবী বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ ও আওয়ামী আইনজীবী পরিষদকে এক করার যে প্রস্তাব করেছেন তা সময়ের প্রয়োজনে সবারই বিবেচনা করা উচিত বলে আমরা মনে করি। এর ফলে বঙ্গবন্ধুর অনুসারী আইনজীবীদের ঐক্য প্রক্রিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। সেই সঙ্গে ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটবে।
No comments