দেশে জনপ্রিয়, পাশ্চাত্যে নিন্দিত কিম ইল

ত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা সদ্যপ্রয়াত কিম জং ইলের জন্ম তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তথ্য মতে, ইল ১৯৪১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ভাটসকোয়ে গ্রামের এক গোপন সেনা ক্যাম্পে জন্মগ্রহণ করেন। তবে উত্তর কোরিয়ার রেকর্ড অনুযায়ী তিনি ১৯৪২ সালের ১৬ ডিসেম্বর জন্ম নেন। ইলের জন্মের পর তার নাম রাখা হয় ইউরি ইরসেনোভিচ কিম। তিনি ছিলেন দেশে জনপ্রিয় ও নন্দিত। কিন্তু পাশ্চাত্যের কাছে তিনি স্বৈরশাসক ও


নিন্দার পাত্র।তার বাবার নাম কিম ইল সুং এবং মা কিম জয় সুক। সুক কিম ইল সুংয়ের প্রথম স্ত্রী ছিলেন। কিমের বয়স যখন চার কি পাঁচ তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় এবং কোরিয়া জাপানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। শৈশবেই কিম মাতৃহারা হন। কিম জং ইল স্কুলজীবনেই কিম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন।
উত্তর কোরীয় নেতা কিম ইল সুং ১৯৯৪ সালে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলে কিম জং ইল দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৭ সালের ৮ অক্টোবর ওয়ার্কার্স পার্টি অব কোরিয়ার জেনারেল সেক্রেটারি পদে আসীন হন, জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হন ১৯৯৩ সালের ৯ এপ্রিল। ১৯৯৮ সালে জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানের পদকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। সুতরাং ওই দিন থেকেই কিম জং ইল রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রধান হিসেবে বিবেচিত হন। কিম উত্তর কোরিয়ার সুপ্রিম পিপলস এসেম্বলি দ্বারা প্রতি পাঁচ বছর পর পর কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হতেন। ২০০৯ সালে তিনি জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে আবার নির্বাচিত হন। সরকারি রেকর্ড অনুসারে কিম একবারই বিয়ে করেন। কিমের সন্তানসংখ্যা ৪। এদের ৩টি ছেলে অপরটি মেয়ে। কিম জং ইল তার ছোট ছেলে কিম জং উনকে তার উত্তরাধিকারী মনোনীত করে গেছেন। কিম জং ইল ১৭ ডিসেম্বর পিয়ংইয়ংয়ের বাইরে ট্রেনে ভ্রমণকালে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। কিম জং ইল ছিলেন তার দেশকে পরমাণু অস্ত্রে বলীয়ান করে তোলার স্থপতি। ২০০৬ সালের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায়। একই ধরনের অন্য একটি পরীক্ষা চালানো হয় ২০০৯ সালে।বলতে গেলে, পরমাণু ইস্যুকে কেন্দ্র করে উত্তর কোরিয়া ছিল পুরোপুরি একঘরে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর ইউরোপীয় মিত্র রাষ্ট্রগুলো এ নেতাকে স্বৈরশাসক বলে সমালোচনা করে থাকে।

No comments

Powered by Blogger.