পবিত্র কোরআনের আলো-মুশরিকদের উপাস্যরা নিজেদের ভাগ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না
১৯০. ফালাম্মা আ-তা-হুমা সা-লিহান জাআ'লা লাহূ শুরাকা-আ ফীমা আ-তা-হুমা ফাতাআ'-লাল্লা-হু আ'ম্মা ইউশরিকূন। ১৯১. আইউশ্রিকূনা মা লা-ইয়াখ্লুক্বু শাইআন ওয়া হুম ইউখ্লাক্বূন। ১৯২. ওয়ালা ইয়াছ্তাত্বীঊ'না লাহুম নাসরান ওয়া লা আনফুছাহুম ইয়ানসুরূন। ১৯৩. ওয়া ইন তাদঊ'হুম ইলাল হুদা লা ইয়াত্তাবিঊ'কুম; ছাওয়া-উন আ'লাইকুম আদাআ'ওতুমূহুম আম্ আনতুম সা-মিতূন। ১৯৪. ইন্নাল্লাযীনা তাদ্ঊ'না মিন্ দূনিল্লা-হি ই'বা-দুন
আমছা-লুকুম ফাদ্ঊ'হুম ফালইয়াছ্তাজীবূ লাকুম ইন কুনতুম সা-দিক্বীন। [সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১৯০-১৯৪]
অনুবাদ : ১৯০. কিন্তু আল্লাহ যখন তাদের একটি সুস্থ সন্তান দান করলেন তখন তারা আল্লাহপ্রদত্ত নিয়ামতের কৃতজ্ঞতায় আল্লাহর সঙ্গে অন্যদেরও শরিক বানিয়ে ফেলল। অথচ আল্লাহ তাদের এই শরিক বানানোর বিষয়টা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।
১৯১. তারা কি এমন সব জিনিসকে আল্লাহর সঙ্গে শরিক বানায়, যারা কোনো কিছুই সৃষ্টি করতে পারে না; বরং তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে।
১৯২. আর যারা তাদের কোনো সাহায্য করতে পারে না এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায়ও তারা সক্ষম নয়।
১৯৩. তোমরা যদি তাদের হেদায়েতের পথে ডাকো, তবে তারা তোমাদের অনুসরণ করবে না, তোমরা তাদের ডাকো আর না ডাকো দুটোই সমান কথা।
১৯৪. (হে মুশরিকরা!) তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে অন্য যাদের কাছে প্রার্থনা জানাও, তারা তোমাদের মতোই আল্লাহর বান্দা। তোমাদের অবস্থান যদি সত্য হতো, তবে যাদের কাছে তোমরা প্রার্থনা জানাও, তারা তোমাদের ডাকে সাড়া দিত, অর্থাৎ প্রার্থনা কবুল করে নিত।
ব্যাখ্যা : ১৯০ নম্বর আয়াতে মানবজাতির আদি অবস্থা থেকেই মানুষ কিভাবে শিরকের প্রতি ঝুঁকে পড়ে, সে বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে। এর আগের আয়াতে আদম ও হাওয়া (আ.)-এর জন্ম ও তাদের বংশধর প্রজননের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। এই আয়াতে মানব বংশ প্রজননের সূত্র ধরেই আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে মানুষ কিভাবে বিভ্রান্ত হয়ে গায়রুল্লাহর ক্ষমতায় বিশ্বাসী হয়ে ওঠে এবং একত্ববাদ ও সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়, সে বিষয়টা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সন্তানের ব্যাপারে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার অন্ধ বিশ্বাসজনিত নানা কুসংস্কারে মানুষ আদিকাল থেকেই করে আসছে। সন্তান বা বংশধরের জন্ম হওয়া আল্লাহর এক বিরাট দান এবং মানুষের জন্য পরম সৌভাগ্য। মানুষ এই সৌভাগ্যে আত্মহারা হয়ে অদৃশ্য আল্লাহকে ভুলে দৃশ্যমান নানা বস্তু বা ব্যক্তির শক্তিতে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে এবং নানা উপাচারে লিপ্ত হয়। এসব থেকে বিরত থাকার জন্য এখানে সতর্ক করা হয়েছে। এর পরবর্তী আয়াতগুলোতে অংশীবাদ বা শিরকের অসারতা বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা হয়েছে। এই বিশ্বজগতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর সৃষ্টি। মানুষ আল্লাহর সঙ্গে যা কিছু শরিক করে, সেগুলো আল্লাহর সৃষ্টি, সেগুলো কী করে মানুষের ভাগ্যনিয়ন্ত্রক হতে পারে! এদের ভাগ্যই তো আল্লাহর হাতে। সুতরাং শিরকের ভিত্তিই অসত্য, অন্ধবিশ্বাস ও অযৌক্তিকতার ওপর স্থাপিত। অপরদিকে যাদের বা যেসব বস্তুকে আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা হয়, তারা তো মানুষকে কোনোরকম সাহায্য করতে পারে না, এমনকি তারা নিজেরা নিজেদের রক্ষা করতেও সক্ষম নয়। বিশেষ করে প্রাচীনকাল থেকে মানুষ যে মূর্তি পূজায় বা প্রকৃতি পূজায় লিপ্ত হয়েছে, সেইসব মূর্তি বা কল্পিত দেব-দেবীরা তো নিজেদেরই রক্ষা করতে সক্ষম নয়। তারা কী করে মানুষকে সাহায্য করবে বা মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করবে? ১৯৩ নম্বর আয়াতে সেইসব মূর্খ ও অন্ধবিশ্বাসী মুশরিকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। তাদের সত্যের পথ দেখালেও তারা সে পথে আসে না। তাদের পথ দেখানো আর না দেখানো সমান কথা। ১৯৪ নম্বর আয়াতে মুশরিকদের চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তাদের উপাস্যরা যদি সত্য হয়ে থাকে, তবে তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে দেখাক। কিন্তু তারা কখনোই তা পারবে না।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১৯০. কিন্তু আল্লাহ যখন তাদের একটি সুস্থ সন্তান দান করলেন তখন তারা আল্লাহপ্রদত্ত নিয়ামতের কৃতজ্ঞতায় আল্লাহর সঙ্গে অন্যদেরও শরিক বানিয়ে ফেলল। অথচ আল্লাহ তাদের এই শরিক বানানোর বিষয়টা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।
১৯১. তারা কি এমন সব জিনিসকে আল্লাহর সঙ্গে শরিক বানায়, যারা কোনো কিছুই সৃষ্টি করতে পারে না; বরং তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে।
১৯২. আর যারা তাদের কোনো সাহায্য করতে পারে না এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায়ও তারা সক্ষম নয়।
১৯৩. তোমরা যদি তাদের হেদায়েতের পথে ডাকো, তবে তারা তোমাদের অনুসরণ করবে না, তোমরা তাদের ডাকো আর না ডাকো দুটোই সমান কথা।
১৯৪. (হে মুশরিকরা!) তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে অন্য যাদের কাছে প্রার্থনা জানাও, তারা তোমাদের মতোই আল্লাহর বান্দা। তোমাদের অবস্থান যদি সত্য হতো, তবে যাদের কাছে তোমরা প্রার্থনা জানাও, তারা তোমাদের ডাকে সাড়া দিত, অর্থাৎ প্রার্থনা কবুল করে নিত।
ব্যাখ্যা : ১৯০ নম্বর আয়াতে মানবজাতির আদি অবস্থা থেকেই মানুষ কিভাবে শিরকের প্রতি ঝুঁকে পড়ে, সে বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে। এর আগের আয়াতে আদম ও হাওয়া (আ.)-এর জন্ম ও তাদের বংশধর প্রজননের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। এই আয়াতে মানব বংশ প্রজননের সূত্র ধরেই আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে মানুষ কিভাবে বিভ্রান্ত হয়ে গায়রুল্লাহর ক্ষমতায় বিশ্বাসী হয়ে ওঠে এবং একত্ববাদ ও সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়, সে বিষয়টা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সন্তানের ব্যাপারে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার অন্ধ বিশ্বাসজনিত নানা কুসংস্কারে মানুষ আদিকাল থেকেই করে আসছে। সন্তান বা বংশধরের জন্ম হওয়া আল্লাহর এক বিরাট দান এবং মানুষের জন্য পরম সৌভাগ্য। মানুষ এই সৌভাগ্যে আত্মহারা হয়ে অদৃশ্য আল্লাহকে ভুলে দৃশ্যমান নানা বস্তু বা ব্যক্তির শক্তিতে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে এবং নানা উপাচারে লিপ্ত হয়। এসব থেকে বিরত থাকার জন্য এখানে সতর্ক করা হয়েছে। এর পরবর্তী আয়াতগুলোতে অংশীবাদ বা শিরকের অসারতা বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা হয়েছে। এই বিশ্বজগতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর সৃষ্টি। মানুষ আল্লাহর সঙ্গে যা কিছু শরিক করে, সেগুলো আল্লাহর সৃষ্টি, সেগুলো কী করে মানুষের ভাগ্যনিয়ন্ত্রক হতে পারে! এদের ভাগ্যই তো আল্লাহর হাতে। সুতরাং শিরকের ভিত্তিই অসত্য, অন্ধবিশ্বাস ও অযৌক্তিকতার ওপর স্থাপিত। অপরদিকে যাদের বা যেসব বস্তুকে আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা হয়, তারা তো মানুষকে কোনোরকম সাহায্য করতে পারে না, এমনকি তারা নিজেরা নিজেদের রক্ষা করতেও সক্ষম নয়। বিশেষ করে প্রাচীনকাল থেকে মানুষ যে মূর্তি পূজায় বা প্রকৃতি পূজায় লিপ্ত হয়েছে, সেইসব মূর্তি বা কল্পিত দেব-দেবীরা তো নিজেদেরই রক্ষা করতে সক্ষম নয়। তারা কী করে মানুষকে সাহায্য করবে বা মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করবে? ১৯৩ নম্বর আয়াতে সেইসব মূর্খ ও অন্ধবিশ্বাসী মুশরিকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। তাদের সত্যের পথ দেখালেও তারা সে পথে আসে না। তাদের পথ দেখানো আর না দেখানো সমান কথা। ১৯৪ নম্বর আয়াতে মুশরিকদের চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তাদের উপাস্যরা যদি সত্য হয়ে থাকে, তবে তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে দেখাক। কিন্তু তারা কখনোই তা পারবে না।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments