অগ্নিঝরা মার্চ
১৯ মার্চ, ১৯৭১। একেকটি দিন যেতে থাকে
আর দেশব্যাপী উত্তেজনা বাড়তে থাকে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের
সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আলোচনা চলতে থাকলেও এ কথা সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে
যে, এ আলোচনা মূলত বাঙালী জাতির সঙ্গে প্রহসন।
বাঙালীদের
আর একবার বোকা বানিয়ে তারা আলোচনার নামে শুধু কালক্ষেপণ করছে। একাত্তরের এই
দিন ঢাকার অদূরে জয়দেবপুরে পাক সেনারা বেশ ক'জন নিরস্ত্র বাঙালী সৈনিককে
গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বঙ্গবন্ধু।
ইয়াহিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আলোচনা চলার দিনগুলোতে পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী তাদের ঘাঁটিগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ গোলাবারম্নদ এবং সৈনিক সমাগম ঘটাতে থাকে। পাকিস্তানী স্বৈরাচার সরকার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আড়ালে এসব কার্যক্রম চালাতে থাকে।
দেশের অনেকে অবশ্য এদিন পর্যন্ত আলোচনা নিয়ে আশাবাদী ছিল। তারা ভেবেছিল আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে এটার সমাধান চলে আসবে। কিন্তু হঠাৎ ঘটনার মোড় নেয় অন্যদিকে। জয়দেবপুরে নিরীহ বাঙালী সৈনিকদের ওপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাক সেনারা। হত্যা করে বেশিকিছু বাঙালী সৈনিককে। এর ফলে পাকিস্তানী শাসকদের সঙ্গে আপোসের সব সম্ভাবনার পথ বন্ধ হয়ে যায়। বাঙালী এমন অতর্কিতে হামলায় প্রথমে হতভম্ব হয়ে পড়লেও পরে দেশজুড়েই সবাই আক্রোশে ফেটে পড়তে থাকে। এই ঘটনার মধ্য দিয়েই পাকিস্তানী বাহিনীর মনোভাব সম্পর্কে বাঙালীর সংশয়ের অবসান ঘটে।
জয়দেপুরে সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, "বাংলাদেশের মানুষ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। তার অর্থ এই নয় যে, তারা শক্তি প্রয়োগকে ভয় পায়। জনগণ যখন রক্ত দিতে তৈরি হয়, তখন তাদের দমন করতে পারে এমন শক্তি দুনিয়ায় নেই।"
জয়দেবপুরের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পাকিস্তানী শাসকরা জয়দেবপুরে দীর্ঘ ২৯ ঘণ্টার কার্ফু জারি করে রাখে। কার্ফু উঠিয়ে নেয়ার পর পরই জয়দেবপুরের বিক্ষুব্ধ জনতা আবার পথে নেমে আসে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাঙালী বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে শুরু করে। তারা প্রস্তুত হতে থাকে আসন্ন যুদ্ধের জন্য।
একাত্তরের ১৯ মার্চ ছিল অসহযোগ আন্দোলনের অষ্টাদশ দিন। প্রতিদিনের মতো সকল সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ছিল বন্ধ। সর্বত্র উড্ডীন ছিল কালো পতাকা। বঙ্গবন্ধু-ইয়াহিয়া খানের বৈঠক চলে দেড় ঘণ্টা। বৈঠক শেষে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বঙ্গবন্ধু জানান, 'আগামীকাল আবার বৈঠক হবে। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা আমাকে সাহায্য করবেন। আজ সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টারা বৈঠকে মিলিত হবেন।'
সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় প্রেসিডেন্ট ভবনে। আওয়ামী লীগের তরফে সৈয়দ নজরম্নল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও ড. কামাল হোসেন এবং সরকারের পৰে বিচারপতি এআর কর্নেলিয়াস, লে. জেনারেল পীরজাদা ও কর্নেল হাসান অংশ নেন। দু'ঘণ্টা স্থায়ী হয় আলোচনা। দু'দলের উপদেষ্টারা কি ফমর্ুলার ভিত্তিতে আলোচনা হবে অর্থাৎ টার্ম অব রেফারেন্স নির্ধারণ করেন।
চট্টগ্রামে মওলানা ভাসানী বলেন, শেখ মুজিবের হাতে ৰমতা অর্পণ ছাড়া পাকিসত্মানকে রৰা করা সম্ভব নয়। প্রখ্যাত শিল্পী কামরম্নল হাসানের পরিকল্পনা ও ডিজাইনের বাংলা স্টিকার- 'একেকটি বাংলা অৰর একেকটি বাঙালীর জীবন' প্রথম প্রকাশিত হয় একাত্তরের রক্তৰরা এই দিনে।
ইয়াহিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আলোচনা চলার দিনগুলোতে পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী তাদের ঘাঁটিগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ গোলাবারম্নদ এবং সৈনিক সমাগম ঘটাতে থাকে। পাকিস্তানী স্বৈরাচার সরকার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আড়ালে এসব কার্যক্রম চালাতে থাকে।
দেশের অনেকে অবশ্য এদিন পর্যন্ত আলোচনা নিয়ে আশাবাদী ছিল। তারা ভেবেছিল আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে এটার সমাধান চলে আসবে। কিন্তু হঠাৎ ঘটনার মোড় নেয় অন্যদিকে। জয়দেবপুরে নিরীহ বাঙালী সৈনিকদের ওপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাক সেনারা। হত্যা করে বেশিকিছু বাঙালী সৈনিককে। এর ফলে পাকিস্তানী শাসকদের সঙ্গে আপোসের সব সম্ভাবনার পথ বন্ধ হয়ে যায়। বাঙালী এমন অতর্কিতে হামলায় প্রথমে হতভম্ব হয়ে পড়লেও পরে দেশজুড়েই সবাই আক্রোশে ফেটে পড়তে থাকে। এই ঘটনার মধ্য দিয়েই পাকিস্তানী বাহিনীর মনোভাব সম্পর্কে বাঙালীর সংশয়ের অবসান ঘটে।
জয়দেপুরে সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, "বাংলাদেশের মানুষ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। তার অর্থ এই নয় যে, তারা শক্তি প্রয়োগকে ভয় পায়। জনগণ যখন রক্ত দিতে তৈরি হয়, তখন তাদের দমন করতে পারে এমন শক্তি দুনিয়ায় নেই।"
জয়দেবপুরের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পাকিস্তানী শাসকরা জয়দেবপুরে দীর্ঘ ২৯ ঘণ্টার কার্ফু জারি করে রাখে। কার্ফু উঠিয়ে নেয়ার পর পরই জয়দেবপুরের বিক্ষুব্ধ জনতা আবার পথে নেমে আসে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাঙালী বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে শুরু করে। তারা প্রস্তুত হতে থাকে আসন্ন যুদ্ধের জন্য।
একাত্তরের ১৯ মার্চ ছিল অসহযোগ আন্দোলনের অষ্টাদশ দিন। প্রতিদিনের মতো সকল সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ছিল বন্ধ। সর্বত্র উড্ডীন ছিল কালো পতাকা। বঙ্গবন্ধু-ইয়াহিয়া খানের বৈঠক চলে দেড় ঘণ্টা। বৈঠক শেষে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বঙ্গবন্ধু জানান, 'আগামীকাল আবার বৈঠক হবে। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা আমাকে সাহায্য করবেন। আজ সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টারা বৈঠকে মিলিত হবেন।'
সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় প্রেসিডেন্ট ভবনে। আওয়ামী লীগের তরফে সৈয়দ নজরম্নল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও ড. কামাল হোসেন এবং সরকারের পৰে বিচারপতি এআর কর্নেলিয়াস, লে. জেনারেল পীরজাদা ও কর্নেল হাসান অংশ নেন। দু'ঘণ্টা স্থায়ী হয় আলোচনা। দু'দলের উপদেষ্টারা কি ফমর্ুলার ভিত্তিতে আলোচনা হবে অর্থাৎ টার্ম অব রেফারেন্স নির্ধারণ করেন।
চট্টগ্রামে মওলানা ভাসানী বলেন, শেখ মুজিবের হাতে ৰমতা অর্পণ ছাড়া পাকিসত্মানকে রৰা করা সম্ভব নয়। প্রখ্যাত শিল্পী কামরম্নল হাসানের পরিকল্পনা ও ডিজাইনের বাংলা স্টিকার- 'একেকটি বাংলা অৰর একেকটি বাঙালীর জীবন' প্রথম প্রকাশিত হয় একাত্তরের রক্তৰরা এই দিনে।
No comments