আঞ্চলিক বৈষম্য কমাতে জেলা সরকার জরুরি
আঞ্চলিক বৈষম্য কমাতে জেলাভিত্তিক সরকার গঠনের ওপর জোর দিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ‘আমি প্রাদেশিক সরকারের সমর্থক নই। আঞ্চলিক বৈষম্য কমাতে প্রয়োজন জেলায় জেলায় সরকার। জেলাভিত্তিক সরকার করতে পারলে সচিবালয়ের ক্ষমতা সংকুচিত করা যাবে। এতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সুষম ও গতিশীল হবে।’
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন ও বাজেট’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে যেতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার ৪০ ধরনের কাজ করে থাকে। এর মধ্যে ১৭ থেকে ১৮টি কাজও যদি জেলা সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়া যায়, তা হলে বৈষম্য অনেকখানি কমিয়ে আনা যাবে। প্রধানমন্ত্রীর নিজেরও এ ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (এনবিডিএফ) উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক সাংসদ শাহরিয়ার আলম। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ এম আসাদুজ্জামান। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা সেমিনারে বক্তব্য দেন। সেমিনারে সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন সাংবাদিক মোল্লা আমজাদ।
এম আসাদুজ্জামান বলেন, রাজশাহী দেশের বৃহত্তম বিভাগ। এর মোট আয়তন ৩৪ হাজার ৫১৪ বর্গকিলোমিটার, যা দেশের মোট আয়তনের ২৩ শতাংশ। এখানকার জনসংখ্যার পরিমাণ মোট জনগোষ্ঠীর ২৪ শতাংশের মতো। অথচ নগরায়ণে পিছিয়ে থাকার দিক থেকে এ অঞ্চল দেশের মধ্যে দ্বিতীয়। এমনকি গ্রামীণ ভূমিহীনের সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অঞ্চলটি। আনুপাতিকভাবে এ অঞ্চলের বেশির ভাগ পরিবার কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। তাই এ অঞ্চলের অধিবাসীরা আয়ের দিক থেকে দরিদ্রতম অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সরকারের নীতি-সহায়তা ও বিনিয়োগ প্রয়োজন। এ জন্য তিনি উত্তরাঞ্চলের কয়লা উত্তোলনের ওপর জোর দেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, পরিবেশের কথা বলে অনেকে কয়লা উত্তোলনে বাধা দিচ্ছেন। কিন্তু ঢাকায় বিভিন্ন কোম্পানির বর্জ্য বুড়িগঙ্গার পানি বিষাক্ত করে তুলছে, সে ব্যাপারে তাদের কিছু বলতে দেখি না।
ভূমি প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সিলেটে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণের পরও এই খাতে অর্থ বরাদ্দের কোনো অভাব হয় না। অথচ উত্তরবঙ্গে উৎকৃষ্টমানের কয়লা থাকার পরও তা উত্তোলনের ব্যাপারে সরকারের তেমন কোনো বরাদ্দ নেই। কয়লা উত্তোলনের কথা এলেই কয়লানীতির কথা বলা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হয়নি। তিনি বলেন, ‘শুনেছি, কয়লানীতি ওয়েবসাইটে রয়েছে। এটা ওয়েবসাইটেই থাকবে, নাকি বেরুবে?’
একপর্যায়ে মোস্তাফিজুর রহমান তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ এবং বিদ্যুৎ, বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদকে নিয়ে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কোথাকার কোন আনু মুহাম্মদ না ফানু মুহাম্মদ এসে এলাকার লোকজনকে ১০০ বছরের ক্ষতিপূরণ দাবি করার উসকানি দিচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় জনগণ তাদের কথা না শুনে দৌড়ানি দিয়েছে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ফুলবাড়ী ও বড়পুকুরিয়ায় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনে সরকারের উচিত বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা।
সাবেক মন্ত্রী ও সাংসদ এ কে এম মাইদুল ইসলাম বলেন, কয়লা রপ্তানি করা হবে না—জনগণকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে। একই সঙ্গে খনির কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাদের আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী পুনর্বাসন করতে হবে।
পরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী জুনের আগে জাতীয় কয়লানীতি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত না রাখলে আরও বেশি সময়ও লাগতে পারে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সবাই চায় কয়লা উত্তোলন হোক। কিন্তু আজকেও যদি উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা হলেও পাঁচ বছরের আগে হবে না। সাত বছর লাগবে। মন্ত্রীর নিজের ধারণা, ১০ বছরও লেগে যেতে পারে। তাই কয়লানীতি দ্রুত প্রণয়নের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান, সাংসদ ফজলে রাব্বী, আকরাম চৌধুরী, মকবুল এলাহী, মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, ফজলে হোসেন বাদশা, ইস্রাফিল আলম, আবদুল মান্নান প্রমুখ।
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন ও বাজেট’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে যেতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার ৪০ ধরনের কাজ করে থাকে। এর মধ্যে ১৭ থেকে ১৮টি কাজও যদি জেলা সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়া যায়, তা হলে বৈষম্য অনেকখানি কমিয়ে আনা যাবে। প্রধানমন্ত্রীর নিজেরও এ ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (এনবিডিএফ) উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক সাংসদ শাহরিয়ার আলম। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ এম আসাদুজ্জামান। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা সেমিনারে বক্তব্য দেন। সেমিনারে সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন সাংবাদিক মোল্লা আমজাদ।
এম আসাদুজ্জামান বলেন, রাজশাহী দেশের বৃহত্তম বিভাগ। এর মোট আয়তন ৩৪ হাজার ৫১৪ বর্গকিলোমিটার, যা দেশের মোট আয়তনের ২৩ শতাংশ। এখানকার জনসংখ্যার পরিমাণ মোট জনগোষ্ঠীর ২৪ শতাংশের মতো। অথচ নগরায়ণে পিছিয়ে থাকার দিক থেকে এ অঞ্চল দেশের মধ্যে দ্বিতীয়। এমনকি গ্রামীণ ভূমিহীনের সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অঞ্চলটি। আনুপাতিকভাবে এ অঞ্চলের বেশির ভাগ পরিবার কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। তাই এ অঞ্চলের অধিবাসীরা আয়ের দিক থেকে দরিদ্রতম অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সরকারের নীতি-সহায়তা ও বিনিয়োগ প্রয়োজন। এ জন্য তিনি উত্তরাঞ্চলের কয়লা উত্তোলনের ওপর জোর দেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, পরিবেশের কথা বলে অনেকে কয়লা উত্তোলনে বাধা দিচ্ছেন। কিন্তু ঢাকায় বিভিন্ন কোম্পানির বর্জ্য বুড়িগঙ্গার পানি বিষাক্ত করে তুলছে, সে ব্যাপারে তাদের কিছু বলতে দেখি না।
ভূমি প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সিলেটে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণের পরও এই খাতে অর্থ বরাদ্দের কোনো অভাব হয় না। অথচ উত্তরবঙ্গে উৎকৃষ্টমানের কয়লা থাকার পরও তা উত্তোলনের ব্যাপারে সরকারের তেমন কোনো বরাদ্দ নেই। কয়লা উত্তোলনের কথা এলেই কয়লানীতির কথা বলা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হয়নি। তিনি বলেন, ‘শুনেছি, কয়লানীতি ওয়েবসাইটে রয়েছে। এটা ওয়েবসাইটেই থাকবে, নাকি বেরুবে?’
একপর্যায়ে মোস্তাফিজুর রহমান তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ এবং বিদ্যুৎ, বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদকে নিয়ে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কোথাকার কোন আনু মুহাম্মদ না ফানু মুহাম্মদ এসে এলাকার লোকজনকে ১০০ বছরের ক্ষতিপূরণ দাবি করার উসকানি দিচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় জনগণ তাদের কথা না শুনে দৌড়ানি দিয়েছে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ফুলবাড়ী ও বড়পুকুরিয়ায় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনে সরকারের উচিত বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা।
সাবেক মন্ত্রী ও সাংসদ এ কে এম মাইদুল ইসলাম বলেন, কয়লা রপ্তানি করা হবে না—জনগণকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে। একই সঙ্গে খনির কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাদের আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী পুনর্বাসন করতে হবে।
পরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী জুনের আগে জাতীয় কয়লানীতি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত না রাখলে আরও বেশি সময়ও লাগতে পারে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সবাই চায় কয়লা উত্তোলন হোক। কিন্তু আজকেও যদি উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা হলেও পাঁচ বছরের আগে হবে না। সাত বছর লাগবে। মন্ত্রীর নিজের ধারণা, ১০ বছরও লেগে যেতে পারে। তাই কয়লানীতি দ্রুত প্রণয়নের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান, সাংসদ ফজলে রাব্বী, আকরাম চৌধুরী, মকবুল এলাহী, মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, ফজলে হোসেন বাদশা, ইস্রাফিল আলম, আবদুল মান্নান প্রমুখ।
No comments