নিখোঁজ শ্রমিকদের ভাগ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা

নিউজিল্যান্ডের কয়লা খনিতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হতে থাকায় খনিতে তিনদিন ধরে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারকাজ এখনো শুরু করা যায়নি। কর্তৃপক্ষ আটকে পড়া ২৯ শ্রমিকের অবস্থান জানতে খনিতে রোবট পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।
খনিতে আটক শ্রমিকদের ভাগ্য নিয়ে তাঁদের আত্মীয়স্বজন ও সরকারের মধ্যে মিশ্র অনুভূতি ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জন কি বলেছেন, তাঁদের বেঁচে থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উদ্ধারকর্মীরা বলেছেন, খনিতে বিষাক্ত গ্যাসের উপস্থিতি এবং ভেতরে খাবার না থাকায় তাঁদের মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।
উদ্ধারকর্মীরা গতকাল সোমবারও খনিতে নামতে না পারায় শ্রমিকদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, উদ্ধারকাজে বিলম্ব হওয়ায় তাঁদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করার সম্ভাবনা ক্রমশ ফিকে হয়ে আসছে।
সাউথ আইল্যান্ডের গ্রে মাউথ এলাকার পাইক রিভার কয়লাখনিতে গত শুক্রবার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ২৯ জন শ্রমিক আটকা পড়েন। উদ্ধারকর্মীরা বলেছেন, খনিমুখ থেকে এখনো বিষাক্ত গ্যাসের নিঃসরণ হচ্ছে। এ ছাড়া সেখানে গর্ত খুঁড়ে নামতে গেলে আবারও বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন। সে কারণে গতকালও তাঁরা খনিতে নামতে পারেননি। তবে তাঁরা ১৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের একটি গর্ত খোঁড়া শুরু করেছেন। ওই গর্ত দিয়ে দূর নিয়ন্ত্রিত একটি রোবট ও ক্যামেরা পাঠিয়ে শ্রমিকদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়া ভেতরের গ্যাসের মাত্রা বোঝারও চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী জন কি বলেছেন, খনির নিচে অক্সিজেন রয়েছে এবং শ্রমিকেরা কোনো অক্সিজেনপূর্ণ ফোকর খুঁজে নিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারেন। এ কারণে তাঁদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
গ্রে মাউথে অবস্থানরত বিবিসির সাংবাদিক ফিল মার্কার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ কথা স্বজনদের মনে আশার সঞ্চার করবে। তবে খোদ উদ্ধারকর্মীদের মনেই শ্রমিকদের বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
উদ্ধারকর্মীদের প্রধান সাপ্ট গ্যারি নলেস বলেছেন, হতভাগ্য শ্রমিকেরা মারা যেতে পারেন—এমন আশঙ্কা মাথায় রেখে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েই তাঁরা সর্বোচ্চ চেষ্টায় উদ্ধারের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, খনিতে নামার সময় শ্রমিকেরা যে অক্সিজেন মাস্ক নিয়েছিলেন, তা দিয়ে কয়েক দিন বেঁচে থাকা সম্ভব। তবে বিষাক্ত গ্যাসের উপস্থিতি সেই সম্ভাবনাকে কমিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া খাওয়ার পানি ছাড়া তাঁদের সঙ্গে কোনো খাবার ছিল না। এ কারণে যতই সময় পার হচ্ছে, ততই তাঁদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের আশা কমে যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.