আমরা খাবার থেকে নিয়মিত বিষ গ্রহণ করছি by আমির খান
আমার শাকসবজি বা খাদ্যদ্রব্য কিনতে বাজারে যাওয়া হয় না। পেশাগত কারণেই আমার এ বিলাসিতার সুযোগ নেই। কিন্তু আমার মনে আছে, যখন খুব ছোট ছিলাম তখন প্রায়ই মায়ের সঙ্গে, খালার সঙ্গে ফলমূল কিনতে, শাকসবজি কিনতে বাজারে যেতাম। সেই বাজারে যেতে আমার খুবই একঘেয়ে লাগত।
বিভিন্ন দোকানে শাকসবজি বা ফলমূল বাছতে বাছতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগত। এটা না ওটা, ওটা না এটা করে বেছে বেছে মা-খালারা সবচেয়ে ভালো ফলটি নিতে চাইতেন। অথচ সে সময় আমার সব বন্ধু অপেক্ষা করছে, আমরা আনন্দ করে ক্রিকেট খেলব তাই। আজ যখন আমি মুম্বাইয়ের খার মার্কেটের পাশ দিয়ে যাই অথবা খার টেলিফোন এঙ্চেঞ্জের রাস্তা ধরে যাই, তখন দেখতে পাই রাস্তার দুই ধারে ফল, শাকসবজি বিক্রেতারা বসে আছে। আমি ক্রেতা মহিলাদের দিকে তাকিয়ে দেখি। তাঁরাও ঠিক আমার মা এবং খালার মতো একই কাজ করছেন। আমি সেসব দুপুর ও সন্ধ্যার স্মৃতির মধ্যে ডুবে যাই, যখন ব্যাগভর্তি এসব বাজার নিয়ে তাঁদের পিছু পিছু ঘরে ফিরতাম। এখন আমাদের ঘরের লোকেরা কতটা সময় ব্যয় করছে আমাদের তাজা এবং ভালো খাবারের জন্য? আমরা এখন জানি না যে আমাদের এই শাকসবজি কতটা স্বাস্থ্যসম্মত। হয়তো এগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রার বিষ।
আমরা ফল তাজা আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করতে পারি, গায়ের ওপর তা চেপে ধরে দাগ আছে কিনা সেটা দেখে এবং ঘ্রাণ শুঁকে। কিন্তু কী করে বুঝব যে এর মধ্যে কতটা কীটনাশক রয়েছে?
আমরা খাবার কেন গ্রহণ করি? সুস্পষ্টভাবেই বেঁচে থাকার জন্য আমাদের শরীরে পুষ্টির প্রয়োজন হয়। পুষ্টিকর খাবার আমাদের মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আমাদের রোগ প্রতিরোধে এবং ভালো থাকতে সাহায্য করে। কিন্তু যদি আমরা অস্বাভাবিক পরিমাণ কীটনাশক খাবারের মধ্য দিয়ে গ্রহণ করি, তার অর্থ দাঁড়ায়- আমরা পুষ্টির সঙ্গে বিষও গ্রহণ করছি এবং সেটাই আমাদের খাবার গ্রহণের কারণটিকে ধ্বংস করে দিতে যথেষ্ট।
ষাটের দশকে ভারতে প্রথম গ্রিন রেভল্যুশন বা সবুজ বিপ্লব শুরু হয়। তখনকার নীতিনির্ধারকরা অনুধাবন করেন যে জনসংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই জনসংখ্যাকে খাবার সরবরাহের জন্য আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এই ফল লাভের জন্যই প্রথম প্রকৃতি বা কৃষিকাজের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়। এই হস্তক্ষেপের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল সার ও কীটনাশকের ব্যবহার। কীটপতঙ্গ আমাদের কৃষি উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পোকামাকড় ধ্বংস করতে আমরা যা ব্যবহার করছি, তাকেই বলে কীটনাশক। কীটনাশক হলো মূলত বিষ- যা পোকামাকড়ের প্রাণ নাশ করে। দৃশ্যত যে কীটনাশক ছিটানো হয়, তার শতকরা মাত্র এক ভাগ পোকামাকড়ের গায়ে লাগে এবং পোকামাকড় ধ্বংস করে। বাকি ৯৯ ভাগ শস্যের ওপর পড়ে এবং মাটিতে ও পানিতে মিশে একাকার হয়ে যায়। এভাবেই এগুলো আমাদের ফলমূলের মধ্যে প্রবেশ করে।
লেখক : ভারতের চলচ্চিত্র অভিনেতা
ভারতীয় পত্রিকা আউটলুক থেকে ঈষৎ সংক্ষেপিত
ভাষান্তর : মহসিন হাবিব
আমরা ফল তাজা আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করতে পারি, গায়ের ওপর তা চেপে ধরে দাগ আছে কিনা সেটা দেখে এবং ঘ্রাণ শুঁকে। কিন্তু কী করে বুঝব যে এর মধ্যে কতটা কীটনাশক রয়েছে?
আমরা খাবার কেন গ্রহণ করি? সুস্পষ্টভাবেই বেঁচে থাকার জন্য আমাদের শরীরে পুষ্টির প্রয়োজন হয়। পুষ্টিকর খাবার আমাদের মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আমাদের রোগ প্রতিরোধে এবং ভালো থাকতে সাহায্য করে। কিন্তু যদি আমরা অস্বাভাবিক পরিমাণ কীটনাশক খাবারের মধ্য দিয়ে গ্রহণ করি, তার অর্থ দাঁড়ায়- আমরা পুষ্টির সঙ্গে বিষও গ্রহণ করছি এবং সেটাই আমাদের খাবার গ্রহণের কারণটিকে ধ্বংস করে দিতে যথেষ্ট।
ষাটের দশকে ভারতে প্রথম গ্রিন রেভল্যুশন বা সবুজ বিপ্লব শুরু হয়। তখনকার নীতিনির্ধারকরা অনুধাবন করেন যে জনসংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই জনসংখ্যাকে খাবার সরবরাহের জন্য আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এই ফল লাভের জন্যই প্রথম প্রকৃতি বা কৃষিকাজের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়। এই হস্তক্ষেপের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল সার ও কীটনাশকের ব্যবহার। কীটপতঙ্গ আমাদের কৃষি উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পোকামাকড় ধ্বংস করতে আমরা যা ব্যবহার করছি, তাকেই বলে কীটনাশক। কীটনাশক হলো মূলত বিষ- যা পোকামাকড়ের প্রাণ নাশ করে। দৃশ্যত যে কীটনাশক ছিটানো হয়, তার শতকরা মাত্র এক ভাগ পোকামাকড়ের গায়ে লাগে এবং পোকামাকড় ধ্বংস করে। বাকি ৯৯ ভাগ শস্যের ওপর পড়ে এবং মাটিতে ও পানিতে মিশে একাকার হয়ে যায়। এভাবেই এগুলো আমাদের ফলমূলের মধ্যে প্রবেশ করে।
লেখক : ভারতের চলচ্চিত্র অভিনেতা
ভারতীয় পত্রিকা আউটলুক থেকে ঈষৎ সংক্ষেপিত
ভাষান্তর : মহসিন হাবিব
No comments