মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড সোয়া কোটি টাকা
কিশোরগঞ্জ
শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত পাগলা মসজিদ। এই মসজিদের দান বাক্সে
সোয়া এক কোটির বেশি টাকা, স্বর্ণালঙ্কার এবং বিদেশী মুদ্রা দান করেছে
মানুষ। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ আজিমুদ্দিন বিশ্বাস বলেন এই মসজিদ
অনেক পুরনো। এবং মানুষ বিশ্বাস করেন, এখানে ইবাদত বন্দেগী করলে সওয়াব
পাওয়া যায়। এছাড়া রোগ-শোক নিরাময়ের জন্য প্রতিনিয়ত এখানে মানুষ দান
খয়রাত করতে থাকে। এই মসজিদে মোট পাঁচটি দান বাক্স রয়েছে। প্রতি চার মাস
পর পর এই দান বাক্স খোলা হয়। এবার চার মাস পর শনিবার এই দান বাক্স বা
সিন্দুকগুলো খুললে দেখা যায় আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে টাকা এবং
স্বর্ণালঙ্কারের পরিমাণ। আগের রেকর্ড ছাপিয়ে টাকা পাওয়া গেছে এক কোটি ২৭
লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১টাকা। এছাড়া রয়েছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক
মুদ্রা। এই বিপুল পরিমাণের অর্থ কীভাবে খরচ করা হয়? এই মসজিদের কমিটির
সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ আজিমুদ্দিন বিশ্বাস। তিনি বলেন, মূলত এই অর্থ
মসজিদের বিভিন্ন কাজের যে খরচ সেখানে ব্যয় করা হয়। এছাড়া অন্যান্য
মসজিদে পাঠানো হয়, এতিমখানা গুলোতে পাঠানো হয়। স্থানীয় সাংবাদিক
তাফসিলুল আজিজ বলেন, পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুললে প্রতিবারই কোটি টাকার
ওপরে পাওয়া যায়। প্রতিদিন জেলার বাসিন্দা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য
মানুষ তাদের মনের আশা পূরণের জন্য মসজিদটির দানবাক্সগুলোতে টাকা-পয়সা
ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান
করেন। আজিমুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, এই বিপুল পরিমাণ টাকা বাংলাদেশের মধ্যে
শুধু মাত্র এই মসজিদের দান বাক্স থেকেই সংগ্রহ করা হয়। তিনি আরো বলেন, এই
অর্থ গণনার সময় মসজিদ কমিটির লোক ছাড়াও টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির
দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের জেষ্ঠ্য নির্বাহী হাকিম আবু তাহের মোঃ সাঈদ
উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ব্যাঙ্কের কর্মকর্তারা ছিলেন বলে জানিয়েছেন জেলা
প্রশাসক। বাংলাদেশের অনেক মসজিদ এবং মাজারে এমন দানবাক্স দেখা যায়
যেটার অর্থ ব্যবস্থাপনা এবং বন্টন নিয়ে পরিস্কার ধারণা পাওয়া যায় না। -
বিবিসি ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ মুহাম্মদ
কাইসার হামিদ , কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের দুই
পাশে লাগানো গাছ কেটে তা বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সড়কের কুলিয়ারচর
উপজেলাস্থ দাড়িয়াকান্দি বাস্ট্যান্ড থেকে আগরপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত
রাস্তার দু’পাশে গাছগুলো লাগানো ছিল। সামাজিক বনায়নের আওতায় লাগানো মেয়াদ
উত্তীর্ণ মরা গাছ উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে স্থানীয় একদল প্রভাবশালী
ব্যক্তি অবৈধ ভাবে কেটে তা বিক্রির মাধ্যমে লুটপাট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৪ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের
কুলিয়ারচর পৌরসভাস্থ আলীআকবরী নামক স্থানে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়
প্রভাবশালী অহিদ মিয়ার (৫৫) নেতৃত্বে শামীম, ইসরাইল, শাহাবুদ্দীন
ভূইয়া,নজরুল ও আসাদ মিয়ার সহযোগীতায় রাস্তার পাশের প্রায় অর্ধশত গাছ কাটা
হয়েছে। স্থানীয়রা জানান,তারা দীর্ঘদিন যাবত এ রাস্তা থেকে মরা গাছ অবৈধ
ভাবে কেটে নিয়ে পাশের দাড়িয়াকান্দি ও বাজরা তারাকান্দি বাস্স্ট্যান্ডের
বিভিন্ন সো’মিলে নিয়ে বিক্রি করছে। সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা করে টেন্ডার
ছাড়া অবৈধভাবে সরকারি গাছ কেটে লুটপাট করার বিষয়ে জানতে চাইলে অহিদ মিয়া
বলেন, তারা উপকারভোগী হিসেবে কুলিয়ারচর উপজেলা বন বিভাগের মালি মুছা মিয়ার
নির্দেশে সরকারী গাছ কেটে বিক্রয় করছেন। গাছ কাটার নির্দেশ দেয়ার সত্যতা
স্বীকার করে উপজেলা বন বিভাগের মালি মুছা মিয়া বলেন, গত ৬ নভেম্বর উপজেলা
পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার
ড. উর্মী বিনতে সালাম ঝড়ে পরা মরা গাছ কাটার নির্দেশ দেন। উক্ত নির্দেশের
ভিত্তিতে অহিদ মিয়া গংদের গাছ কাটার নির্দেশ দিয়েছি। মুছা মিয়াকে গাছ কাটার
নির্দেশ দেয়ার সত্যতা স্বীকার করে কুলিয়ারচর উপজেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা
(অতিরিক্ত দায়িত্বে ) মোঃ বজলুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত আলাপ
করা হবে। সড়ক উপ-বিভাগ, ভৈরব-১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও ) মোঃ রুহুল
আমীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত ৬ নভেম্বর উপজেলা পরিবেশ ও বন
উন্নয়ন কমিটির সভায় বলেছিলাম জনস্বার্থে টেন্ডারের মাধ্যমে মরা গাছ কাটা
হলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কোনো আপত্তি নেই। তিনি বলেন সরকারী নিয়ম অমান্য করে
কেউ যদি রাস্তার সরকারি গাছ কেটে লুটপাট করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে
আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. উর্মি বিনতে সালামের
সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গাছ কাটার নির্দেশ দেয়ার সত্যতা স্বীকার করে
বলেন, বন বিভাগ ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মিটিং করে
সিদ্ধান্ত হয়েছে রোড সম্প্রসারণ করার জন্য গাছ কাটা হবে। তবে গাছ কেটে
বিক্রয় করার কথা নয়। এ বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
No comments