সিরিয়া সরকারের প্রতি আরব লিগ : বিরোধী পক্ষের সঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে আলোচনায় বসুন

বিরোধীপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য সিরীয় সরকারকে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে আরব লিগ। কায়রোয় অনুষ্ঠিত আরব লিগের এক জরুরি বৈঠক থেকে এ আহ্বান জানানো হয় বলে বিবিসি জানায়। বৈঠকে আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা সংগঠন থেকে সিরিয়ার সদস্যপদ বাতিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠক শেষে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হামাদ আল-তানি জানান, ১৫ দিনের মধ্যে আরব লিগের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংলাপে বসার জন্য আরব লিগ সিরিয়ার সরকার ও বিরোধীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জরুরি বৈঠকের আগে সিরিয়ার কূটনীতিকদের সঙ্গে আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা বৈঠক করেন।


বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি আরব লিগ থেকে সিরিয়ার সদস্যপদ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে। তবে এর জন্য সংগঠনটির দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন। কাতারের প্রধানমন্ত্রী হামাদ বিন জাসিম আলে-সানি’র সভাপতিত্বে রোববারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সিরিয়ার অনুপস্থিতিতে ওই বৈঠকে আরব লিগের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা দেশটির চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠক শেষে কাতারের প্রধানমন্ত্রী সিরিয়ার সদস্যপদ স্থগিত করার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, সিরিয়ার সরকার ও বিরোধী পক্ষকে কায়রোর আরব লিগের সদর দফতরে সংলাপে বসার আনুষ্ঠানিক আহ্বান জানানো হবে।
এর আগে পশ্চিমা সূত্রগুলো আভাস দিয়েছিল, রোববার বৈঠকে আরব লিগে সিরিয়ার সদস্য পদ স্থগিত করা হতে পারে। সৌদি আরব ও অন্যান্য দেশ এরই মধ্যেই সিরিয়া থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় এখনও তুমুল লড়াই চলছে। নিরাপত্তা বাহিনী ব্যারিকেড গড়ে তুলে অভিযান চালাচ্ছে। চলছে ধড়-পাকড়। চলতি বছরের মার্চে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল- আসাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর সরকারি দমনাভিযানে ও সংঘর্ষে অন্ততপক্ষে ৩ হাজার মানুষ মারা গেছে, যার অধিকাংশই নিরস্ত্র আন্দোলনকারী।
দমনাভিযানের বিষয়ে সিরিয়াকে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে। এদিকে বিবিসি’র কায়রো সংবাদদাতা জানান, সিরিয়া সঙ্কট কিভাবে মোকাবিলা করা হবে তা নিয়ে এখনও আরব দেশগুলোর মধ্যে স্পষ্ট মত পার্থক্য রয়েছে। এদিকে আরব লিগে সিরিয়ার রাষ্ট্রদূত ইউসুফ আহমেদ অভিযোগ করেন, বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলের কাছ থেকে অস্ত্র পাচ্ছে। তিনি একই সঙ্গে বলেন, সিরিয়ায় বিরোধী পক্ষ আরব দেশগুলোর কাছ থেকে সব প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছে। সিরিয়া দাবি করে আসছে, বাইরে থেকে বিরোধী পক্ষের বিক্ষোভ আন্দোলনকে উস্কে দেয়া হচ্ছে। বিরোধীরা অবশ্য এ দাবি সব সময় অস্বীকার করে আসছে। একই সঙ্গে সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রেসিডেন্টের সমর্থনেও হাজার হাজার লোকের সমাবেশ হচ্ছে। এদিকে সিরিয়ার মানবাধিকার নেটওয়ার্কের ইলিয়াস হেলিয়ানি অভিযোগ করেন, আমেরিকানরা দুর্বল চিত্তের লোকদের কাজে লাগিয়ে গোষ্ঠীগত সংঘর্ষ বাধানোর চেষ্টা করছে। এর লক্ষ্য হল ইসরাইলকে সাহায্য করা ও সিরিয়কে দুর্বল করা। আমাদের কাছে এ ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

No comments

Powered by Blogger.