আবার সিন্ডিকেট সক্রিয়- খাদ্যমূল্যকে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে হলে গোটা মূল্য পরিস্থিতিকেই ঢেলে সাজাতে হবে
অসাধু খাদ্যব্যবসায়ীরা আবার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে। এর ফলে সবচেয়ে অসুবিধায় পড়েছে সীমিত আয়ের মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষ। গত কয়েক বছর ধরে অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাছাড়া খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার নিয়ম বা যুক্তি থাকতে হবে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কোন নিয়ম মানছে না। তা না হলে পামওয়েলের দাম প্রতিলিটার ১০ টাকা বাড়বে কেন? মিনিকেট চালের দাম প্রতিকেজি ৫ টাকা বেড়ে গেছে। সরকারের পণ্যমূল্য মনিটরিং টিম খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এখন যা অবস্থা হয়েছে, তাতে খাদ্যপণ্যের দাম মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে। কারণ যে হারে খাদ্যের দাম বেড়েছে, সেই হারে উপার্জন বাড়েনি। মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট যথেষ্ট অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়েছিল।খাদ্যমূল্যকে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে হলে গোটা মূল্য পরিস্থিতিকেই ঢেলে সাজাতে হবে। উৎপাদক ও আমদানিকারকরা যাতে লোকসান না দেয় সে বিষয়েও সচেষ্ট থাকা দরকার। সেই সঙ্গে জনগণ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাও দেখতে হবে। অর্থাৎ বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি ন্যায্য বিবেচনাবোধ সবাই প্রত্যাশা করে। কিন্তু এখন বাজারে এমন নৈরাজ্য চলছে যে, বাজার তদারকির জন্য কোন দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ আছে বলে মনে হয় না। তা না হলে বাজারে অনেক নিত্যপণ্যের সরবরাহের ঘাটতি নেই; তবে দাম এমন লাফ দিয়ে বাড়ছে কেন? অসৎ ও সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট আর কি সেই সুযোগ নিতে চায়?
আলুর উৎপাদন এবার খারাপ হয়নি; বাজারে পর্যাপ্ত আলুর সরবরাহ। এ সময় প্রতিকেজি আলুর দাম তিরিশ টাকা হয় কিভাবে? বাজারে ডালের দাম এমনিতে বেশি; এর পরও বেড়ে চলেছে ডালের দাম। তাহলে মানুষ খাবে কি?
সংশ্লিষ্ট বিভাগ হয়ত মনে করে, খাদ্যপণ্যের দামের ওঠা-নামা স্বাভাবিক নিয়মে হচ্ছে। পরিস্থিতি কিন্তু তা নয়। বিষয়টি মোটেই উপেক্ষা করা উচিত হবে না। কারণ স্বাভাবিক নিয়মে বাড়লে প্রতিকেজি চালের দাম এক টাকা বা দেড় টাকা বাড়তে পারে; তা এক লাফে পাঁচ টাকা বাড়া মোটেই স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এই অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট দেশ ও জাতির শত্রু; এদের অন্য কোন পরিচয় নেই। সরকার জনগণের উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সুতরাং অসাধু ব্যবসায়ী, মিলমালিক, চাতালমালিক ও আড়তদারদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী।
No comments