মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি ১৯ ফেব্রুয়ারি

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগের বিষয়ে শুনানির দিন আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গতকাল রোববার এ আদেশ দেন।


কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল গতকাল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, মামলার নথিপত্র দেরিতে পাওয়ায় আইনজীবীরা শুনানির জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেননি। এ ছাড়া তাঁরা কারাগারে গিয়ে কাদের মোল্লার সঙ্গে মামলার বিষয়ে আলোচনা করতে পারেননি। এ জন্য তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালের কাছে সময়ের আরজি জানান।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ আলী এর বিরোধিতা করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগের বিষয়ে শুনানির দিন পুনর্নির্ধারণ করে আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ এনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা জানান, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কাদের মোল্লা মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে ‘জল্লাদ’ নামে পরিচিত ছিলেন। মিরপুরের আলোকদী গ্রামে ৩৪৪ জনকে গণহত্যার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগও আনা হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন।
সাঈদীর বিরুদ্ধে চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ: জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। তাঁরা হলেন—মো. রবিউল আনাম খান, এস এম আমিরুল ইসলাম, ফাতেমা বেগম ও মো. নেসার।
এই চারজনই জব্দ তালিকার সাক্ষী। তাঁদের মধ্যে প্রথমে রাষ্ট্রপক্ষের ১৭তম সাক্ষী রবিউলের অসমাপ্ত জেরা শেষ হয়। জেরায় আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জব্দ তালিকায় যেসব পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোর বস্তুনিষ্ঠতা সম্পর্কে তাঁর ধারণা নেই। তিনি প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) ক্যাটালগার। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন আসামির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদন জব্দের জন্য পিআইবিতে যান। এসব পত্রিকার মূল কপি তাঁর (রবিউল) জিম্মায় রয়েছে।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের ১৮তম সাক্ষী পিআইবির বুক সর্টার এস এম আমিরুল ইসলামকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে তাঁকে জেরা করেনি আসামিপক্ষ। তাঁর পর রাষ্ট্রপক্ষের ১৯তম সাক্ষী বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের গাইড কাম কম্পিউটার অপারেটর ফাতেমা বেগম সাক্ষ্যে বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা তাঁর কাছ থেকে একাত্তরের সাতই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অডিও ক্যাসেট ‘বজ্রকণ্ঠ’, ভাষণের লিখিতরূপ এবং ছবির অ্যালবাম ‘জাতির জনক’ জব্দ করেন। আসামিপক্ষ তাঁকেও জেরা করেনি। ২০তম সাক্ষী বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের গাইড নেসারকেও জেরা করেনি আসামিপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষের আর কোনো সাক্ষী উপস্থিত না থাকায় দুপুর সোয়া একটার দিকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.