পুরান ঢাকায় নিজের লোকের গুলিতে ছিনতাইকারীর মৃত্যু

পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে গতকাল রোববার ছিনতাইয়ের সময় দলের লোকের গুলিতে এক ছিনতাইকারী মারা গেছেন। এ ঘটনায় দুজন দোকানকর্মীও গুলিবিদ্ধ হন। নিহত ছিনতাইকারীর নাম মো. বাবুল (৩২)। গুলিবিদ্ধ দুই দোকানকর্মী হলেন—শামসু মিয়া (৪৮) ও মো. শহীদ (৩৫)। তাঁরা দুজন মুসলিম স্টোর নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী।


প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা, তথ্য ফাঁস হওয়া ঠেকাতে ছিনতাইকারী দলের লোকেরাই তাদের সঙ্গীকে গুলি করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকাটির মুসলিম স্টোরের তিন কর্মচারী ফরিদ, শামসু মিয়া ও শহীদ মোস্তাকিম সুপার মার্কেটের দোতলার যমুনা ব্যাংকে টাকা তুলতে যান। টাকা নিয়ে নিচতলায় নামতেই সিঁড়ির মুখে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন তাঁরা। চার-পাঁচজন তরুণ আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। শামসু ও শহীদ তখন ছিনতাইকারী বাবুলকে জাপটে ধরে চিৎকার শুরু করেন। ব্যস্ত রাস্তায় আশপাশের পথচারী ও ব্যবসায়ীরা চিৎকার শুনে জড়ো হতে থাকলে ছিনতাইকারীরা কয়েকটি গুলি করে। বাবুল ও তাঁকে জাপটে ধরে থাকা দুজন গুলিবিদ্ধ হন। শামসুর পায়ের পাতায়, শহীদের পায়ে এবং বাবুলের কোমরে গুলি লাগে। ব্যবসায়ীরা এ সময় মার্কেটের একমুখের কলাপসিবল গেট লাগিয়ে দিলেও ছিনতাইকারীরা অন্য পাশের গেট দিয়ে পালিয়ে যায়।
গুলিবিদ্ধ তিনজনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বেলা দুইটার দিকে বাবুলের মৃত্যু হয়।
মুসলিম স্টোরের কর্মচারী মো. গিয়াসউদ্দীন জানান, ছিনতাইকারীরা টাকার ব্যাগটি নিতে পারেনি। জনতার প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যায়। এক ব্যবসায়ী টাকার ব্যাগটি উদ্ধার করে মালিককে ফিরিয়ে দেন।
পুলিশের চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী নিজের লোকের গুলিতে বাবুলের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পুলিশ দলটিকে শনাক্ত করতে পেরেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। পুলিশের দুটি দল তাদের ধরতে কাজ করছে। এ ঘটনায় মুসলিম স্টোরের একজন কর্মচারী বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
ঘটনাস্থলের চারপাশেই দোকান। গলিগুলো এত সরু যে কোনো গাড়ি চলে না। এখানে ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাই অবাক হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা এ প্রতিবেদককে বলেন, এখানে প্রায় ২৫ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিদিন এখানকার ব্যাংকগুলোতে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়। এ রকম ঘটনা ঘটলে ব্যবসায়ীরা টাকা বহন করতে আতঙ্কে থাকবেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.