শক্তিশালী হয়ে উঠছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক
বাংলাদেশের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক নতুন করে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ইনস্টিটিউট ফর পলিসি, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনির খসরু ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। ১ আগস্ট টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত ছোট সাক্ষাৎকারটি কালের কণ্ঠের পাঠকদের জন্য ভাষান্তর করেছেন মহসীন হাবিব আজকের বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করছেন?
দুর্ভাগ্যবশত উপমহাদেশের ইতিহাস হলো অবিশ্বাস এবং সন্দেহের ইতিহাস। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় নৈতিক, রাজনৈতিক এবং সব রকম লজিস্টিক সাহায্য-সমর্থন দিয়ে ভারত বিশ্বস্ততা অর্জন করেছিল। কিন্তু বেশ কিছু বছর ধরে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। ১৯৭১ সালে আমরা এমন সম্পর্কের কথা কল্পনা করিনি। বাস্তবে আমরা দূরে সরে গেছি। কিন্তু আমি এখনো বিশ্বাস করি, আমাদের দুই জাতির ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ সম্পর্ক শক্তিশালী করতে কী করতে হবে?
আপনি যদি বড় এবং ছোট জাতির সম্পর্কগুলোর দিকে দেখেন, বেশির ভাগ সময় দেখবেন, বড় জাতিগুলো নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকে এবং উদারতা কম দেখায়। ১৯৭১ সালে ভারতের যে উদারতা ছিল সে অনুসারে আমরা চেয়েছিলাম, ভারত অনেক ইস্যুতে সহনশীলতা বেশি দেখাবে। যেমন আপনি গঙ্গার পানির কথা ধরুন। ভারত বেশির ভাগ অভিন্ন নদীর উৎসের অবস্থানে রয়েছে। তিস্তা নদীর বেলায় কী ঘটছে আপনি দেখুন। বাংলাদেশের দুই কোটি মানুষ এ নদীর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যেখানে ভারতের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাত্র ৮০ লাখ মানুষ। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে ভারত পাচ্ছে ৩২ হাজার কিউসেক পানি আর বাংলাদেশ পাচ্ছে মাত্র পাঁচ হাজার কিউসেক পানি। অনানুপাতিক হারে বাংলাদেশের ভাগটা অত্যন্ত কম। এখন আমরা এ কথা বলছি না, বাংলাদেশের লাভের জন্য ভারত তার নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত নিক। কিন্তু ভারত আরো একটু সহানুভূতিশীল হতে পারে বাংলাদেশের বেলায়। আমরা এ নিয়ে বারবার আলোচনা করতে পারি। কিন্তু সম্পর্ক শক্তিশালী করার জন্য খুব ছোট এবং তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা প্রয়োজন।
আমরা কিভাবে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারি?
আমাদের সম্পর্ক প্রত্যাশা না পূরণ হওয়ার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ভারতের বাংলাদেশে রপ্তানির টোটাল ভলিউম হলো প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির পরিমাণ ২২৫ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। এটি একটি বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি। বাংলাদেশের তুলনায় ভারত বিশাল বড় শিল্পশক্তি। আমরা অবশ্যই আনন্দিত যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি এতটা ভালো করছে এবং ফুলে-ফেঁপে উঠছে। ভারতের যে ৪৮০টি রপ্তানি পণ্য বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির ক্ষেত্রে নেতিবাচক তালিকা রাখা হয়েছে তা অন্যায়। যেখানে দশ গুণ বেশি বাণিজ্য সুবিধা রয়েছে, সেখানে কেন ভারত এই বিপুল পরিমাণ আইটেম নেতিবাচক তালিকায় রেখেছে? গত এপ্রিলে যখন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেন, তখন তিনি মাত্র ৬০ থেকে ৬৫টি আইটেম নেগেটিভ তালিকা থেকে তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সুতরাং ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উন্নয়নে এবং বাণিজ্যে আস্থা আনার জন্য আরো কিছু করার আছে।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে আপনার প্রত্যাশাগুলো কেমন?
সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ ঢাকা সফরে এসেছিলেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর জন্য মডেল হিসেবে কাজ করবে। আমরা খুবই আনন্দিত যে মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরে আসছেন। কিন্তু আমি এখনো এ কথা বলব, ভারত অনেক বড় দেশ, পানিবণ্টন এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে ভারতকে আরেকটু উদার হতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেন ভারতের বাংলাদেশের সঙ্গে প্রস্তুত পোশাক কোটা প্রয়োজন। এটা আপনারা সহজভাবেই বাইরে থেকে করতে পারেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের সব ব্যাপারে, ভারতের সঙ্গে সব চুক্তির ব্যাপারে খুঁতখুঁত করলে চলবে না। এ ধরনের আচরণ কোনো ভালো ফল বয়ে আনে না। ট্রানজিটের ব্যাপারেই হোক আর পানিবণ্টনের ব্যাপারেই হোক, দুই দেশের স্বার্থেই তা স্বচ্ছ ও পেশাদার মনোভাবের মধ্য দিয়ে করতে হবে।
এ সম্পর্ক শক্তিশালী করতে কী করতে হবে?
আপনি যদি বড় এবং ছোট জাতির সম্পর্কগুলোর দিকে দেখেন, বেশির ভাগ সময় দেখবেন, বড় জাতিগুলো নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকে এবং উদারতা কম দেখায়। ১৯৭১ সালে ভারতের যে উদারতা ছিল সে অনুসারে আমরা চেয়েছিলাম, ভারত অনেক ইস্যুতে সহনশীলতা বেশি দেখাবে। যেমন আপনি গঙ্গার পানির কথা ধরুন। ভারত বেশির ভাগ অভিন্ন নদীর উৎসের অবস্থানে রয়েছে। তিস্তা নদীর বেলায় কী ঘটছে আপনি দেখুন। বাংলাদেশের দুই কোটি মানুষ এ নদীর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যেখানে ভারতের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাত্র ৮০ লাখ মানুষ। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে ভারত পাচ্ছে ৩২ হাজার কিউসেক পানি আর বাংলাদেশ পাচ্ছে মাত্র পাঁচ হাজার কিউসেক পানি। অনানুপাতিক হারে বাংলাদেশের ভাগটা অত্যন্ত কম। এখন আমরা এ কথা বলছি না, বাংলাদেশের লাভের জন্য ভারত তার নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত নিক। কিন্তু ভারত আরো একটু সহানুভূতিশীল হতে পারে বাংলাদেশের বেলায়। আমরা এ নিয়ে বারবার আলোচনা করতে পারি। কিন্তু সম্পর্ক শক্তিশালী করার জন্য খুব ছোট এবং তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা প্রয়োজন।
আমরা কিভাবে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারি?
আমাদের সম্পর্ক প্রত্যাশা না পূরণ হওয়ার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ভারতের বাংলাদেশে রপ্তানির টোটাল ভলিউম হলো প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির পরিমাণ ২২৫ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। এটি একটি বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি। বাংলাদেশের তুলনায় ভারত বিশাল বড় শিল্পশক্তি। আমরা অবশ্যই আনন্দিত যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি এতটা ভালো করছে এবং ফুলে-ফেঁপে উঠছে। ভারতের যে ৪৮০টি রপ্তানি পণ্য বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির ক্ষেত্রে নেতিবাচক তালিকা রাখা হয়েছে তা অন্যায়। যেখানে দশ গুণ বেশি বাণিজ্য সুবিধা রয়েছে, সেখানে কেন ভারত এই বিপুল পরিমাণ আইটেম নেতিবাচক তালিকায় রেখেছে? গত এপ্রিলে যখন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেন, তখন তিনি মাত্র ৬০ থেকে ৬৫টি আইটেম নেগেটিভ তালিকা থেকে তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সুতরাং ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উন্নয়নে এবং বাণিজ্যে আস্থা আনার জন্য আরো কিছু করার আছে।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে আপনার প্রত্যাশাগুলো কেমন?
সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ ঢাকা সফরে এসেছিলেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর জন্য মডেল হিসেবে কাজ করবে। আমরা খুবই আনন্দিত যে মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরে আসছেন। কিন্তু আমি এখনো এ কথা বলব, ভারত অনেক বড় দেশ, পানিবণ্টন এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে ভারতকে আরেকটু উদার হতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেন ভারতের বাংলাদেশের সঙ্গে প্রস্তুত পোশাক কোটা প্রয়োজন। এটা আপনারা সহজভাবেই বাইরে থেকে করতে পারেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের সব ব্যাপারে, ভারতের সঙ্গে সব চুক্তির ব্যাপারে খুঁতখুঁত করলে চলবে না। এ ধরনের আচরণ কোনো ভালো ফল বয়ে আনে না। ট্রানজিটের ব্যাপারেই হোক আর পানিবণ্টনের ব্যাপারেই হোক, দুই দেশের স্বার্থেই তা স্বচ্ছ ও পেশাদার মনোভাবের মধ্য দিয়ে করতে হবে।
No comments