রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে অর্থ দেওয়ার পরিকল্পনা বাদ by কাজী হাফিজ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনী প্রচার চালানোর জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার চিন্তাভাবনা থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী মাসে ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী আইন সংস্কার বিষয়ে যেসব প্রস্তাব রাখতে যাচ্ছে, তাতে 'নির্বাচনী প্রচারণা ব্যয় (জনতহবিল) আইন ২০১১' প্রণয়নের প্রস্তাব থাকছে না।
নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও এম সাখায়াত হোসেন কালের কণ্ঠকে তাঁদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে সংলাপে ইসির এ প্রস্তাবের পক্ষে তেমন সমর্থন পাওয়া যায়নি। মূলত এ কারণেই ইসির চূড়ান্ত প্রস্তাবনায় বিষয়টি থাকছে না। ইসি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিগত সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধ নির্র্বাচন করায় অনেক রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয়তা মূল্যায়ন দুরূহ হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া প্রস্তাবিত আইনের বিষয়ে দলগুলোর বেশির ভাগের আগ্রহ না থাকায় ইসিও এ নিয়ে অনাগ্রহী হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া প্রস্তাবিত আইনে যেসব শর্ত উল্লেখ করা হয়েছিল, তাতে সব দলের সমর্থন পাওয়ার বিষয়টি সম্ভব ছিল না। কর্মকর্তারা জানান, এ আইন প্রণয়ন করা হলে রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে বেশি সুবিধা পেতেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছিল, আগের সংসদ নির্বাচনে যেসব স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা এবং যাঁরা বিধান অনুযায়ী নিজ নিজ আসনে ১ শতাংশ ভোটারের সমথর্ন নিয়ে প্রার্থী হবেন, তাঁরা তাঁদের নির্বাচনী প্রচারের জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থ পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। অথচ বিগত সংসদ নির্বাচনে ১৫১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রায় সবাই নিজ নিজ আসন এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর-সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হলেও তাঁদের মধ্যে ৭১ জন ওই ১ শতাংশ ভোটারের ভোট পেতেও ব্যর্থ হন। পিরোজপুর-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ শহিদুল হক জামাল পান মাত্র ০.০২ শতাংশ ভোট। ঢাকা-৮ আসন থেকে আবদুল বারী পান ০.৩ শতাংশ ভোট।
ইসির প্রস্তাবিত আইনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর এ অর্থপ্রাপ্তির যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছিল, 'অব্যবহিত পূর্ববর্তী জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নিজস্ব প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণকৃত আসনের প্রদত্ত মোট বৈধ ভোটের শতকরা ৫ ভাগ ভোট পেতে হবে।' ইসির এ প্রস্তাবিত শর্ত বহাল রেখে আইন প্রণয়ন করা হলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ছাড়া আর কোনো দল নির্বাচনী প্রচার চালানোর জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থ ও অন্যান্য সুবিধা পেত না। আওয়ামী লীগ তুলনামূলক অনেক বেশি অর্থ বরাদ্দ পেত। জাতীয় পার্টি পেত বিএনপির প্রায় সমপরিমাণ অর্থ। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, তহবিলের পরিমাণ নির্ধারণের মানদণ্ড হবে গত সংসদ নির্বাচনে যে দল যতটা আসন পেয়েছে, এর ভিত্তিতে। গত নির্বাচনে বিএনপি মোট বৈধ ভোটের ৩২.৫০ ও জাতীয় পার্টি ৭.৪ শতাংশ লাভ করে। কিন্তু বিএনপি ৩০টি আর জাতীয় পার্টি ২৭টি আসন পায়।
দলগুলো যা বলেছিল : নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে ইসির সঙ্গে সংলাপে গত ৭ জুন এ বিষয়ে এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, 'নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনের ফল মূল্যায়ন না করে ১৯৯১ সাল থেকে যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, তাদের প্রাপ্ত আসন ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। অন্যথায় আমরা মনে করব, এতে ইসি বর্তমান সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে।' নতুন দলগুলোকেও নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব রাখেন তিনি।
পরদিন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) পক্ষে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক নেতাদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ১৪ জুন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে বলা হয়, এতে বড় কয়েকটি দল বাদে আর কেউ সুবিধা পাবে না। জনতহবিল আইনের উদ্দেশ্য হতে হবে নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করা, তেলা মাথায় তেল দেওয়া নয়। ১৬ জুন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু দলীয় বা জোটের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব দলকে রাষ্ট্রীয় অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব রাখেন। জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক ২৩ জুন ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে নিবন্ধিত দলগুলোকে শর্ত সাপেক্ষে অন্তত এক কোটি টাকা করে অনুদানের প্রস্তাব করেন।
নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে ইসির ওই সংলাপে বিএনপি ও জোটের অন্য দলগুলো অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগ কয়েকবার সময় পরিবর্তনের পর গত ৭ আগস্ট সংলাপে অংশ নিলেও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব সম্পর্কে কোনো মতামত দেয়নি।
ইসির প্রস্তাবিত আইনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর এ অর্থপ্রাপ্তির যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছিল, 'অব্যবহিত পূর্ববর্তী জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নিজস্ব প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণকৃত আসনের প্রদত্ত মোট বৈধ ভোটের শতকরা ৫ ভাগ ভোট পেতে হবে।' ইসির এ প্রস্তাবিত শর্ত বহাল রেখে আইন প্রণয়ন করা হলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ছাড়া আর কোনো দল নির্বাচনী প্রচার চালানোর জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থ ও অন্যান্য সুবিধা পেত না। আওয়ামী লীগ তুলনামূলক অনেক বেশি অর্থ বরাদ্দ পেত। জাতীয় পার্টি পেত বিএনপির প্রায় সমপরিমাণ অর্থ। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, তহবিলের পরিমাণ নির্ধারণের মানদণ্ড হবে গত সংসদ নির্বাচনে যে দল যতটা আসন পেয়েছে, এর ভিত্তিতে। গত নির্বাচনে বিএনপি মোট বৈধ ভোটের ৩২.৫০ ও জাতীয় পার্টি ৭.৪ শতাংশ লাভ করে। কিন্তু বিএনপি ৩০টি আর জাতীয় পার্টি ২৭টি আসন পায়।
দলগুলো যা বলেছিল : নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে ইসির সঙ্গে সংলাপে গত ৭ জুন এ বিষয়ে এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, 'নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনের ফল মূল্যায়ন না করে ১৯৯১ সাল থেকে যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, তাদের প্রাপ্ত আসন ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। অন্যথায় আমরা মনে করব, এতে ইসি বর্তমান সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে।' নতুন দলগুলোকেও নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব রাখেন তিনি।
পরদিন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) পক্ষে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক নেতাদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ১৪ জুন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে বলা হয়, এতে বড় কয়েকটি দল বাদে আর কেউ সুবিধা পাবে না। জনতহবিল আইনের উদ্দেশ্য হতে হবে নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করা, তেলা মাথায় তেল দেওয়া নয়। ১৬ জুন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু দলীয় বা জোটের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব দলকে রাষ্ট্রীয় অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব রাখেন। জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক ২৩ জুন ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে নিবন্ধিত দলগুলোকে শর্ত সাপেক্ষে অন্তত এক কোটি টাকা করে অনুদানের প্রস্তাব করেন।
নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে ইসির ওই সংলাপে বিএনপি ও জোটের অন্য দলগুলো অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগ কয়েকবার সময় পরিবর্তনের পর গত ৭ আগস্ট সংলাপে অংশ নিলেও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব সম্পর্কে কোনো মতামত দেয়নি।
No comments