সন্ত্রাসের বিকৃত আদর্শকে হারাব
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন |
সন্ত্রাসবাদের ‘বিকৃত ভাবাদর্শ’কে পরাজিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার অঙ্গীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ওয়াশিংটনে গতকাল বৃহস্পতিবার এক বৈঠকের আগে দুই পুরোনো মিত্রদেশের নেতারা ওই যৌথ ঘোষণা দেন। খবর রয়টার্স ও বিবিসির। ডেভিড ক্যামেরন দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল ওয়াশিংটনে পৌঁছান। বারাক ওবামার সঙ্গে গতকাল এক নৈশভোজে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। এরপর আজ শুক্রবার আরও বৈঠক করবেন তাঁরা। দুই নেতার একটি মন্তব্যধর্মী নিবন্ধ গতকাল টাইমস অব লন্ডন পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। এটি বুধবার রাতে ওয়াশিংটনে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ওবামা ও ক্যামেরন দুই দিনব্যাপী শীর্ষ বৈঠকের আগে ইঙ্গ-মার্কিন মিত্রতার মূল্যবোধগুলোর একটা রূপরেখা তুলে ধরেছেন। ফ্রান্সে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে এ বৈঠককে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। গত সপ্তাহে ফ্রান্সের প্যারিসে বিতর্কিত রম্য সাপ্তাহিক পত্রিকা শার্লি এবদোর কার্যালয়ে হামলার প্রসঙ্গ তুলে ওবামা ও ক্যামেরন বলেছেন, চরমপন্থীরা কখনোই বাক্স্বাধীনতা হরণ করতে পারবে না।
দুই নেতা লিখেছেন, ‘আমরা আল-কায়েদা, ইসলামিক স্টেট বা বোকো হারামের মতো একক কোনো ধর্মান্ধ গোষ্ঠী বা সন্ত্রাসীদের মুখোমুখি হই আর না হই, চরমপন্থীদের ভয়ে কখনোই আতঙ্কিত হব না। আমরা এ বর্বর হত্যকারী ও তাদের বিকৃত ভাবাদর্শকে পরাজিত করবই।’ ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘আগ্রাসন’র বিরুদ্ধেও নিজেদের দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেছেন ওবামা ও ক্যামেরন। মস্কোর বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁরা। লিখেছেন, ‘আমরা যদি এভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতে দিতে থাকি, তাহলে সেখান থেকে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে, তাতে সবাইকেই ভুগতে হবে। আমাদের শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ জবাব এ অব্যর্থ বার্তাই দিয়েছে যে ইউক্রেনকে অস্থিতিশীল করার রুশ প্রচেষ্টার মুখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বসে থাকবে না।’ ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী (ইইউ) বিক্ষোভের মুখে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর দেশটির স্বায়ত্তশাসিত ক্রিমিয়াসহ রুশ ভাষাভাষী বিভিন্ন অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু হয়। মার্চ মাসে ক্রিমিয়াকে নিজেদের অংশ করে নেয় রাশিয়া। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পাশ্চাত্যের দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপ করে। যুক্তরাজ্যে আগামী মে মাসের সাধারণ নির্বাচনের আগে এটাই ক্যামেরনের শেষ যুক্তরাষ্ট্র সফর বলে মনে করা হচ্ছে। সফরকালে তিনি কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগারে বন্দী থাকা সর্বশেষ ব্রিটিশ নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার জন্য ওবামার কাছে সুপারিশ করবেন বলে জানিয়েছেন সরকারি একটি সূত্র ও ওই বন্দীর আইনজীবী। এ ছাড়া সফরকালে ক্যামেরন ইউরোজোন নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং একটি পরিকল্পিত মার্কিন-ইইউ চুক্তি নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষাপটে অর্থনীতি ও নিরাপত্তার ওপরে আলোকপাত করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
No comments