রিয়াজ রহমানকে গুলি, তদন্তে পুলিশ- মঈন খানের বাসায় কূটনীতিকদের বৈঠক
বিএনপি
নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কয়েকজন প্রভাবশালী কূটনীতিক।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের গুলশানের বাসায় গতরাতে এ
বৈঠক হয়। রাত ৮টা থেকে সোয়া ৯টা পর্যন্ত এ বৈঠকে কূটনীতিকদের মধ্যে ইউরোপীয়
ইউনিয়ন, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, নরওয়ে,
সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ও কানাডার পলিটিক্যাল কনসালটেন্ট অংশ নেন। বিএনপি’র
পক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড.
আবদুল মঈন খান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক
রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, দেশের
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিরোধী জোটের আন্দোলন, কূটনীতিক রিয়াজ রহমানের
ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, প্রবীণ
কূটনীতিক ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমানের গাড়িতে ও তার উপর
গুলিবর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পরপরই কূটনীতিক মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার
সৃষ্টি হয়।
রিয়াজ রহমানকে গুলি- ভিডিও ফুটেজ নিয়ে তদন্তে পুলিশ
বিএনপি
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমানকে গুলি
ও তার গাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি
পুলিশ। এমনকি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে সনাক্তও করতে পারেনি। পুলিশ
কর্মকর্তারা বলছেন, ওই ঘটনার দুটি ভিডিও ফুটেজ পেয়েছেন তারা। কিন্তু ফুটেজ
দু’টি ঝাপসা। আলো স্বল্পতার কারণে হামলায় অংশ নেয়া যুবকদের চেহারা বোঝা
যাচ্ছে না। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফুটেজ ছাড়াও প্রযুক্তি
ব্যবহার করে ও ম্যানুয়ালি এই ঘটনার তদন্ত চলছে। দুর্বৃত্তদের ধরতে পুলিশের
পাশাপাশি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাও মাঠে কাজ করছে। পুলিশের গুলশান জোনের
উপ-কমিশনার (ডিসি) লুৎফুল কবীর বলেন, কাউকে গ্রেপ্তার বা সনাক্ত করা যায়নি
এটা সত্য তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্র জানায়,
ভিডিও ফুটেজে এক যুবকের সঙ্গে রিয়াজ রহমানের ধস্তাধস্তির একটি দৃশ্য দেখা
গিয়েছে। তবে ওই যুবকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল কী না তা স্পষ্ট নয়। ঝাপসা ও
অস্পষ্ট ঐ ভিডিও ফুটেজটিতে প্রাইভেটকারে আগুন ধরিয়ে দিতেও দেখা গেছে।
প্রাইভেটকারে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পর পরবর্তী দৃশ্যগুলো একটু পরিষ্কার দেখা
গেছে। তাতেও দুর্বৃত্তদের মুখ স্পষ্ট করে বোঝা যায় না। পুলিশের গুলশান
বিভাগের সহকারী কমিশনার নূরুল আলম বলেন, ঝাপসা ভিডিও ফুটেজটি কিছুটা স্বচ্ছ
করার ব্যাপারে ভিডিও ফুটেজ বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া
হয়েছে। ঘটনাস্থলে প্রাইভেটকারে কিভাবে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে সেটি সিআইডি’র
তদন্ত রিপোর্টে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘটনাটি
তদন্তের জন্য গাড়ির চালককে খুঁজছেন তারা। কিন্তু রিয়াজ রহমানের চিকিৎসার
অজুহাতে তার পরিবারের সদস্যরা গাড়িচালকের কোন খোঁজ দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ
করেছেন একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ কর্মকর্তারা তার গ্রামের বাড়ি ও
ঢাকার ঠিকানা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। ঘটনার তদন্তের জন্য গাড়ি চালক
একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। পুলিশ জানায়, গতকাল ঘটনাস্থলের আলামত যাচাই করে
সিআইডি একটি রিপোর্ট পুলিশের কাছে দিয়েছে। তবে রিপোর্টে কী লেখা রয়েছে তা
জানা যায়নি।
No comments