পুনর্নির্মাণের নামে ৮১ কোটি টাকার বেশির ভাগ লোপাট
নেত্রকোনার
পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ ও সীমান্তবর্তী সুসং দুর্গাপুরের বিরিশিরি পর্যন্ত ৩৭
কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণে নানা অনিয়মের কারণে কাজ শেষ হতে না হতেই
বিধ্বস্ত সড়কে সওজের উদ্যোগে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে আবারো সংস্কারকাজ শুরু করতে
হয়েছে। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধিদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড ও
ব্যাপক চাঁদাবাজির কারণে পুনর্নির্মাণে বরাদ্দের ৮১ কোটি টাকার বেশির ভাগই
লোপাট হয়ে গেছে। ফলে সীমান্তবর্তীর সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকার সব উন্নয়ন
কর্মকাণ্ড এখন স্থবির হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১১
সালে ৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নেত্রকোনা জেলার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি পর্যন্ত এই
গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি আগের ১২ ফুট থেকে বর্ধিত করে ১৮ ফুট প্রশস্ত করাসহ
পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ৮১ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের
মধ্যে ৩৭ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণ, পাঁচটি ব্রিজ ও ৯টি কালভার্ট রয়েছে।
এতে হোসেন আহমদ পান্নার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনস্ট্রাকশন, শামীম
এন্টারপ্রাইজ, এস এম বিল্ডার্স, পারিশা, আমিনা বেগমসহ ৯টি প্রতিষ্ঠান ৩৭
কিলোমিটার সড়কের কার্যাদেশ লাভ করে। পাঁচটি ব্রিজ ও ৯টি কালভার্টের
কার্যাদেশ লাভ করেন অন্য আরো পাঁচজন ঠিকাদার।
কাজের শুরুতে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও কথিত জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতার পরিবর্তে হুমকি-ধমকিতে শুরুতেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাপকহারে চাঁদা প্রদানের পর কাজ শুরু করা হলেও ঠিকাদাররা মওকা পেয়ে শিডিউলকে পাশ কাটিয়ে দায়সারাভাবে পুনর্নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেন। ফলে দেখা যায়, দুই ফুট গভীর করে মাটি খুড়ে বালু ও ইটের সুরকি দিয়ে ভরাট করে নির্দিষ্ট পরিমাণ পাথরের কার্পেটিং করার বিধিবিধান থাকার পরেও তার কিছুই মানা হয়নি। মানা হয়নি সড়কের দুই পাশে ৩ ফুট মাটির লেবেল ও ৪ ফুট ঢালু। পুরনো সড়কের কার্পেটিং চলটে তাতেই আবার পাতলা কার্পেটিং দিয়ে দায়সারাভাবে ৩৭ কিলোমিটার সড়কের পুনর্নির্মাণের বিশেষ এই প্রজেক্টের ইতি টানা হয়। ফলে সড়ক প্রশস্তকরণসহ সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই সড়কের বিভিন্ন অংশ দেবে যায়। সড়কের বেশির ভাগ অংশের পিচ, ইট, সুরকি উঠে গিয়ে গভীর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে সম্পূর্ণভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি চলাচলের উপযোগী করার লক্ষ্যে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সওজের নিজস্ব উদ্যোগে এখন ৯ শ’ মিটারের সংস্কারের কাজ চলছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সীমান্তের নয়নাভিরাম পর্যটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সাধারণ যান ছাড়াও প্রায় সাড়ে ১২ শ’ বালুবাহী ২৭-২৮ টনি ট্রাক যাতায়াত করছে। শুকনাকুড়ি থেকে কৃষ্ণেরচর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কে পাথর ও মাটি সরে গিয়ে ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সড়কের লক্ষ্মীপুর, শালদিঘা, বালুঘাটা, শান্তিপুর কালামার্কেট এলাকায় সংস্কারের পর এখন মারাত্মক বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ৩৭ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগই ভগ্নদশার সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত শুকনাকুড়ি থেকে লক্ষ্মীপুর কালামার্কেট পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে ট্রাক, বাস, ট্রাক্টর ফেঁসে যাচ্ছে। এতে করে এ সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামের সৃষ্টি হচ্ছে। আর বাস, ট্রাক, ট্রাক্টরচালক, হেলপার ও যাত্রী সাধারণ পড়ছেন সীমাহীন দুর্ভোগে। আর ফেঁসে যাওয়া এসব যানবাহন উদ্ধার করতে চালক ও হেলপারদের গলদর্ঘম হতে হচ্ছে। তারা অনেকটা নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে স্থানীয় লোকজনকে কাজে লাগিয়ে ফেঁসে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করতে হয়। এমতাবস্থায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের শ্রমিকদের মাঝে মাঝে ভগ্নদশা এলাকায় কিছু বালু ও ইটের খোয়া ফেলে তারা তাদের দায়িত্ব শেষ করেন। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এভাবেই চলছে নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি-দুর্গাপুর সড়কে যানবাহন চলাচল।
ওই সড়ক পথের শুকনাকুড়ি এলাকার আব্দুর রাশিদ, মহিউদ্দিন মাস্টার, এমদাদুল হকসহ উপস্থিত আরো অনেকে ক্ষোভের সাথে বলেন, রাজনীতিবিদ যাদের তদারকি ও উন্নয়ন কাজ করার কথা শুধু তাদের ব্যক্তি স্বার্থ ও চাঁদাবাজির কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের পরেও সড়কের এই দুরাবস্থা। নইলে কি ঠিকাদারদের এমন একটা বাজে রাস্তা করতে পারত।
দুর্গাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এমদাদুল হক খান বলেন, এই সড়কটি পুনর্নির্মাণের পর ইট, সুরকি উঠে যে ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল, বোঝার উপায় নেই যে, এটি পুনর্নির্মাণ হয়েছিল।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার হোসেন আহমদ পান্নার মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেয়া হলেও বারবারই তিনি কল কেটে দেন। অন্য ঠিকাদারদের মধ্যে এ ব্যাপারে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। আবার কেউ সাংবাদিক নাম শোনে কৌশলে এড়িয়ে যান।
নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাসুদ খান নয়া দিগন্তকে বলেন, সীমান্তের ওই সড়ক সম্পর্কে কিছুতেই আমার মাথা কাজ করে না। রাজনীতিবিদরা যা করেছেন, তা আমি বলতে পারব না। যে অবিশ্বাস্য চাঁদাবাজি হয়েছে সে সম্পর্কেও কিছু বলতে চাই না।
কাজের শুরুতে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও কথিত জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতার পরিবর্তে হুমকি-ধমকিতে শুরুতেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাপকহারে চাঁদা প্রদানের পর কাজ শুরু করা হলেও ঠিকাদাররা মওকা পেয়ে শিডিউলকে পাশ কাটিয়ে দায়সারাভাবে পুনর্নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেন। ফলে দেখা যায়, দুই ফুট গভীর করে মাটি খুড়ে বালু ও ইটের সুরকি দিয়ে ভরাট করে নির্দিষ্ট পরিমাণ পাথরের কার্পেটিং করার বিধিবিধান থাকার পরেও তার কিছুই মানা হয়নি। মানা হয়নি সড়কের দুই পাশে ৩ ফুট মাটির লেবেল ও ৪ ফুট ঢালু। পুরনো সড়কের কার্পেটিং চলটে তাতেই আবার পাতলা কার্পেটিং দিয়ে দায়সারাভাবে ৩৭ কিলোমিটার সড়কের পুনর্নির্মাণের বিশেষ এই প্রজেক্টের ইতি টানা হয়। ফলে সড়ক প্রশস্তকরণসহ সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই সড়কের বিভিন্ন অংশ দেবে যায়। সড়কের বেশির ভাগ অংশের পিচ, ইট, সুরকি উঠে গিয়ে গভীর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে সম্পূর্ণভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি চলাচলের উপযোগী করার লক্ষ্যে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সওজের নিজস্ব উদ্যোগে এখন ৯ শ’ মিটারের সংস্কারের কাজ চলছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সীমান্তের নয়নাভিরাম পর্যটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সাধারণ যান ছাড়াও প্রায় সাড়ে ১২ শ’ বালুবাহী ২৭-২৮ টনি ট্রাক যাতায়াত করছে। শুকনাকুড়ি থেকে কৃষ্ণেরচর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কে পাথর ও মাটি সরে গিয়ে ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সড়কের লক্ষ্মীপুর, শালদিঘা, বালুঘাটা, শান্তিপুর কালামার্কেট এলাকায় সংস্কারের পর এখন মারাত্মক বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ৩৭ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগই ভগ্নদশার সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত শুকনাকুড়ি থেকে লক্ষ্মীপুর কালামার্কেট পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে ট্রাক, বাস, ট্রাক্টর ফেঁসে যাচ্ছে। এতে করে এ সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামের সৃষ্টি হচ্ছে। আর বাস, ট্রাক, ট্রাক্টরচালক, হেলপার ও যাত্রী সাধারণ পড়ছেন সীমাহীন দুর্ভোগে। আর ফেঁসে যাওয়া এসব যানবাহন উদ্ধার করতে চালক ও হেলপারদের গলদর্ঘম হতে হচ্ছে। তারা অনেকটা নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে স্থানীয় লোকজনকে কাজে লাগিয়ে ফেঁসে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করতে হয়। এমতাবস্থায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের শ্রমিকদের মাঝে মাঝে ভগ্নদশা এলাকায় কিছু বালু ও ইটের খোয়া ফেলে তারা তাদের দায়িত্ব শেষ করেন। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এভাবেই চলছে নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি-দুর্গাপুর সড়কে যানবাহন চলাচল।
ওই সড়ক পথের শুকনাকুড়ি এলাকার আব্দুর রাশিদ, মহিউদ্দিন মাস্টার, এমদাদুল হকসহ উপস্থিত আরো অনেকে ক্ষোভের সাথে বলেন, রাজনীতিবিদ যাদের তদারকি ও উন্নয়ন কাজ করার কথা শুধু তাদের ব্যক্তি স্বার্থ ও চাঁদাবাজির কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের পরেও সড়কের এই দুরাবস্থা। নইলে কি ঠিকাদারদের এমন একটা বাজে রাস্তা করতে পারত।
দুর্গাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এমদাদুল হক খান বলেন, এই সড়কটি পুনর্নির্মাণের পর ইট, সুরকি উঠে যে ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল, বোঝার উপায় নেই যে, এটি পুনর্নির্মাণ হয়েছিল।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার হোসেন আহমদ পান্নার মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেয়া হলেও বারবারই তিনি কল কেটে দেন। অন্য ঠিকাদারদের মধ্যে এ ব্যাপারে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। আবার কেউ সাংবাদিক নাম শোনে কৌশলে এড়িয়ে যান।
নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাসুদ খান নয়া দিগন্তকে বলেন, সীমান্তের ওই সড়ক সম্পর্কে কিছুতেই আমার মাথা কাজ করে না। রাজনীতিবিদরা যা করেছেন, তা আমি বলতে পারব না। যে অবিশ্বাস্য চাঁদাবাজি হয়েছে সে সম্পর্কেও কিছু বলতে চাই না।
No comments