সত্য ও সুন্দরে নিবেদিত by তারিক রহমান সৌরভ
আজ ১৫ ডিসেম্বর ২০১১। ১৯৩১ সালের এই দিনে বরিশাল জেলার বিখ্যাত উলানিয়া জমিদার বাড়ির সন্তান আতিকুল হক চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ৮১তম জন্মদিন। তিনি ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ষাটের দশকের গোড়ার দিকে তিনি তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি বেতারে নাটক বিভাগের প্রযোজক এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম বেতারে অনুষ্ঠান সংগঠক
হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৬ সালে আতিকুল হক চৌধুরী পাকিস্তান টেলিভিশনে যোগ দেন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে উপ-মহাপরিচালক (অনুষ্ঠান) হিসেবে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। এরপর প্রায় এক দশক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ২০০৫ সালে তিনি একুশে টেলিভিশনে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি এখানেই উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বলা সঙ্গত যে, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বর্তমানে তাঁর সমবয়সী আর কেউ কর্মরত নেই। আতিকুল হক চৌধুরী ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। ২০০১ সালে তাঁর ছোট ছেলের অকস্মাৎ মৃত্যু হয়।
আতিকুল হক চৌধুরী তিন দশক ধরে বেতার ও টেলিভিশনে নাট্যচর্চার ক্ষেত্রে একনিষ্ঠ পরিশ্রম করে গেছেন। সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন। সর্বোপরি বেতার ও টেলিভিশনে শ্রোতা ও দর্শকদের রুচির মান বাড়াতে যত্নবান হয়েছেন। নাটক নির্বাচন ও প্রযোজনার ক্ষেত্রে মননশীল ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর মননশীলতার ক্ষেত্র প্রধানত দুটি। প্রথমত, উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের নাট্যরূপ প্রচার। রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, টলস্টয়ের ধ্রুপদী রচনাগুলোকে নাট্যরূপ দিয়ে তিনি দর্শকদের সামনে নিয়ে এসেছেন, যা পরে সুস্থ সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তৈরিতে সহায়তা করেছে। দ্বিতীয়ত, বেতার ও টেলিভিশন নাটকে নিজস্ব সৃজনশীলতার ছাপ রেখেছেন আপন দক্ষতায়। তাঁর নাটক কেবল শিল্পাশ্রয়ী নয়, বক্তব্যধর্মীও বটে। এই বক্তব্যের প্রয়োজন সেই সমাজের মানুষের জন্য, যেখানে বিভিন্ন অনিয়ম, অনাচার ক্রমশ নষ্ট করে দেয় মানবিক মূল্যবোধকে। এ ক্ষেত্রে আতিকুল হক চৌধুরী তাঁর সামাজিক অঙ্গীকার অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে পূরণ করেছেন। বাবার কলম কোথায়, দুরবিন দিয়ে দেখুন, নীলনকশার সন্ধানে, সুখের উপমা, সার্কাস দেখুন_ সত্তর ও আশির দশকে প্রচারিত এসব নাটকের নাট্যকার ও পরিচালক আতিকুল হক চৌধুরী নিঃসন্দেহে একজন নিবিড় অনুভবের শিল্পী। আতিকুল হক চৌধুরী জীবনের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার থেকে খুঁজে বের করেছেন অসংখ্য নতুন শিল্পীদের। যারা তরুণ, যারা সম্ভাবনাময় তাদের তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন নাট্যাঙ্গনে। শুধু নাট্যশিল্পী নয় পরে তারা সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবেও নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন। এটা তো সত্য, যে কোনো সমাজের সাংস্কৃতিক চর্চা প্রতিভাবান, সচেতন নিবেদিত সাংস্কৃতিক কর্মীরাই এগিয়ে নিয়ে যায়। এ রকম একটি কঠিন দায়িত্বও পালন করেছেন আতিকুল হক চৌধুরী। সুদীর্ঘ কর্মজীবনে এত সব দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন শেষে তিনি জীবনের এতটা পথ পাড়ি দিয়েছেন। বলাবাহুল্য, তিনি একজন সার্থক মানুষ। গণমাধ্যমে শুধু মানসম্পন্ন শিল্পকর্মর্ই নয় বিনয় ও নম্রতার যে এক অসাধারণ ধারা তিনি তৈরি করেছেন যা কি-না মিশেছে তাঁর ব্যক্তিজীবনের আধুনিকতা, নিয়মানুবর্তিতা ও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে_ বর্তমান সময়ে এ রকম গুণসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎ বড় একটা পাওয়া যায় না। তার অনাগত জীবন সুস্থ ও নিরাময় হোক_ জন্মদিনে পরম করুণাময়ের কাছে এই প্রার্থনা করছি।
তারিক রহমান সৌরভ : নির্বাহী পরিচালক, বাঙালি সমগ্র জাদুঘর
আতিকুল হক চৌধুরী তিন দশক ধরে বেতার ও টেলিভিশনে নাট্যচর্চার ক্ষেত্রে একনিষ্ঠ পরিশ্রম করে গেছেন। সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন। সর্বোপরি বেতার ও টেলিভিশনে শ্রোতা ও দর্শকদের রুচির মান বাড়াতে যত্নবান হয়েছেন। নাটক নির্বাচন ও প্রযোজনার ক্ষেত্রে মননশীল ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর মননশীলতার ক্ষেত্র প্রধানত দুটি। প্রথমত, উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের নাট্যরূপ প্রচার। রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, টলস্টয়ের ধ্রুপদী রচনাগুলোকে নাট্যরূপ দিয়ে তিনি দর্শকদের সামনে নিয়ে এসেছেন, যা পরে সুস্থ সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তৈরিতে সহায়তা করেছে। দ্বিতীয়ত, বেতার ও টেলিভিশন নাটকে নিজস্ব সৃজনশীলতার ছাপ রেখেছেন আপন দক্ষতায়। তাঁর নাটক কেবল শিল্পাশ্রয়ী নয়, বক্তব্যধর্মীও বটে। এই বক্তব্যের প্রয়োজন সেই সমাজের মানুষের জন্য, যেখানে বিভিন্ন অনিয়ম, অনাচার ক্রমশ নষ্ট করে দেয় মানবিক মূল্যবোধকে। এ ক্ষেত্রে আতিকুল হক চৌধুরী তাঁর সামাজিক অঙ্গীকার অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে পূরণ করেছেন। বাবার কলম কোথায়, দুরবিন দিয়ে দেখুন, নীলনকশার সন্ধানে, সুখের উপমা, সার্কাস দেখুন_ সত্তর ও আশির দশকে প্রচারিত এসব নাটকের নাট্যকার ও পরিচালক আতিকুল হক চৌধুরী নিঃসন্দেহে একজন নিবিড় অনুভবের শিল্পী। আতিকুল হক চৌধুরী জীবনের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার থেকে খুঁজে বের করেছেন অসংখ্য নতুন শিল্পীদের। যারা তরুণ, যারা সম্ভাবনাময় তাদের তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন নাট্যাঙ্গনে। শুধু নাট্যশিল্পী নয় পরে তারা সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবেও নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন। এটা তো সত্য, যে কোনো সমাজের সাংস্কৃতিক চর্চা প্রতিভাবান, সচেতন নিবেদিত সাংস্কৃতিক কর্মীরাই এগিয়ে নিয়ে যায়। এ রকম একটি কঠিন দায়িত্বও পালন করেছেন আতিকুল হক চৌধুরী। সুদীর্ঘ কর্মজীবনে এত সব দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন শেষে তিনি জীবনের এতটা পথ পাড়ি দিয়েছেন। বলাবাহুল্য, তিনি একজন সার্থক মানুষ। গণমাধ্যমে শুধু মানসম্পন্ন শিল্পকর্মর্ই নয় বিনয় ও নম্রতার যে এক অসাধারণ ধারা তিনি তৈরি করেছেন যা কি-না মিশেছে তাঁর ব্যক্তিজীবনের আধুনিকতা, নিয়মানুবর্তিতা ও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে_ বর্তমান সময়ে এ রকম গুণসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎ বড় একটা পাওয়া যায় না। তার অনাগত জীবন সুস্থ ও নিরাময় হোক_ জন্মদিনে পরম করুণাময়ের কাছে এই প্রার্থনা করছি।
তারিক রহমান সৌরভ : নির্বাহী পরিচালক, বাঙালি সমগ্র জাদুঘর
No comments