রাজনৈতিক আলোচনা- 'কেউ কথা রাখেনি এবং গণতন্ত্রের বিকট চেহারা' by সোহরাব হাসান

কেউ কথা রখেননি। না শেখ হাসিনা, না খালেদা জিয়া। ২০০১ সালের আগস্ট মাসে বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুই নেত্রী সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বলেছিলেন, ‘তাঁরা হরতাল করবেন না। সংসদ বর্জন করবেন না।’ জিমি কার্টারের বরাতে এ-সংক্রান্ত খবর ৫ আগস্ট ২০০১ তারিখে প্রথম আলোসহ সব পত্রিকায়ই ছাপা হয়েছিল। কোনো নেত্রী বা দল যখন এর প্রতিবাদ করেনি, তখন ধরে নিতে পারি, কার্টার সাহেব অসত্য বলেননি। এরপর পদ্মা-মেঘনায় অনেক পানি প্রবাহিত হয়েছে। দুই নেত্রী পালাক্রমে দেশ শাসন করছেন। মাঝখানে দুই বছরের সেনা-সমর্থিত জরুরি সরকারের ফাঁড়াও কেটে গেছে। খালেদা জিয়া মেয়াদের শেষ দিন ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। ধারণা করি, শেখ হাসিনাও মেয়াদ শেষ হওয়ার এক দিন আগেও ক্ষমতা ছাড়বেন না।
কিন্তু এই প্রায় এক দশকে সরকারি ও বিরোধী দলের আচরণে কোনো পরিবর্তন হয়নি। কেবল কলাকুশীলবদের আসন অদল-বদল হয়েছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত যাঁরা দিলু রোড, বেইলি রোডে ছিলেন, এখন তাঁরা সেখান থেকে ছিটকে পড়েছেন। এবং যাঁরা ২০০১ সালে ছিটকে পড়েছিলেন, তাঁরা আবার সেখানে ঠাঁই পেয়েছেন। কিন্তু জনগণের কী লাভ হয়েছে। এখনো প্রতিহিংসামূলক রাজনীতিতে ক্ষতবিক্ষত দেশ।
২.
শেষ পর্যন্ত বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদের কথাই অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল। হাইকোর্টের রায়েরও অনেক আগে তিনি বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার বাড়ির বিষয়টি আদালত নয়, রাজপথেই ফয়সালা হবে। রাজপথের চেয়ে মওদুদ সাহেবরা কিন্তু সচিবালয়ে থাকতেই বেশি পছন্দ করেন।
রাজপথে ফয়সালার অর্থ কী? গণ-আন্দোলন? লাখ লাখ মানুষ নিয়ে খালেদা জিয়ার বাড়ি পুনরুদ্ধার করা? সেই মুরোদ বিএনপির আছে বলে মনে হয় না। তারা হরতাল ডেকে নয়াপল্টনে পার্টি অফিসের আশপাশে ঘুরঘুর করবেন কিংবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে পরবর্তী হরতালের প্রস্তুতি নেবেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে কী বলেছিলেন মওদুদ সাহেবরা? পত্রিকা সাক্ষ্য দিচ্ছে, ২০০১ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ হরতাল করলে মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, একজন ব্যক্তির কিছু সুযোগ-সুবিধার জন্য হরতাল ডাকা হয়েছে (প্রথম আলো, ২ ডিসেম্বর, ২০০১)। শেখ হাসিনার বাড়ির বরাদ্দ বাতিল করার প্রতিবাদে এই হরতাল পালন করেছিল আওয়ামী লীগ। সেদিন আওয়ামী লীগের হরতাল অযৌক্তিক হলে বিএনপির আজকের হরতালের যৌক্তিকতা কী? ১৪ ও ৩০ নভেম্বর বিএনপি আহূত হরতাল দুটিও ছিল খালেদা জিয়ার বাড়ি রক্ষার জন্য।
হরতাল-অবরোধ করে বিএনপির নেতারা কী লাভ করতে চান? অধিকাংশ নেতার (দুই দলেরই) ছেলেমেয়েরা দেশে থাকেন না। তাই হরতালের বিরূপ প্রভাব তাঁদের ওপর পড়ার আশঙ্কা কম। হরতালে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের জীবিকার জন্য রাস্তায় বের হতে হয়, কাজের জন্য দূরে যেতে হয়।
বিএনপির নেতারা সোমবার বিকেলে প্রচারপত্র বিলি করে বললেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন করবেন। কোনো রকম অশান্তি সৃষ্টি করবেন না। আমরা আশা করেছিলাম, বিএনপির নেতাদের মধ্যে সত্যি সত্যি কাণ্ডজ্ঞান ফিরে আসবে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা না যেতেই দেখলাম, কী সহিংস উন্মত্ততায় কর্মীরা নেমে পড়লেন বা তাঁদের নামানো হলো গাড়ি পোড়াতে, জ্বালাতে ও ভাঙচুর করতে। গুলিস্তান, শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, ফার্মগেটে একটার পর একটা গাড়ি জ্বলতে লাগল। কাজটি হঠাৎ উত্তেজনাবশত হয়নি। হরতাল-সমর্থকেরা যাত্রীবেশে ট্যাক্সিক্যাবে এবং বাসে উঠে আগুন লাগিয়ে চম্পট দিলেন। একে কী বলা যায়? ঠান্ডা মাথায় নিরীহ মানুষকে মৃত্যু ও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া। ইরাকে, আফগানিস্তানে আত্মঘাতী হামলা হয়। তার পেছনে ভুল হলেও একটি আদর্শবাদ কাজ করে। কিন্তু আমাদের এখানে গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার কৌশলটি হলো কাপুরুষোচিত। সবার অলক্ষ্যে অপকর্মটি করে পালিয়ে যাওয়া। এর আগে দুই আমলেই বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারা হলেও বিচার হয়নি। এবারেও হবে না।
গণতন্ত্রের নামে আমরা আর গাড়ি জ্বালাও-পোড়াও দেখতে চাই না। জানমালের ক্ষতি দেখতে চাই না। যে তরুণদের দিয়ে এই ধ্বংসাত্মক কাজ করানো হয়েছে, তারা অপরাধী বটে। তার চেয়েও বড় অপরাধী, তাদের যাঁরা এই কাজে নামিয়েছেন। ডিজিটাল সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে হুংকার ছাড়েন, তাঁদের দেখে নেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু অপরাধের নেপথ্যে কারা আছেন, তা খুঁজে বের করেন না। এর পেছনে কী রহস্য আছে?
বিএনপির নেতাদের অভিযোগ , হরতালকে কেন্দ্র করে সরকার সারা দেশে গণগ্রেপ্তার চালিয়েছে। তাঁদের কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। সরকার অন্যায়ভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করলে দল অবশ্যই তার প্রতিবাদ করবে, প্রয়োজনে আন্দোলনেও নামবে। তাই বলে প্রাইভেট গাড়ি, সরকারি বাস কেন জ্বালিয়ে দেওয়া হলো? কেন ঢাকায় ও সিলেটে ডজন দুই গাড়ি ভাঙচুর হলো? এর জবাব বিএনপির নেতাদেরই দিতে হবে।
প্রতিবারই হরতালের নামে আমরা রাজপথে এই উন্মত্ততা দেখি। সহিংসতা দেখি। বক্তৃতা-বিবৃতিতে নেতাদের আস্ফাালন দেখি। এর শেষ কোথায়?
৩.
বিজিএমইএর সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেছিলেন, তৈরি পোশাকশিল্পকে হরতালের আওতামুক্ত রাখুন। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি এ কে আজাদ হরতালের বিকল্প বের করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। বিষয়টি মোটেই ভালোভাবে নেননি বিএনপির নেতারা। দলের মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতিকে সরকার মনোনীত লোক হিসেবে চিহ্নিত করে কঠোর ভাষায় তাঁর সমালোচনা করেছেন। খালেদা জিয়া ব্যবসায়ীদের বুঝেশুনে কাজ করতে বলেছেন। তাঁর এ কথার মধ্যে প্রচ্ছন্ন হুমকি রয়েছে। একজন রাজনৈতিক নেত্রী কি এভাবে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিতে পারেন। হ্যাঁ পারেন, যদি তাঁরা তাঁদের কাছ থেকে অন্যায় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকেন। তাহলে বিএনপির নেতারা বলুন, কারা তাঁদের আমলে এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। কারা তখন হাওয়া ভবনের চারপাশে ঘোরাঘুরি করতেন, তাও জানান।
বিজিএমইএর সভাপতির আবেদনের জবাবে আমাদের সাফ কথা হচ্ছে, তৈরি পোশাকশিল্প হরতালের বাইরে রাখা যুক্তিযুক্ত হলে অন্যান্য শিল্প নয় কেন? আমরা চাই, বিশেষ কোনো শিল্প নয়, সমগ্র বাংলাদেশই হরতালের আওতামুক্ত রাখতে হবে। এবং তা সব আমলে। আওয়ামী লীগের আমলে হরতালকে ‘না’ বললে বিএনপির আমলে ‘হ্যাঁ’ হতে পারে না। গণতন্ত্র ও হরতাল একসঙ্গে চলতে পারে না।
আমরা চাই, রাজনীতিতে সুস্থ ধারা ফিরে আসুক, সংসদ কার্যকর হোক। সংসদ যদি কার্যকর না হয়, জনগণ পয়সা দিয়ে এমপি-মন্ত্রী পুষবে কেন? আমরা রাজনীতির নামে সব ধরনের মাস্তানি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরোধী। আমরা হরতাল-অবরোধের বিরোধী। জ্বালাও-পোড়াও-ভাঙচুরের বিরোধী। হরতালে নেতাদের কোনো ক্ষতি নেই। দেশের ক্ষতি হয়। নেতারা হরতাল ডেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে ফের ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর হলেও দেশের লাখ লাখ শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ মহাসংকটে পড়েন। তাঁদের ঘরে থাকার উপায় নেই। জীবিকার জন্য, জীবন ধারণের জন্য রাস্তায় নামতে হয়। হরতালে রাস্তা নিরাপদ নয়। যেকোনো সময় অঘটন ঘটতে পারে। হরতালে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় নারী কর্মীদের।
যে কথা বিএনপির নেতারা হরতাল করে সরকারকে জানাতে চান, সে কথা সংসদে গিয়ে বলেন না কেন? সংসদে তাঁদের কথা বলতে না দিলে সে কথাটাও মানুষকে জানিয়ে দিন। তবু রাস্তাঘাটে মাস্তানি করবেন না। মানুষকে কষ্ট দেবেন না। হরতালের নামে যারা গাড়ি ভাঙচুর করেছে, যারা গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, বড় বড় কথা না বলে সরকারের উচিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। তবে জজ মিয়া কাহিনি সাজাবেন না। প্রকৃত অপরাধীকে ধরুন। মানুষ সালাম জানাবে। অন্যায়ভাবে কাউকে ফাঁসাতে গেলে নিজেরাও একদিন ফেঁসে যাবেন। মনে রাখবেন, ক্ষমতা স্থায়ী নয়।
বিএনপির নেতারা দাবি করেছেন, তাঁরা বাড়ি উচ্ছেদের প্রতিবাদে হরতাল ডাকেননি। হরতাল ডেকেছেন জনজীবনের সমস্যা সমাধানের দাবিতে, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির দাবিতে, জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি সরকার পালন না করার প্রতিবাদে। এ দাবিগুলো ১৩ অক্টোবরের আগে কেন তাঁদের মাথায় আসেনি? আদালতের নির্দেশে খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার পরই বিএনপি নেতারা জনদরদি হয়ে গেলেন। এই আত্মপ্রতারণা দিয়ে আর যা-ই হোক, মানুষের মন জয় করা যায় না।
৪.
গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রধান যে ছবিটি ছাপা হয়েছে, তাতে দেখা যায়, সাবেক সাংসদ দিলদার হোসেনসহ বিএনপির কয়েকজন নেতাকে হাতকড়া পরিয়ে ও হাতে দড়ি বেঁধে গাড়িতে ওঠাতে হচ্ছে। এই নেতা-কর্মীরা কি দুর্ধর্ষ অপরাধী যে হাতকড়া লাগিয়েও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত হতে পারেনি। এ জন্য হাতে-কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিতে হয়েছে! আমরা কোন দেশে বাস করছি?
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা। কারও দ্বারা শান্তি বিঘ্ন ঘটলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করা। তাই বলে সাবেক সাংসদকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিতে হবে কেন? এটি বাড়াবাড়ি। আমরা পুলিশের এই অতি তৎপরতার নিন্দা করি। তারা বলবে, আইন মান্য করেছে। ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ ও তাঁদের চেলাচামুণ্ডারা যখন আইন ভঙ্গ করে, যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর চড়াও হয়, তখন তো তাদের এমন তৎপরতা লক্ষ করা যায় না। আইনের এই একপেশে, পক্ষপাতমূলক ও নিষ্ঠুর প্রয়োগ আইনের শাসন নিশ্চিত করে না, গণতন্ত্রের বিকট চেহারাটাই তুলে ধরে।
=================================
বক্তব্য- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসাবে খায়রুল হককে প্রশ্নবিদ্ধ করাই তাদের উদ্দেশ্য  শিল্প-অর্থনীতি 'করমুক্ত থাকার নানা চেষ্টা নোবেল বিজয়ীর  অনাস্থা নয়, খালেদার আশঙ্কা ছিল ন্যায়বিচার না পাওয়ার  খেলা- 'বাংলাদেশ তো আসলে জিততেই চায়নি!'  আলোচনা- 'ড. ইউনূসের কেলেঙ্কারি!'  খেলা- 'বাংলাদেশকে মাটিতে নামাল জিম্বাবুয়ে'  'ধরিত্রীকে বাঁচাতে কানকুনে সফল হতেই হবে'  স্মরণ- 'চিত্রা ভট্টাচার্যের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি'  রাজনৈতিক আলোচনা- 'আওয়ামী লীগে মিলন ও বিচ্ছেদের নাটকখবর- উইকিলিকসের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র  রাজনৈতিক আলোচনা- 'প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজের প্রত্যাশা আলোচনা- 'পায়ে পড়ি বাঘ মামা, বেঁচে থাকো'  আন্তর্জাতিক- 'পুরনো বন্ধুকে ত্যাগ করতে প্রস্তুত চীন  আমরাই পারি 'দ্বিতীয় রাজধানী' গড়তে  খবর- পুলিশি হরতাল  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'উপদেশের খেসারত'  গল্প- 'স্বপ্নভঙ্গের ইতিবৃত্ত'  স্মরণ- 'জগদীশচন্দ্র বসুর কথা বলি'  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'প্রধানমন্ত্রী কি হরতাল চান?  ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা রাজনীতির নতুমাত্রা  খবর, বিএনপি কর্মীদের দাঁড়াতে দেয়নি পুলিশ  গল্প- 'আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসারে'  গল্প- 'মহামানুষের গল্প' by রাসেল আহমেদ  গল্পালোচনা- 'যেভাবে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়!' by আলী হবিব  জলবায়ু সম্মেলনঃ আমি কেন কানকুনে যাচ্ছি? by মেরি রবিনস  ভ্রমণ- 'মেঘনায় যায় মেঘনা রানী' by সালেক খোকন


দৈনিক প্রথম আলো এর সৌজন্যে
লেখকঃ সোহরাব হাসান
কবি, সাংবাদিক।

এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.