চেলসিতে আনচেলত্তির দিন শেষ?

আরও একটা হেঁচকি উঠেছে চেলসির। আরও একজন কোচের পতন দেখতে যাচ্ছে ‘নীল দুর্গ’? পরশু নিউক্যাসলের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে শীর্ষস্থান হারিয়েছে চেলসি। ক্লাবটির পুরোনো ইতিহাস বিবেচনা করে ইংলিশ সংবাদমাধ্যমও একটি ভবিষ্যৎ পড়ে ফেলেছে—চেলসিতে কোচ কার্লো আনচেলত্তির দিন শেষ!
চ্যাম্পিয়নস লিগে গত মঙ্গলবার জিলিনার বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ের আগেই চাপের মুখে ছিলেন আনচেলত্তি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ৪ ম্যাচের ৩টিতেই হেরে ওই ম্যাচটি খেলতে নেমেছিল ‘ব্লু’রা। সেই চাপ আনচেলত্তি কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন জিলিনাকে হারিয়ে। ম্যানইউর কাছে শীর্ষস্থান হারানোর পর আবার চাপে পড়ে গেছেন। ১৫ ম্যাচ শেষে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ম্যানইউ, চেলসির পয়েন্ট ২৯। অথচ তিন সপ্তাহ আগেও লিগের দ্বিতীয় স্থানে থাকা দলের সঙ্গে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে ছিল চেলসি।
এর আগে দুটি লিগ শিরোপা জিতিয়েও হোসে মরিনহোকে স্টামফোর্ড ব্রিজ ছাড়তে হয়েছিল, কারণ চ্যাম্পিয়নস লিগ তিনি জেতাতে পারেননি। পরে আভরাম গ্রান্টকে বিদায় নিতে হয় টানা কয়েকটা ম্যাচে দল ভালো না করায়। ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ লুই ফেলিপে স্কলারির বিদায়ের কারণও একই। দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে ইংলিশ সংবাদমাধ্যম আনচেলত্তির শেষ দেখতেই পারছে।
চেলসিতে আনচেলত্তির উত্তরসূরি নিয়েও জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। কেউ কেউ বলছে, পেপ গার্দিওলাই হতে যাচ্ছেন স্টামফোর্ড ব্রিজের পরবর্তী গুরু। বার্সেলোনাকে এক বছরে রেকর্ড ৬টি শিরোপা জেতানো গার্দিওলার প্রতি একটা মোহ চেলসি মালিক রোমান আব্রামোভিচের আগে থেকেই যে আছে, এটা সবারই জানা।
কিন্তু আনচেলত্তি কোথায় যাচ্ছেন? জল্পনা, ইতালির মানুষ ফিরে যাচ্ছেন ইতালিতে। দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন এএস রোমার। নিজের দেশের এই ক্লাবের কোচ হওয়ার একটা ইচ্ছা এসি মিলানের সাবেক কোচের ছিল। তবে রোমা চেলসির সাবেক কোচ ক্লদিও রানিয়েরিকে নিয়ে নাকি সুখেই আছে।
আনচেলত্তি অবশ্য এসবকে ‘কিছু নয়’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। বলছেন চেলসিতে তাঁর চাকরিটা নিরাপদ, ‘বাস্তবতা হচ্ছে এসব গুঞ্জনের ব্যাপারে শেষটা কোচই ভালো জানে। আমি গার্দিওলাকে চিনি। কিন্তু আমাদের এখন মাঠের বাইরের ব্যাপার নিয়ে মোটেই আগ্রহ নেই। আমরা চোখ রাখছি শুধু অনুশীলন ও ম্যাচে।’
অনেকের ধারণা, মাঠের বাইরের ঘটনাই চেলসির এই অবস্থার কারণ। কদিন আগে সহকারী কোচ রে উইলকিনসকে বরখাস্ত করেছে চেলসি। উইলকিনসও এটা সহজভাবে মানতে না পেরে আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে চেলসিতে একটা গুমোট পরিবেশ।
এর ওপর আবার জন টেরি, মাইকেল এসিয়েন, অ্যালেক্স, ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডদের মতো খেলোয়াড়দের বাইরে রেখেই খেলতে হচ্ছে চেলসিকে। কেউ চোট, কেউ নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকে আছেন। আনচেলত্তি নিজের চাকরি নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে আপাতত ভাবছেন ওঁদের ফিরে আসা নিয়ে, তাহলেই সব আবার ঠিক হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস তাঁর।
টেরি-ল্যাম্পার্ডরা ফিরলে হয়তো চেলসি মাঠে ভালো করবে। কিন্তু লিভারপুলের বাজে অবস্থা কিছুতেই কাটছে না। পরশু টটেনহাম হটস্পারের কাছে ২-১ গোলে হেরে গেছে ‘অল রেড’রা। ৪২ মিনিটে গোল করে এগিয়ে দেওয়া লিভারপুলকে আত্মঘাতী গোল করেই সমতায় নামিয়েছেন ওই স্কার্টেল। এরপর অ্যারন লেননের ইনজুরি সময়ের গোলে জয় তুলে নেয় ‘স্পার’রা।

No comments

Powered by Blogger.