জিহাদের জন্য ভালোবাসা by কাজী আনিছ ও একরামুল হুদা
(সেই পানির পাইপের ওপর গতকাল ফুল দিয়ে জিহাদের প্রতি ভালোবাসা জানায় স্থানীয় শিশুরা l প্রথম আলো)
সাত-আটজন শিশুর হাতে ফুলের তোড়া। চোখে-মুখে বিষাদের ছায়া। পাইপের ওপর
ফুলের তোড়া দেওয়ার পর এই শিশুদের বিষাদ ছুঁয়ে গেল আশেপাশের লোকজনকেও। গত
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহজাহানপুরে রেলওয়ে কলোনির মাঠের কাছে রেলওয়ে
পানির পাম্পের একটি গভীর পাইপে পড়ে যায় চার বছরের জিহাদ। দীর্ঘ ২৩ ঘণ্টা
পর তার নিথর দেহ উদ্ধার করে কয়েকজন যুবক। উদ্ধার অভিযান নিয়ে সেই দিন থেকেই
সারা দেশের মানুষের ওপর ভর করে উৎকণ্ঠা। শোকাহত অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে
প্রায় প্রতিদিনই যাচ্ছেন শাহজাহানপুরে, সেই পাইপটির কাছে। কেউ দোয়া করছেন,
ভালোবাসা জানাচ্ছেন, কেউবা ফেলছেন চোখের জল। গতকাল সোমবার বিকেলে দেখা
গেল জিহাদের জন্য ওই শিশুদের ফুলেল ভালোবাসা অর্পণের দৃশ্য। এ ফুলের
ব্যবস্থা করে দিয়েছেন রওশন আরা নামের এক নারী। ওই শিশুদের দলে তাঁর সন্তানও
ছিল। রওশন আরা বললেন, ‘আমার ছেলেটা কান্নাকাটি করে বলছিল, জিহাদের জন্য সে
ফুল দিতে চায়। বাচ্চার এ আগ্রহ দেখে ফুলের তোড়া এনেছি।’ ফুল দেওয়া
শিশুরা জানায়, জিহাদ তাদের বন্ধু ছিল। একসঙ্গে খেলাধুলা করত। তার কথা মনে
পড়ছে তাদের।
ওই পাইপটি ঘিরে জিহাদের জন্য স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করার দাবি করেছিলেন অনেকেই। এ শিশুদের ফুল অর্পণের পরও একই দাবি তুললেন উপস্থিত কেউ কেউ। আবার ঘটনাটিকে গুজব বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো এবং জিহাদের পরিবার ও চার শিশুকে হয়রানির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় পুলিশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ তো ছিলই।
পাইপটির মুখ এখন ঢাকনা দিয়ে ঝালাই করা। তার চারপাশ রশি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল সকালে দেখা গেল, পাইপটিকে ঘিরেই মানুষের ভিড়। কথা হয় চট্টগ্রাম থেকে আসা মোবারক ভূঁইয়া নামের একজনের সঙ্গে। বললেন, ‘টেলিভিশনে দেখেছি। একটি কাজের উদ্দেশ্যে সকালে ঢাকায় পৌঁছাই। কিন্তু প্রথমেই এখানে চলে এলাম। সামনাসামনি দেখে আরও খারাপ লাগছে।’ মোবারকের মতোই নিজের অনুভূতি জানালেন মানিকগঞ্জ থেকে আসা শহীদুল ইসলাম।
তবে কেবল জিহাদের প্রতি ভালোবাসা জানাতে গাজীপুর থেকে এসেছেন ফাহিমা বেগম। বললেন জিহাদের জন্য তাঁর কষ্টের কথা।
ঘটনার দিন থেকেই পাইপটি ঘিরে ভিড়। তাই পাইপের কাছে ভিড়তে পারেননি বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম (৬০)। গতকাল সকালে কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ মিলেছে তাঁর। বললেন, ‘ছোট বাচ্চাটার জন্য কষ্ট লাগতেছে। জানি না, এখানে পইড়া সে কেমনটাই না করছিল।
ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবীর এত দিন ছিলেন ঢাকার বাইরে। তবে গতকাল ঢাকায় এসে আর দেরি করেননি। সকালেই চলে এসেছেন শাহজাহানপুর। তিনি বলেন, ‘জিহাদের বাবারে পুলিশ নিয়া গেল। ১২ ঘণ্টা আটকাইয়া রাখল। এ কোন জগতে আমরা বাস করি?’
এত দিন ওই পাইপটির পাশেই আরেকটি গভীর পাইপের ওপর রাখা ছিল শুধুই একখণ্ড পাথর। ঘটনার পরও পাথরটি দুই দিন ছিল। কিন্তু এলাকাবাসী ক্ষোভ জানানোর পর গত রোববার রাতে তাতে ঢাকনা দিয়ে ঝালাই করে দেওয়া হয়। এসব দেখে ঘটনাস্থলে যাওয়া রাইয়ান আল ইসলাম নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী বলল, ‘জিহাদের জীবনের বিনিময়েই কর্তৃপক্ষের টনক নড়ল।’ এসব কথা বলতে বলতেই দেখা গেল ওই পাইপটির পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন এক নারী। জানা গেল, তাঁর নাম লাভলী বেগম, শাহজাহানপুরের বাসিন্দা। জানতে চাইলে চোখ মুছতেই মুছতেই বললেন, ‘কালকেও নামাজ পড়ে কাঁদছি। মনে হইতেছে, জিহাদ আমার সন্তান, নিজের সন্তানকেই হারাইয়া ফেলছি।’
ওই পাইপটি ঘিরে জিহাদের জন্য স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করার দাবি করেছিলেন অনেকেই। এ শিশুদের ফুল অর্পণের পরও একই দাবি তুললেন উপস্থিত কেউ কেউ। আবার ঘটনাটিকে গুজব বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো এবং জিহাদের পরিবার ও চার শিশুকে হয়রানির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় পুলিশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ তো ছিলই।
পাইপটির মুখ এখন ঢাকনা দিয়ে ঝালাই করা। তার চারপাশ রশি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল সকালে দেখা গেল, পাইপটিকে ঘিরেই মানুষের ভিড়। কথা হয় চট্টগ্রাম থেকে আসা মোবারক ভূঁইয়া নামের একজনের সঙ্গে। বললেন, ‘টেলিভিশনে দেখেছি। একটি কাজের উদ্দেশ্যে সকালে ঢাকায় পৌঁছাই। কিন্তু প্রথমেই এখানে চলে এলাম। সামনাসামনি দেখে আরও খারাপ লাগছে।’ মোবারকের মতোই নিজের অনুভূতি জানালেন মানিকগঞ্জ থেকে আসা শহীদুল ইসলাম।
তবে কেবল জিহাদের প্রতি ভালোবাসা জানাতে গাজীপুর থেকে এসেছেন ফাহিমা বেগম। বললেন জিহাদের জন্য তাঁর কষ্টের কথা।
ঘটনার দিন থেকেই পাইপটি ঘিরে ভিড়। তাই পাইপের কাছে ভিড়তে পারেননি বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম (৬০)। গতকাল সকালে কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ মিলেছে তাঁর। বললেন, ‘ছোট বাচ্চাটার জন্য কষ্ট লাগতেছে। জানি না, এখানে পইড়া সে কেমনটাই না করছিল।
ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবীর এত দিন ছিলেন ঢাকার বাইরে। তবে গতকাল ঢাকায় এসে আর দেরি করেননি। সকালেই চলে এসেছেন শাহজাহানপুর। তিনি বলেন, ‘জিহাদের বাবারে পুলিশ নিয়া গেল। ১২ ঘণ্টা আটকাইয়া রাখল। এ কোন জগতে আমরা বাস করি?’
এত দিন ওই পাইপটির পাশেই আরেকটি গভীর পাইপের ওপর রাখা ছিল শুধুই একখণ্ড পাথর। ঘটনার পরও পাথরটি দুই দিন ছিল। কিন্তু এলাকাবাসী ক্ষোভ জানানোর পর গত রোববার রাতে তাতে ঢাকনা দিয়ে ঝালাই করে দেওয়া হয়। এসব দেখে ঘটনাস্থলে যাওয়া রাইয়ান আল ইসলাম নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী বলল, ‘জিহাদের জীবনের বিনিময়েই কর্তৃপক্ষের টনক নড়ল।’ এসব কথা বলতে বলতেই দেখা গেল ওই পাইপটির পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন এক নারী। জানা গেল, তাঁর নাম লাভলী বেগম, শাহজাহানপুরের বাসিন্দা। জানতে চাইলে চোখ মুছতেই মুছতেই বললেন, ‘কালকেও নামাজ পড়ে কাঁদছি। মনে হইতেছে, জিহাদ আমার সন্তান, নিজের সন্তানকেই হারাইয়া ফেলছি।’
No comments