রাজনৈতিক অঙ্গনে আসছে নতুন চমক
নতুন বছরের শুরুতেই রাজনৈতিক অঙ্গনে চমক
দেখাতে যাচ্ছে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই বড়
দুই দলের বিকল্প শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে দলটি। এর অংশ হিসেবে
২৯তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষে ১ জানুয়ারি রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী
উদ্যানে মহাসমাবেশে দশ লাখ লোকের জমায়েত করার পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাপক
প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। এ মহাসমাবেশের নাম
দেয়া হয়েছে ‘মিলিয়ন ম্যান শো’। মহাসমাবেশ থেকে ‘নতুন বার্তা’ দিতে চান দলের
চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
নব্বইয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির এটিই প্রথম মহাসমাবেশ। জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, দলের সাংগঠনিক অবস্থা মজবুত করার পাশাপাশি জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলতে কাজ করে যাচ্ছে দলটি। বড় দুই দলের হানাহানি ও সংঘাতময় রাজনীতির বিকল্প শক্তি হিসেবে ‘শান্তির বারতা’ নিয়ে জাতীয় পার্টি আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। এজন্য দলের পক্ষ থেকে স্লোগান তোলা হচ্ছে- ‘এরশাদ মানেই শান্তি উন্নয়ন ও অগ্রগতি।’ বলা হচ্ছে জাতীয় পার্টি মানে থ্রি-জি অর্থাৎ জাতীয় পার্টি, জাস্টিস (ন্যায়বিচার) এবং জব (কর্মসংস্থান)।
মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু সোমবার যুগান্তরকে বলেছেন, ১ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ হবে স্মরণকালের বড় সমাবেশ। এ সমাবেশের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির শক্তি দেশবাসীসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে দেখাতে চাই। এছাড়া আগামী দিনের রাজপথ জাতীয় পার্টির দখলে রাখার পাশাপাশি রাজনীতির নিয়ামক শক্তি হতেই এই মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ মহাসমাবেশের ডাক দেয়া হলেও জাতীয় পার্টির মূল লক্ষ্য দলের সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শন করা। এজন্য মহাসমাবেশ সফল করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ‘বিগ বাজেট’র এই মহাসমাবেশের আয়োজনের সার্বিক দিক মনিটরিং করছেন স্বয়ং দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু এমপি। জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু নিজেই সামনে থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ করে এসেছেন জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু। দলের শীর্ষ নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন।
ইতিমধ্যে সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মহাসমাবেশের প্রচারণায় ইতিমধ্যে সারা দেশে পোস্টার সাঁটানো ও ব্যানার টানানো হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় পার্টির সবক’টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ব্যাপকসংখ্যক নেতাকর্মী জমায়েত করতে কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগরী ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। নবাবগঞ্জ-দোহার উপজেলা থেকে লাখ লাখ মানুষের সমাগম করতে কাজ করে যাচ্ছেন এ আসনের সংসদ সদস্য, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। সম্প্রতি তিনি জাতীয় মহিলা পার্টির সভানেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। মহাসমাবেশে মহিলাদের বিশাল সমাবেশ করতে ইতিমধ্যে তিনি সর্বাত্মক প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন।
সূত্র আরও জানায়, রাজধানী ঘিরে মূলত বড় আয়োজন। এজন্য গত ৩ সপ্তাহ ধরে বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরা। সঙ্গে আছেন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ইতিমধ্যে ঢাকা শহরে বিভিন্ন স্থানে শতাধিক বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। এছাড়া এক হাজারেরও বেশি ফেস্টুন ও কয়েক লাখ পোস্টার লাগানো হয়েছে। বিশটির মতো তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে আরও কয়েক লাখ পোস্টার ও কয়েকশ’ বিলবোর্ড লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঝখানে মোট তিনটি মঞ্চ নির্মাণ করা হবে। দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে মঞ্চ নির্মাণের কাজ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শুরু করে একদিকে মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব হয়ে পল্টন মোড়, অন্যদিকে শাহবাগ হয়ে বাটা সিগন্যাল পর্যন্ত লাগানো হচ্ছে ১৬০টি মাইক। জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে তিন ধরনের পোস্টার লাগানো হয়েছে প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে। পাশাপাশি থানা ও ওয়ার্ড কমিটির পক্ষ থেকেও আলাদা পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। মহাসমাবেশের প্রচারণার জন্য ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি তার ব্যক্তিগত খরচে ১০টি বিলবোর্ড, ছোট-বড় ১২টি তোরণ, ৪৭ হাজার পোস্টার, ১০টি ফুটওভার ব্রিজে বড় বড় ব্যানার ও কয়েকশ’ ফেস্টুন লাগিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী সুজন দে।
এছাড়া প্রতিদিন পাড়া-মহল্লায় পথসভা, মিছিল ও ট্রাকে করে এরশাদের গান বাজিয়ে, হ্যান্ডমাইকিং চলছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার প্রচারণা। সোমবার শ্যামপুর, দোলাইরপাড়, মুরাদপুর, মতিঝিল, রমনা, ওয়ারী, যাত্রাবাড়ী, কাজলাতে মিছিল ও পথসভা হয়েছে। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন ব্যক্তিগতভাবে লক্ষাধিক পোস্টার লাগিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলার লাখ লাখ মানুষের মাঝে চলছে প্রচারণামূলক কার্যক্রম। বসে নেই মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীরাও। তারাও ইতিমধ্যে লক্ষাধিক পোস্টার লাগানোসহ ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন উত্তরের সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী। দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ১ জানুয়ারির মহাসমাবেশ আয়োজনে বড় অংকের টাকা খরচ হচ্ছে। আয়োজনে কোনো কার্পণ্য করা হচ্ছে না। দলীয় নেতাকর্মীরাই স্বপ্রণোদিত হয়ে মহাসমাবেশের খরচ বহন করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, পার্টির এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় নেতারা এই মহাসমাবেশ সফল করতে মোটা অংকের টাকা দিচ্ছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি সমর্থিত ব্যবসায়ীরাও সহযোগিতা করছেন। সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো অর্থ নিচ্ছি না। মহাসমাবেশের দিন থেকে আমাদের পার্টির চেয়ারম্যান আবারও রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের নিয়ামক শক্তি হয়ে উঠবেন। এ লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক মুক্তির লড়াই জোরদার করবে জাপা -বাবলু : জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু এমপি বলেছেন, দেশের মানুষ সন্ত্রাস, দলীয়করণ, টেন্ডারবাজি, দলবাজি, দুর্নীতি লুটপাট ও পরিবারতন্ত্রের কবল থেকে মুক্তি চায়। সুদৃঢ় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও অর্থনীতির মুক্তির জন্য জাতীয় পার্টির লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ১ জানুয়ারির মহাসমাবেশ থেকে সেই লড়াই সংগ্রামের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বাবলু আরও বলেন, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টি আগামীদিনের আন্দোলনে রাজপথ দখলে রাখতে চায়। একই সঙ্গে ক্ষমতার নিয়ামক শক্তি হিসেবে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবে জাতীয় পার্টি।
সোমবার যাত্রাবাড়ীর নুর কমিনিউটি সেন্টারে জাতীয় ভ্যান শ্রমিক ও মালিক পার্টি আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন মজুমদারের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা-৪ আসনের এমপি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সদস্য সচিব জহিরুল আলম রুবেল, শ্রমিক পার্টির সভাপতি শাহ আলম তালুকদার, যাত্রাবাড়ী থানার সভাপতি তুহিনুর রহমান নুরু হাজী, এমএ সোবহান ও আক্তার দেওয়ান।
আওয়ামী লীগ-বিএনপির কাছে গণতন্ত্র নিরাপদ নয় -
বাবলা : জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগরের (দক্ষিণ) সভাপতি ও ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপির কাছে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। এ দুটি দল গণতন্ত্রের কথা বলে ক্ষমতায় এসে গত দুই যুগ ধরে দেশে দলতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও ব্যক্তিতন্ত্র কায়েম করেছে। তারাই এদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে। জনগণের সেবা করার ওয়াদা করে ক্ষমতায় এসে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকে। এরা উভয়ে ক্ষমতায় এসে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা করে। দলের মহাসমাবেশ সফল করার জন্য সোমবার শ্যামপুর কদমতলী থানা জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের যৌথসভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- কদমতলী থানা জাপার সভাপতি রফিকুল ইসলাম ঠাণ্ডু, শ্যামপুরের সভাপতি কাওসার আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মোল্লা, জহিরুল ইসলাম সরকার, সুজন দে, মাইনুদ্দিন বাবু, জহিরুল ইসলাম জহির, মানিক হোসেন, আসাদ মিয়া প্রমুখ।
নব্বইয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির এটিই প্রথম মহাসমাবেশ। জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, দলের সাংগঠনিক অবস্থা মজবুত করার পাশাপাশি জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলতে কাজ করে যাচ্ছে দলটি। বড় দুই দলের হানাহানি ও সংঘাতময় রাজনীতির বিকল্প শক্তি হিসেবে ‘শান্তির বারতা’ নিয়ে জাতীয় পার্টি আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। এজন্য দলের পক্ষ থেকে স্লোগান তোলা হচ্ছে- ‘এরশাদ মানেই শান্তি উন্নয়ন ও অগ্রগতি।’ বলা হচ্ছে জাতীয় পার্টি মানে থ্রি-জি অর্থাৎ জাতীয় পার্টি, জাস্টিস (ন্যায়বিচার) এবং জব (কর্মসংস্থান)।
মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু সোমবার যুগান্তরকে বলেছেন, ১ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ হবে স্মরণকালের বড় সমাবেশ। এ সমাবেশের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির শক্তি দেশবাসীসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে দেখাতে চাই। এছাড়া আগামী দিনের রাজপথ জাতীয় পার্টির দখলে রাখার পাশাপাশি রাজনীতির নিয়ামক শক্তি হতেই এই মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ মহাসমাবেশের ডাক দেয়া হলেও জাতীয় পার্টির মূল লক্ষ্য দলের সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শন করা। এজন্য মহাসমাবেশ সফল করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ‘বিগ বাজেট’র এই মহাসমাবেশের আয়োজনের সার্বিক দিক মনিটরিং করছেন স্বয়ং দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু এমপি। জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু নিজেই সামনে থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ করে এসেছেন জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু। দলের শীর্ষ নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন।
ইতিমধ্যে সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মহাসমাবেশের প্রচারণায় ইতিমধ্যে সারা দেশে পোস্টার সাঁটানো ও ব্যানার টানানো হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় পার্টির সবক’টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ব্যাপকসংখ্যক নেতাকর্মী জমায়েত করতে কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগরী ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। নবাবগঞ্জ-দোহার উপজেলা থেকে লাখ লাখ মানুষের সমাগম করতে কাজ করে যাচ্ছেন এ আসনের সংসদ সদস্য, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। সম্প্রতি তিনি জাতীয় মহিলা পার্টির সভানেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। মহাসমাবেশে মহিলাদের বিশাল সমাবেশ করতে ইতিমধ্যে তিনি সর্বাত্মক প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন।
সূত্র আরও জানায়, রাজধানী ঘিরে মূলত বড় আয়োজন। এজন্য গত ৩ সপ্তাহ ধরে বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরা। সঙ্গে আছেন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ইতিমধ্যে ঢাকা শহরে বিভিন্ন স্থানে শতাধিক বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। এছাড়া এক হাজারেরও বেশি ফেস্টুন ও কয়েক লাখ পোস্টার লাগানো হয়েছে। বিশটির মতো তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে আরও কয়েক লাখ পোস্টার ও কয়েকশ’ বিলবোর্ড লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঝখানে মোট তিনটি মঞ্চ নির্মাণ করা হবে। দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে মঞ্চ নির্মাণের কাজ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শুরু করে একদিকে মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব হয়ে পল্টন মোড়, অন্যদিকে শাহবাগ হয়ে বাটা সিগন্যাল পর্যন্ত লাগানো হচ্ছে ১৬০টি মাইক। জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে তিন ধরনের পোস্টার লাগানো হয়েছে প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে। পাশাপাশি থানা ও ওয়ার্ড কমিটির পক্ষ থেকেও আলাদা পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। মহাসমাবেশের প্রচারণার জন্য ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি তার ব্যক্তিগত খরচে ১০টি বিলবোর্ড, ছোট-বড় ১২টি তোরণ, ৪৭ হাজার পোস্টার, ১০টি ফুটওভার ব্রিজে বড় বড় ব্যানার ও কয়েকশ’ ফেস্টুন লাগিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী সুজন দে।
এছাড়া প্রতিদিন পাড়া-মহল্লায় পথসভা, মিছিল ও ট্রাকে করে এরশাদের গান বাজিয়ে, হ্যান্ডমাইকিং চলছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার প্রচারণা। সোমবার শ্যামপুর, দোলাইরপাড়, মুরাদপুর, মতিঝিল, রমনা, ওয়ারী, যাত্রাবাড়ী, কাজলাতে মিছিল ও পথসভা হয়েছে। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন ব্যক্তিগতভাবে লক্ষাধিক পোস্টার লাগিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলার লাখ লাখ মানুষের মাঝে চলছে প্রচারণামূলক কার্যক্রম। বসে নেই মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীরাও। তারাও ইতিমধ্যে লক্ষাধিক পোস্টার লাগানোসহ ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন উত্তরের সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী। দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ১ জানুয়ারির মহাসমাবেশ আয়োজনে বড় অংকের টাকা খরচ হচ্ছে। আয়োজনে কোনো কার্পণ্য করা হচ্ছে না। দলীয় নেতাকর্মীরাই স্বপ্রণোদিত হয়ে মহাসমাবেশের খরচ বহন করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, পার্টির এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় নেতারা এই মহাসমাবেশ সফল করতে মোটা অংকের টাকা দিচ্ছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি সমর্থিত ব্যবসায়ীরাও সহযোগিতা করছেন। সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো অর্থ নিচ্ছি না। মহাসমাবেশের দিন থেকে আমাদের পার্টির চেয়ারম্যান আবারও রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের নিয়ামক শক্তি হয়ে উঠবেন। এ লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক মুক্তির লড়াই জোরদার করবে জাপা -বাবলু : জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু এমপি বলেছেন, দেশের মানুষ সন্ত্রাস, দলীয়করণ, টেন্ডারবাজি, দলবাজি, দুর্নীতি লুটপাট ও পরিবারতন্ত্রের কবল থেকে মুক্তি চায়। সুদৃঢ় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও অর্থনীতির মুক্তির জন্য জাতীয় পার্টির লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ১ জানুয়ারির মহাসমাবেশ থেকে সেই লড়াই সংগ্রামের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বাবলু আরও বলেন, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টি আগামীদিনের আন্দোলনে রাজপথ দখলে রাখতে চায়। একই সঙ্গে ক্ষমতার নিয়ামক শক্তি হিসেবে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবে জাতীয় পার্টি।
সোমবার যাত্রাবাড়ীর নুর কমিনিউটি সেন্টারে জাতীয় ভ্যান শ্রমিক ও মালিক পার্টি আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন মজুমদারের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা-৪ আসনের এমপি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সদস্য সচিব জহিরুল আলম রুবেল, শ্রমিক পার্টির সভাপতি শাহ আলম তালুকদার, যাত্রাবাড়ী থানার সভাপতি তুহিনুর রহমান নুরু হাজী, এমএ সোবহান ও আক্তার দেওয়ান।
আওয়ামী লীগ-বিএনপির কাছে গণতন্ত্র নিরাপদ নয় -
বাবলা : জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগরের (দক্ষিণ) সভাপতি ও ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপির কাছে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। এ দুটি দল গণতন্ত্রের কথা বলে ক্ষমতায় এসে গত দুই যুগ ধরে দেশে দলতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও ব্যক্তিতন্ত্র কায়েম করেছে। তারাই এদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে। জনগণের সেবা করার ওয়াদা করে ক্ষমতায় এসে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকে। এরা উভয়ে ক্ষমতায় এসে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা করে। দলের মহাসমাবেশ সফল করার জন্য সোমবার শ্যামপুর কদমতলী থানা জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের যৌথসভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- কদমতলী থানা জাপার সভাপতি রফিকুল ইসলাম ঠাণ্ডু, শ্যামপুরের সভাপতি কাওসার আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মোল্লা, জহিরুল ইসলাম সরকার, সুজন দে, মাইনুদ্দিন বাবু, জহিরুল ইসলাম জহির, মানিক হোসেন, আসাদ মিয়া প্রমুখ।
No comments