‘সুন্দর সংসার ছিল শেষ হয়ে গেল’ -হরতালের আগের রাতে অটোরিকশায় আগুনে গুরুতর দগ্ধ মা ও ছেলে by মানসুরা হোসাইন
স্বামী,
স্ত্রী, দুই ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে ছিমছাম সংসার। পেট্রলবোমার একটি মাত্র
ঘটনায় এই পরিবারটির চেহারাই পাল্টে গেছে। মা ও এক ছেলে গুরুতর দগ্ধ।
দিশেহারা পরিবারটির একটিই কথা—এই পরিবারের দায় কে নেবে?
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের ডাকা হরতালের আগের দিন রোববার রাত আটটার দিকে রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এই আগুনে জ্বলছে পুরো পরিবার। ঘটনায় টগবগে তরুণ তানজিমুল হক (অয়ন) এবং তাঁর মা শামসুন নাহার বেগম গুরুতর দগ্ধ হন। তাঁরা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ৬০২ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সময় অটোরিকশায় শামসুন নাহারের মেয়ে সালমা আনিকাও ছিল। তার কান এবং হাতের কিছু জায়গা দগ্ধ হয়েছে। সেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। ওর চিকিৎসার জন্যই নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে মা ঢাকায় এসেছিলেন। তারপর চোখের সামনেই ঘটে বীভৎস ঘটনা।
গতকাল সোমবার দুপুরে বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া অয়নের পুরো মুখ দগ্ধ হয়ে ফুলে গেছে। পুড়ে যাওয়া চেহারা বীভৎস হয়ে গেছে। চোখ বন্ধ। শ্বাসনালি আক্রান্ত হওয়ায় কথা বলতে পারছেন না। শামসুন নাহারের মুখ, হাত ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দগ্ধ। তবে তিনি কথা বলতে পারছেন।
বড় ছেলেকে উদ্দেশ করে শামসুন নাহার বলছিলেন, ‘চোখ তো মেলতে পারি না। চোখে তো কিছু দেখি না। আমাদের তো জীবনটাই চলে যাচ্ছে।’
দুপুরে ৬০২ নম্বর কেবিনে যাওয়ার আগে ওয়ার্ডের বিছানায় শুয়ে শুয়েই শামসুন নাহার নিজের মনেই বলছিলেন, ‘আনিকা তো কিছু খায়নি।’
অয়নের বড় ভাই চট্টগ্রামে একটি ব্যাংকে কর্মরত মানসুরুল হক প্রথম আলোকে ছোট ভাই সম্পর্কে বলেন, ‘আমি তো ওর মুখের দিকে তাকাতে পারি না। আমাদের কী সুন্দর সংসার ছিল। সব শেষ হয়ে গেল।
অয়নের চাচা জামসেদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোববার ভাবি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মেয়েকে চিকিৎসক দেখানোর জন্য শান্তিনগরে যান। গিয়ে শোনেন চিকিৎসকের শরীর খারাপ, আসেননি। তখন ভাবি মিরপুরে তাঁর ভাইয়ের বাসায় ফিরে যাচ্ছিলেন। তার পরই শুনি এ ঘটনা।’
শামসুন নাহার বেগম হাতিয়া ইউনিয়ন মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। অয়নের বাবা জাবের উদ্দিন ব্যবসায়ী। আনিকা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের (বার্ন ইউনিট) অবৈতনিক উপদেষ্টা চিকিৎসক সামন্তলাল সেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অয়নের ৯ শতাংশ এবং তাঁর মায়ের সারা শরীরের বিভিন্ন জায়গাসহ ১০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। মা ও ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর বেশি এখন আর সেভাবে কিছুই বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
ঘটনার পরই হাসপাতালে অয়নের বন্ধু, বিভাগের বড় ভাই, বোনেরা ছুটে এসেছেন। তাঁরা বলছেন, এখন অয়নের নাটক করা তো দূরের কথা, সে বাঁচবে কি না তাই নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। শুধু রাজনীতির কারণে এভাবে মানুষকে দগ্ধ করার বিষয়ে অয়নের বন্ধু ও অন্যরা তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করেন।
অয়নের পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তবে তার পরও তাঁদের বক্তব্য, দুর্বৃত্তরা শাস্তি পেলেও কি পরিবারটি কখনো আগের জায়গায় পৌঁছাতে পারবে? এর দায় কে নেবে?
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের ডাকা হরতালের আগের দিন রোববার রাত আটটার দিকে রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এই আগুনে জ্বলছে পুরো পরিবার। ঘটনায় টগবগে তরুণ তানজিমুল হক (অয়ন) এবং তাঁর মা শামসুন নাহার বেগম গুরুতর দগ্ধ হন। তাঁরা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ৬০২ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সময় অটোরিকশায় শামসুন নাহারের মেয়ে সালমা আনিকাও ছিল। তার কান এবং হাতের কিছু জায়গা দগ্ধ হয়েছে। সেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। ওর চিকিৎসার জন্যই নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে মা ঢাকায় এসেছিলেন। তারপর চোখের সামনেই ঘটে বীভৎস ঘটনা।
গতকাল সোমবার দুপুরে বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া অয়নের পুরো মুখ দগ্ধ হয়ে ফুলে গেছে। পুড়ে যাওয়া চেহারা বীভৎস হয়ে গেছে। চোখ বন্ধ। শ্বাসনালি আক্রান্ত হওয়ায় কথা বলতে পারছেন না। শামসুন নাহারের মুখ, হাত ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দগ্ধ। তবে তিনি কথা বলতে পারছেন।
বড় ছেলেকে উদ্দেশ করে শামসুন নাহার বলছিলেন, ‘চোখ তো মেলতে পারি না। চোখে তো কিছু দেখি না। আমাদের তো জীবনটাই চলে যাচ্ছে।’
দুপুরে ৬০২ নম্বর কেবিনে যাওয়ার আগে ওয়ার্ডের বিছানায় শুয়ে শুয়েই শামসুন নাহার নিজের মনেই বলছিলেন, ‘আনিকা তো কিছু খায়নি।’
অয়নের বড় ভাই চট্টগ্রামে একটি ব্যাংকে কর্মরত মানসুরুল হক প্রথম আলোকে ছোট ভাই সম্পর্কে বলেন, ‘আমি তো ওর মুখের দিকে তাকাতে পারি না। আমাদের কী সুন্দর সংসার ছিল। সব শেষ হয়ে গেল।
অয়নের চাচা জামসেদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোববার ভাবি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মেয়েকে চিকিৎসক দেখানোর জন্য শান্তিনগরে যান। গিয়ে শোনেন চিকিৎসকের শরীর খারাপ, আসেননি। তখন ভাবি মিরপুরে তাঁর ভাইয়ের বাসায় ফিরে যাচ্ছিলেন। তার পরই শুনি এ ঘটনা।’
শামসুন নাহার বেগম হাতিয়া ইউনিয়ন মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। অয়নের বাবা জাবের উদ্দিন ব্যবসায়ী। আনিকা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের (বার্ন ইউনিট) অবৈতনিক উপদেষ্টা চিকিৎসক সামন্তলাল সেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অয়নের ৯ শতাংশ এবং তাঁর মায়ের সারা শরীরের বিভিন্ন জায়গাসহ ১০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। মা ও ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর বেশি এখন আর সেভাবে কিছুই বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
ঘটনার পরই হাসপাতালে অয়নের বন্ধু, বিভাগের বড় ভাই, বোনেরা ছুটে এসেছেন। তাঁরা বলছেন, এখন অয়নের নাটক করা তো দূরের কথা, সে বাঁচবে কি না তাই নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। শুধু রাজনীতির কারণে এভাবে মানুষকে দগ্ধ করার বিষয়ে অয়নের বন্ধু ও অন্যরা তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করেন।
অয়নের পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তবে তার পরও তাঁদের বক্তব্য, দুর্বৃত্তরা শাস্তি পেলেও কি পরিবারটি কখনো আগের জায়গায় পৌঁছাতে পারবে? এর দায় কে নেবে?
No comments