‘বাবা, প্লিজ ফিরে এসো’
শোকে মুষড়ে পড়েছে এয়ার এশিয়ার পাইলট ক্যাপ্টেন ইরিয়ান্তোর পরিবার। তার মেয়ে অ্যাঞ্জেলা রানাস্তিয়ানিসের হৃদয়স্পর্শী আকুতি, ‘বাবা প্লিজ ফিরে এসো’। ইরিয়ান্তোর এক ভাই গত সপ্তাহে মারা গেছেন। সেই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেক সন্তান ক্যাপ্টেন ইরিয়ান্তোকে হারালেন তিনি। শোকে বিহ্বল পরিবার, আত্মীয়স্বজন ইরিয়ান্তোর বাড়িতে সমবেত হয়ে প্রার্থনা করছেন। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করা হচ্ছে। ইরিয়ান্তোর ২২ বছরের কন্যা অ্যাঞ্জেলা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন, ‘পাপা, প্লিজ ঘরে ফিরে এসো। আমার এখনও তোমাকে প্রয়োজন। আমার বাবাকে ফিরিয়ে দাও।’ এদিকে ইরিয়ান্তোর পিতা সুয়ার্তো শেষবারের মতো ছেলেকে দেখেছিলেন আরেক সন্তানের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার ওই সন্তান। গতকাল পূর্ব জাভা শহর সোদোওর্জোতে অবস্থিত ইরিয়ান্তোর বাড়িতে হাজির হন প্রতিবেশী, বন্ধু এবং স্বজনেরা। একসঙ্গে তারা প্রার্থনা করেন। শোকস্তব্ধ পরিবারের আর্তচিৎকার কখনও কখনও বাইরে থেকেও শোনা যাচ্ছিল। ইরিয়ান্তোর বন্ধু এবং প্রতিবেশী বাগিয়ান্তো বলেন, ইরিয়ান্তো একজন ভালো মানুষ। এ কারণে এখানকার মানুষ তাকে গত দু’বছর এলাকার শীর্ষ ব্যক্তি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, চাকরিতে ব্যস্ত থাকলেও এলাকার নানা কার্যক্রমে ইরিয়ান্তো ছিলেন খুবই সক্রিয়। আশেপাশের মানুষের প্রয়োজনে সবসময়ই এগিয়ে যেতেন ইরিয়ান্তো। তার ভ্রাতুষ্পুত্র ইন্দোনেশিয়ার সংবাদ ওয়েবসাইট দেটিক ডটকমকে বলেন, খুবই স্নেহবান মানুষ ছিলেন তিনি। সবসময়ই মানুষের প্রয়োজনে সাহায্য করতেন। যদি কখনও কোন আত্মীয়স্বজনের কোন প্রকার সাহায্য বা অর্থের প্রয়োজন হতো, আমার চাচা সবসময়ই তার পাশে গিয়ে দাঁড়াতেন। পরিবারের কারো কখনও অর্থ সংক্রান্ত কোন সমস্যা হলে তিনি নিশ্চিতভাবে সাহায্যে এগিয়ে যেতেন। গত পরশু এয়ার এশিয়ার ফ্লাইট ৮৫০১ ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে ১৬২ আরোহী নিয়ে নিখোঁজ হয়। ওই ফ্লাইটের প্রধান পাইলট ছিলেন ইরিয়ান্তো। তিনি যে শুধু বাণিজ্যিক বিমানচালক হিসেবে অভিজ্ঞ ছিলেন তাই নয়। এর আগে তিনি বিমান বাহিনীর অভিজ্ঞ পাইলট ছিলেন। চালিয়েছেন এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান। সবমিলিয়ে ২০ হাজার ঘণ্টা উড্ডয়নের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এর মধ্যে এয়ার এশিয়ার সঙ্গে এয়ারবাস-৩২০তে ৬১০০ ঘণ্টা।
No comments