অনলাইনেই কেটেছে বছর
শীর্ষ
প্রবণতা ২০১৪: ২০১৪ সালে গানের জগতে নতুন ধারার প্রচলন তেমন নেই বললেই
চলে। আগের বছরের মতো এ বছরও গানের শিল্পীরা রীতিমতো লাইনে দাঁড়িয়ে
অনলাইনে গান প্রকাশ করেছেন। অন্তর্জালের জগতেই তাঁরা ছিলেন অন্যান্য বছরের
চেয়ে বেশি সরব হৃদয় খানের ‘তুমিহীনা’ কিংবা প্রীতমের ‘ভোট ফর ঠোঁট’র
সাফল্যর কারণ কী? হয়তো গায়কি বা নির্মাণশৈলী। তবে একটা কথা, এ বছর প্রমাণ
মিলেছে, অনলাইনে প্রকাশই এ সাফল্যকে ত্বরান্বিত করেছে। তবে চলতি বছর
সংগীতের সঙ্গে প্রযুক্তির সম্পর্ক আরও বেশি গাঢ় হয়েছে। এখন শুধু অনলাইনে
গান মুক্তি দিয়েই শিল্পীরা ক্ষান্ত নন। এর প্রচারেও প্রযুক্তির শরণাপন্ন
হন তাঁরা। গানের প্রচারে ইউটিউবে তাঁরা নিয়মিত প্রকাশ করেন মিউজিক ভিডিও।
আর তাতে সত্যিকার অর্থেই মেলে দারুণ সাড়া। একদিকে যেমন ভিডিও দিয়ে সাফল্য
কুড়াচ্ছেন শিল্পীরা। অন্যদিকে অনেকে অ্যালবামের গান অনলাইনে বিনা মূল্যে
বিলিও করছেন। গত বছর জলের গানের সদস্যরা প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে
বলেছিলেন, ‘গান নিয়ে ব্যবসা করব না।’ সে কথাতেই এ বছরও নিজেদের ধরে
রেখেছেন তাঁরা। তাই অনলাইনে তাঁদের ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিতে গান ডাউনলোডের
হিড়িক ছিল বারো মাস। বিনা মূল্যে গান বিলির কথা বলতে গেলে অবশ্য
সংগীতশিল্পী আনুশেহ আনাদিলের নামটিও চলে আসে। তাঁর নিজের ওয়েবসাইটে তিনি
প্রকাশ করেছিলেন একক অ্যালবাম রাই। সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছিলেন দুটি
বিকল্প। কেউ চাইলে যেকোনো মূল্যে কিনতে পারেন গান। না চাইলে অ্যালবামটি
ডাউনলোডও করতে পারেন একেবারে বিনা মূল্যে। ২০১৪ সালে এ শিল্পী তাঁর বাহক
ব্যান্ডের ‘ধিক ধিক’ শিরোনামে একটি গান এ সাইটে প্রকাশ করেন। বিপণন
ব্যবস্থাটা একই। চলতি বছর অনলাইন ছাড়াও মুঠোফোন আর এফএম রেডিও স্টেশনে
অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে। অনেক শিল্পী আবার অনলাইনে গান প্রকাশের চেয়ে
এগিয়ে গেছেন এক ধাপ। তাঁরা নিজেদের নামের অ্যাপস খুলছেন। এঁদের মধ্যে আসবে
ব্যান্ড শিরোনামহীন আর কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের কথা। আসিফ তো এ বছর
একেবারেই হয়ে উঠেছেন অনলাইনবান্ধব। অনলাইনে গানের বাজার প্রসঙ্গে আসিফ
বলেন, ‘সারা বিশ্বে এই মাধ্যমটা স্বীকৃত। অনলাইনে গান ছাড়লে ডাউনলোডের
পরিমাণ দেখেই শিল্পীর জনপ্রিয়তা বোঝা যায়। আমার কাছে মনে হয়, সিডি এখন
একটা স্যুভেনির মাত্র। একটা কোড বা লিংক তো কারও হাতে তুলে দেওয়া যায় না।
তাই স্যুভেনির হিসেবে সিডি দেওয়া হয়।’ তিনি জানান, প্রতি মাসেই তার
দু-তিনটি গান এখন থেকে অনলাইনে প্রকাশ পাবে। চলতি বছর বেশির ভাগ শিল্পী
যুক্ত হয়েছেন আইটিউনস আর অ্যামাজন ডট কম নামের আন্তর্জাতিক মানের বিপণন
ব্যবস্থার সঙ্গে। যাঁরা আইটিউনস, অ্যামাজন বা এমই লেভেল পর্যন্ত পৌঁছাতে
পারেননি, তাঁরা অন্তত সাউন্ড ক্লাউড কিংবা এ ধরনের কিছু অনলাইনভিত্তিক
সাইটে তাঁদের গান প্রকাশ করেছেন। মোদ্দাকথা, সংগীতশিল্পীরা অন্তর্জালের
দুনিয়ায় বাধাহীনভাবে বিচরণ করলেও সিডির বাজারে তাঁরা গত কয়েক বছরের মতো এ
বছরও ছিলেন অনেকটাই নিষ্প্রভ।
No comments