প্রিফারেন্স শেয়ার ছাড়ার অনুমতি পেয়েছে বেলহাসা- লৰ্য যাত্রাবাড়ী-গুলিসত্মান ফাইওভার নির্মাণে ৬শ' কোটি টাকার ফান্ড গঠন by খায়রুল হোসেন রাজু
যাত্রাবাড়ী-গুলিসত্মান ফাইওভার প্রকল্প বাসত্মবায়নে ৬শ' কোটি টাকা প্রদান করবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে সংশিস্নষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ পর্যায়ে নীতিগতভাবে সিদ্ধানত্মও হয়েছে।
এখন শুধু অনুমোদনের অপেৰা। ফাইওভার নির্মাণাধীন মেসার্স বেলহাসা একম এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড থেকে যথাযথভাবে কাগজপত্র পেলেই এ প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে বলেও ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। রাজধানীতে যানজট নিরসনের লৰ্য এই প্রথম রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফাইওভার প্রকল্প বাসত্মবায়নকারী মেসার্স বেলহাসা একম এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের শেয়ারে বিনিয়োগ করছে। এ প্রতিষ্ঠানটি যাত্রাবাড়ী-গুলিসত্মান ফাইওভার নির্মাণের লৰ্যে তহবিল যোগানের জন্য ইতোমাধ্যে ৬শ' কোটি টাকার (প্রিফারেন্স শেয়ার) শেয়ার ছাড়ার অনুমতি পেয়েছে। সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) কতর্ৃপৰ এ কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার অনুমতি দিয়েছে।দেশে এই প্রথমবারের মতো অবকাঠামোগত কোন উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাংক বা আইএমএফ অথবা অন্য কোন দাতা সংস্থার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে দেশের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ নেয়া হচ্ছে। ফাইওভার প্রকল্প বাসত্মবায়নকারী মেসার্স বেলহাসা একম এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের ৬শ' কোটি টাকার শেয়ারে বিনিয়োগের বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে শুরম্ন করে সংশিস্নষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে। বৈঠক আর আলোচনার পরই সংশিস্নষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান যাত্রাবাড়ী-গুলিসত্মান ফাইওভার নির্মাণে বিনিয়োগ করার ৰেত্রে ঐকমত্য পোষণ করেছে বলে জানা গেছে।
৬শ' কোটি টাকার মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংক ১৫০ কোটি এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ ৫০ কোটি টাকা শেয়ারে বিনিয়োগ করবে। এরপর সংশিস্নষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার আবার পুঁজিবাজারে ছাড়া হবে। যাতে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে জনগণ অংশ নিতে পারেন। এর ফলে বাজারেও ভাল শেয়ারের যোগান বৃদ্ধি পাবে। বাজারও শক্তিশালী হবে বলেও বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
যাত্রাবাড়ী-গুলিসত্মান ফাইওভার প্রকল্প বাসত্মবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বেলহাসা এ্যাসোসিয়েটস ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি অগ্রাধিকার শেয়ারের বিপরীতে আগামী ৩ বছর ১০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ প্রদান করবে। ৩ বছর পর অগ্রাধিকার শেয়ারগুলো সাধারণ শেয়ারে পরিণত হবে এবং ৩ বছরের লভ্যাংশ চতুর্থ বছরে প্রদান করা হবে।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলিত দায়িত্ব) কাজী ফখরম্নল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো শুধু মুনাফা করবে তা নয়, এর সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন পলিসি উন্নয়ন করাসহ সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মকা-ও বাসত্মবায়িত করবে। সেই লৰ্যে যাত্রাবাড়ী-গুলিসত্মান ফাইওভার নির্মাণে মেসার্স বেলহাসা একম এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের শেয়ারে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় সোনালী ব্যাংক ওই কোম্পানির ২০০ কোটি টাকার শেয়ারে বিনিয়োগ করবে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে নীতিগত সিদ্ধানত্ম হয়েছে। এখন শুধু অনুমোদনের বাকি। তিনি আরও বলেন, যাত্রাবাড়ী-গুলিসত্মান ফাইওভার নির্মাণে মেসার্স বেলহাসা একম এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের কাছে প্রয়োজনীয় সার্বিক কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। ওইসব কাগজপত্র পাওয়ার পরই ব্যাংক কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করবে। তিনি আরও বলেন, প্রথমে মেসার্স বেলহাসা একম এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের শেয়ারে বিনিয়োগ করা হবে। এরপর দেশের মানুষদের এ অবকাঠামোগত উন্নয়নে সম্পৃৃক্ত করার লৰ্যে কোম্পানিটিকে শেয়ার বাজারে আনা হবে। তখন বিনিয়োগকারীরা এতে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এ বিষয়ে একটি পরিকল্পনাও রয়েছে।
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাসের বখতিয়ার এ ব্যাপারে জনকণ্ঠকে বলেন, যাত্রাবাড়ী-গুলিসত্মান ফাইওভার নির্মাণে মেসার্স বেলহাসা একম এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের শেয়ার ক্রয় করার জন্য ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে সিদ্ধানত্ম প্রায় চূড়ানত্ম হয়েছে। এখন কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে। তবে এ বিষয়ে সামনে আরও বৈঠক হতে পারে। তিনি আরও বলেন, অগ্রণী ব্যাংক প্রাথমিক পর্যায়ে এ কোম্পানিতে ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। শুধু অগ্রণী ব্যাংকই নয়, এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে এসেছে। সংশিস্নষ্ট কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ানত্ম। তবে কিছু দাফতরিক কাজ রয়েছে। সেগুলো বাসত্মবায়িত করা হলেই ওই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ শুরম্ন করা হবে।
এ ব্যাপারে ডিএসইর সভাপতি রকিবুর রহমান বলেন, যাত্রাবাড়ী-গুলিসত্মান ফাইওভারটি বাসত্মবায়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পুরোটাই ব্যাংক বহন করবে এটি সরকারের একটি ভাল উদ্যোগ। কারণ যে কোম্পানিতে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করবে, এটিকে এক পর্যায়ে শেয়ারবাজারে আনা হবে। আর তখন এ ফাইওভারের মালিক হবেন সাধারণ মানুষ। তিনি আরও বলেন, সরকারের উচিত তার হাতে থাকা ভাল ও লাভজনক কোম্পানির শেয়ার বাজারে ছেড়ে অর্থ সংগ্রহ করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা, কর্মসংস্থান করা। যাতে করে বাজারে শেয়ারের সঙ্কট না হয়। একই সঙ্গে বাজারের গভীরতাও বৃদ্ধি পায়।
No comments