তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ এখন পাওয়ার হাউস- ওয়ালমার্টের মতো বিশ্বসেরা বিক্রেতারা ঢাকায় স্থাপন করেছে ‘উৎস অফিস’
বিশ্বে তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ এখন ‘পাওয়ার হাউসে’ পরিণত হয়েছে। বৈশ্বিক পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে এ দেশটি এখন চীনের পরেই, দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। ফলে বিশ্বের নামীদামী সব খুচরা বিক্রেতা তাদের পোশাকের উৎস হিসেবে বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে।
এমনকি টার্গেট ওয়ালমার্টের মতো বিশ্বসেরা বিক্রেতারা ঢাকায় তাদের ‘উৎস অফিস’ পর্যন্ত স্থাপন করেছে।
আন্তর্জাতিক দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিউবন (আইএইচটি) তাদের শনি ও রবিবারের সংখ্যায় এমনই খবর দিয়েছে। আইএইচটি বলছে, রফতানিমুখী তৈরি পোশাক বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। রফতানিমুখী উৎপাদনে এখাতটি ৮০ শতাংশ অবদান রাখছে এবং ৩০ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। তবে বিশাল এ খাতের শ্রমিকরা তাদের উন্নত জীবনধারণের জন্য ক্রমেই অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে অন্যতম প্রধান পোশাক রফতানিকারক দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের দোকানগুলোতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেল লাগানো পোশাক পাওয়া এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা সম্ভব হয়েছে কেবল সস্তা শ্রমশক্তির কারণে। দুনিয়ার মধ্যে এখন সবচেয়ে সস্তা শ্রম বাংলাদেশেই পাওয়া যাচ্ছে। এ দেশটির শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মাসিক বেতন হচ্ছে মাত্র ৩৭ মার্কিন ডলার। গত দুই বছর ধরেই দেশটিতে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে অবস্থান করেছে। এ সময়ে এই সর্বনিম্ন বেতন নিয়ে শ্রমিকদের জীবনযাপন দুষ্কর হয়ে পড়ে। ফলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।
আইএইচটি ঈশ্বরদী ইপিজেডের দুটি কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গত মার্চে হংকং এবং চীনা মালিকানাধীন দুটি কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ১২ জনেরও বেশি শ্রমিক আহত হয়েছে। যদিও এ কারখানা দুটিতে শ্রমিকরা মাসিক সর্বনিম্ন বেতনের কিছু বেশি অর্থাৎ ৫০ ডলার করে পাচ্ছে। তবে এ বেতন ইউরোপের বাজারে তাদের তৈরি একটি নিট সোয়েটারেরও দাম নয়।
বাংলাদেশ সরকার দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে। শুধু তাই নয়, একটি উচ্চ পর্যায়ের সরকারী কমিটি তৈরি পোশাক খাত মনিটর করছে। ওই কমিটিতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও রয়েছেন। নবগঠিত বিশেষ একটি পুলিশ বাহিনীও শিল্প এলাকাগুলোতে টহল দিচ্ছে। কিছু শ্রমিক নেতার প্রতি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশেষ নজর রাখছে।
বিশ্বের নামীদামী ব্র্যান্ডগুলো সব সময়ই দেশে দেশে সস্তা পোশাক খুঁজে বেড়ায়। বাংলাদেশ তাদের জন্য এখন একটি ‘হটস্পট’ বা উপযুক্ত স্থান। বিশেষ করে চীনে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির পর বাংলাদেশ এখন সস্তা পোশাকের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়েছে। এ কারণে বিশ্বের পরামর্শক জায়ান্ট ম্যাককিনসে বাংলাদেশকে ‘পরবর্তী চীন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। শুধু তাই নয়, এ সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামী ২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বর্তমানের চেয়ে তিনগুণ হবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানির পরিমাণ প্রায় ১৮শ’ কোটি ডলার।
গত জুলাইয়ে বিশ্বের নামকরা ১২টি ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা বাংলাদেশের শ্রমিক অসন্তোষ বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা সরকারকে বেতন সংক্রান্ত দাবির সুরাহা করার পরামর্শ দিয়েছে। যদিও শ্রমমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ওই পরামর্শ নাকচ করে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারই ক্ষমতায় এসে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধি করেছে। তারা এ সর্বনিম্ন মজুরি মাসিক ২০ ডলার থেকে ৩৭ ডলারে উন্নীত করেছে।
এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ১৫ কোটি। গত ৪০ বছরে এদেশটি সামাজিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। বিশেষ করে নারী শিক্ষা, শিশু ও মাতৃমৃত্যু, মাথাপিছু আয় ও গড় আয়ুর ক্ষেত্রে এ অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। যদিও সত্তরের দশকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এ দেশটিকেই ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।
এটা সম্ভব হয়েছে তৈরি পোশাক খাতের অবদানের কারণেই। বিশেষ করে এ শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের ৮০ ভাগই নারী। এ বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের কর্মসংস্থানই বাংলাদেশের চিত্র পাল্টে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বানিজ্য বিষয় নিয়ে লবিং করছেন এবং এমন নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন যাতে এই লাখ লাখ শ্রমিকের জীবনমান উন্নত করা যায়।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও আইএইচটিকে জানিয়েছে, সরকার শ্রমিক ইস্যুতে মালিকদের পক্ষে নয়। দেশে একটি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সরকার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে।
তবে আইএইচটি এও বলেছে, পাঁচ হাজার গার্মেন্টস মালিক এক্ষেত্রে সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। তারা বেশ প্রভাবশালী। কারণ এই কারখানা মালিকরাই হচ্ছে প্রধান রাজনৈতিক দাতা। তারা নিউজ মিডিয়া তথা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ারও মালিক। কমপক্ষে ৩০ কারখানা মালিক বা তাদের প্রতিনিধি দেশটির জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে, যা মোট আসনের ১০ শতাংশ।
ঈশ্বরদী ইপিজেডের শ্রমিকদের অভিযোগ হচ্ছে, বছর শেষে তাদের যে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি হওয়ার কথা তা হচ্ছে না। তাদের মাসিক উপস্থিতি বোনাস বা বছরে যে ১৭ দিন ছুটি পাওয়ার কথা তাও প্রদান করা হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে চার ঘণ্টা ওভারটাইম করার পর দুই ঘণ্টার অর্থ প্রদান করা হচ্ছে।
তবে দেশের অধিকাংশ গার্মেন্টস কারখানাই এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের (ইপিজেড) বাইরে। যদিও তিন দশক আগে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিনিয়োগকারীদের ইনসেনটিভ ঘোষণা দিয়ে এই ইপিজেড গড়ে তোলা হয়। তবে এই ইপিজেডগুলো অবশ্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূল। কারণ ইপিজেডগুলোর জন্য রয়েছে পৃথক আইন। তারা নিজস্ব নিয়মে চলে। তুলনামূলকভাবে ইপিজেডের বেতন বেশি এবং পরিবেশ ভাল। শুরুতে ইপিজেডে ইউনিয়ন নিষিদ্ধ থাকালেও, সরকার চাপের মুখে আইন সংশোধন করে সেখানে শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার অধিকার দিয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের নিরাপত্তা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। যদিও ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে ২০১০ সালে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি স্বত্ত্বেও তারা এখন সর্বনিম্ন মজুরি সমন্বয়ের দাবি মানছে না। যদিও নেতৃত্বস্থানীয় বিদেশী ব্র্যান্ডগুলো এই মজুরি সমন্বয়ের প্রতি সমর্থন দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠন ইউএস এ্যাসোসিয়েশন অব ইম্পোর্টার্স অব টেক্সটাইল এ্যান্ড এ্যাপারেলের প্রেসিডেন্ট জুলিয়া কে হাগস বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানাগুলোর উন্নত মান ও পরিবেশ।
তিনি বলেন, কোন কোম্পানিই বলছে না বাংলাদেশের সর্বনিম্ন মজুরি বাড়ানো উচিত নয়। কিন্তু তারা কেউ বলছে না, এই মজুরি কত হওয়া উচিত। তারা শুধু বলছে মজুরি বাড়ানো উচিত।
কারখানা মালিকরা বলছে, অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতারা সত্যিকার অর্থেই মূল্য বাড়াতে চায়। তবে পোশাক ক্রয়ের ক্ষেত্রে তারা কম মূল্যের পোশাক খোঁজে। এই কম মূল্যের কারণে ওয়ালমার্ট ও টার্গেটের মতো বিখ্যাত ব্র্যান্ডের কাজও ছেড়ে দিতে হয়েছে অনেক গার্মেন্টস কারখানাকে।
নিউইয়র্ক টাইমসের খবর
এদিকে নিউইয়র্ক থেকে এনা জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাশালী এবং বিশ্বনন্দিত নিউইয়র্ক টাইমসে আরেকটি সংবাদ এসেছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের স্বল্প মজুরির উপর। এটি হচ্ছে টানা তৃতীয় দিনের সংবাদ-যা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ব্যাপারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে টানা দুদিন বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ২৪ আগস্ট প্রকাশিত হয়েছে শীর্ষ সংবাদ হিসেবে ‘এক্সপোর্ট পাওয়ারহাউজ ফিল্্স প্যাঙ্গস অব লেবার স্ট্রাইফ’ শিরোনামে এবং ২৩ আগস্ট প্রকাশিত এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. ইউনূসকে অপসারণের পর এমডি নিয়োগে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাকে ‘বেহায়াপনা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। উভয় প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নারীদের স্বনির্ভর হবার প্রসঙ্গ রয়েছে এবং বর্তমান সরকারের নানা কর্মকা-ে তা ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করা হয়েছে। আর ২৫ আগস্টে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম হচ্ছে ‘ওয়েজেস ইন বাংলাদেশ ফার বিলো ইন্ডিয়া’ (ডধমবং রহ ইধহমষধফবংয ঋধৎ ইবষড়ি ওহফরধ)। এ সংবাদে বলা হয়েছে, বর্তমানে চীনের পর বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে তৈরি পোশাকের বাজারে দ্বিতীয়, কিন্তু বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরের অস্থিরতা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি জোরালো হওয়ায়। মাত্র ক’বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালেও তৈরি পোশাক রফতানির বাজারে ভারতের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। কিন্তু বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন একেবারেই কম হওয়ায় (ভারতের তুলনায়) রফতানি বাজারে ভারতের স্থান দখল করেছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন অবশ্য বাংলাদেশের নারী শ্রমিকের পারদর্শিতা। স্বল্প বেতন সত্ত্বেও তারা জীবিকার প্রয়োজনে যতটা সম্ভব চমৎকার সার্ভিস দিচ্ছেন সেলাই কাজে। বিলাসী মানুষের প্রথম পছন্দের পোশাক হচ্ছে টমি হিলফিগার, গ্যাপ, ক্যালভিন ক্লাইনের মতো সেরা ব্র্যান্ডের কাপড় তারা তৈরি করছেন নিপুণ কারিগরের মতো। যদিও তাদের মাসিক বেতন হচ্ছে মাত্র ৩৭ ডলার প্রতি মাসে এবং এটি হচ্ছে জাতীয় ন্যূনতম মাসিক মজুরি। অপরদিকে, নিকট প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন একই পরিমাণের না হলেও বাংলাদেশের তুলনায় বেশি বলে নিউইয়র্ক টাইমস উল্লেখ করেছে। খবরে বলা হয়েছে, গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন সম্প্রতি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে কম বেতন হচ্ছে হরিয়ানা রাজ্যে এবং তা মাসিক ৫০০০ ইন্ডিয়ান রুপি অর্থাৎ ৯০ মার্কিন ডলার এবং নয়াদিল্লীতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ১১৭ ডলার করে। টাইমস লিখেছে, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত জুলাই মাসে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন হয়। সে আন্দোলনে মারুটি সুজুকি ফ্যাক্টরিতে তালা লাগানোর পর একজন ম্যানেজারও খুন হয়েছেন। সে ফ্যাক্টরির মাসিক ন্যূনতম মজুরী হচ্ছে ১২৬ ডলার করে। এর আগের দিনের সংবাদে ঈশ্বরদীর এক্সপোর্ট প্রমোশন জোনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি চরম অবজ্ঞা এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মজুরি বৃদ্ধি না করার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে র্যাব কর্তৃক নিগৃহীত হবার ঘটনা বিবৃত হয়েছে ২৪ আগস্টের প্রতিবেদনে।
এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে এবং একই সঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে প্রতিযোগিতার বাজারে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে এহেন আচরণের জের পড়তে পারে গোটা শিল্পে।
নিউইয়র্ক টাইমসের মতো একটি পত্রিকায় টানা তিনদিন বাংলাদেশের হট ইস্যু প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ইমেজ আরেকবার প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন এবং এ প্রচারণা বিশেষ মহলের মদদে হতে পারে বলেও কানাঘুষা রয়েছে কম্যুনিটিতে। তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এসব সংবাদের কোন ব্যাখ্যা অথবা প্রতিবাদ পাঠানো হচ্ছে বলে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত জানা যায়নি।
আন্তর্জাতিক দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিউবন (আইএইচটি) তাদের শনি ও রবিবারের সংখ্যায় এমনই খবর দিয়েছে। আইএইচটি বলছে, রফতানিমুখী তৈরি পোশাক বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। রফতানিমুখী উৎপাদনে এখাতটি ৮০ শতাংশ অবদান রাখছে এবং ৩০ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। তবে বিশাল এ খাতের শ্রমিকরা তাদের উন্নত জীবনধারণের জন্য ক্রমেই অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে অন্যতম প্রধান পোশাক রফতানিকারক দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের দোকানগুলোতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেল লাগানো পোশাক পাওয়া এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা সম্ভব হয়েছে কেবল সস্তা শ্রমশক্তির কারণে। দুনিয়ার মধ্যে এখন সবচেয়ে সস্তা শ্রম বাংলাদেশেই পাওয়া যাচ্ছে। এ দেশটির শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মাসিক বেতন হচ্ছে মাত্র ৩৭ মার্কিন ডলার। গত দুই বছর ধরেই দেশটিতে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে অবস্থান করেছে। এ সময়ে এই সর্বনিম্ন বেতন নিয়ে শ্রমিকদের জীবনযাপন দুষ্কর হয়ে পড়ে। ফলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।
আইএইচটি ঈশ্বরদী ইপিজেডের দুটি কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গত মার্চে হংকং এবং চীনা মালিকানাধীন দুটি কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ১২ জনেরও বেশি শ্রমিক আহত হয়েছে। যদিও এ কারখানা দুটিতে শ্রমিকরা মাসিক সর্বনিম্ন বেতনের কিছু বেশি অর্থাৎ ৫০ ডলার করে পাচ্ছে। তবে এ বেতন ইউরোপের বাজারে তাদের তৈরি একটি নিট সোয়েটারেরও দাম নয়।
বাংলাদেশ সরকার দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে। শুধু তাই নয়, একটি উচ্চ পর্যায়ের সরকারী কমিটি তৈরি পোশাক খাত মনিটর করছে। ওই কমিটিতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও রয়েছেন। নবগঠিত বিশেষ একটি পুলিশ বাহিনীও শিল্প এলাকাগুলোতে টহল দিচ্ছে। কিছু শ্রমিক নেতার প্রতি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশেষ নজর রাখছে।
বিশ্বের নামীদামী ব্র্যান্ডগুলো সব সময়ই দেশে দেশে সস্তা পোশাক খুঁজে বেড়ায়। বাংলাদেশ তাদের জন্য এখন একটি ‘হটস্পট’ বা উপযুক্ত স্থান। বিশেষ করে চীনে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির পর বাংলাদেশ এখন সস্তা পোশাকের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়েছে। এ কারণে বিশ্বের পরামর্শক জায়ান্ট ম্যাককিনসে বাংলাদেশকে ‘পরবর্তী চীন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। শুধু তাই নয়, এ সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামী ২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বর্তমানের চেয়ে তিনগুণ হবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানির পরিমাণ প্রায় ১৮শ’ কোটি ডলার।
গত জুলাইয়ে বিশ্বের নামকরা ১২টি ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা বাংলাদেশের শ্রমিক অসন্তোষ বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা সরকারকে বেতন সংক্রান্ত দাবির সুরাহা করার পরামর্শ দিয়েছে। যদিও শ্রমমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ওই পরামর্শ নাকচ করে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারই ক্ষমতায় এসে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধি করেছে। তারা এ সর্বনিম্ন মজুরি মাসিক ২০ ডলার থেকে ৩৭ ডলারে উন্নীত করেছে।
এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ১৫ কোটি। গত ৪০ বছরে এদেশটি সামাজিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। বিশেষ করে নারী শিক্ষা, শিশু ও মাতৃমৃত্যু, মাথাপিছু আয় ও গড় আয়ুর ক্ষেত্রে এ অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। যদিও সত্তরের দশকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এ দেশটিকেই ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।
এটা সম্ভব হয়েছে তৈরি পোশাক খাতের অবদানের কারণেই। বিশেষ করে এ শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের ৮০ ভাগই নারী। এ বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের কর্মসংস্থানই বাংলাদেশের চিত্র পাল্টে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বানিজ্য বিষয় নিয়ে লবিং করছেন এবং এমন নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন যাতে এই লাখ লাখ শ্রমিকের জীবনমান উন্নত করা যায়।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও আইএইচটিকে জানিয়েছে, সরকার শ্রমিক ইস্যুতে মালিকদের পক্ষে নয়। দেশে একটি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সরকার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে।
তবে আইএইচটি এও বলেছে, পাঁচ হাজার গার্মেন্টস মালিক এক্ষেত্রে সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। তারা বেশ প্রভাবশালী। কারণ এই কারখানা মালিকরাই হচ্ছে প্রধান রাজনৈতিক দাতা। তারা নিউজ মিডিয়া তথা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ারও মালিক। কমপক্ষে ৩০ কারখানা মালিক বা তাদের প্রতিনিধি দেশটির জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে, যা মোট আসনের ১০ শতাংশ।
ঈশ্বরদী ইপিজেডের শ্রমিকদের অভিযোগ হচ্ছে, বছর শেষে তাদের যে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি হওয়ার কথা তা হচ্ছে না। তাদের মাসিক উপস্থিতি বোনাস বা বছরে যে ১৭ দিন ছুটি পাওয়ার কথা তাও প্রদান করা হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে চার ঘণ্টা ওভারটাইম করার পর দুই ঘণ্টার অর্থ প্রদান করা হচ্ছে।
তবে দেশের অধিকাংশ গার্মেন্টস কারখানাই এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের (ইপিজেড) বাইরে। যদিও তিন দশক আগে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিনিয়োগকারীদের ইনসেনটিভ ঘোষণা দিয়ে এই ইপিজেড গড়ে তোলা হয়। তবে এই ইপিজেডগুলো অবশ্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূল। কারণ ইপিজেডগুলোর জন্য রয়েছে পৃথক আইন। তারা নিজস্ব নিয়মে চলে। তুলনামূলকভাবে ইপিজেডের বেতন বেশি এবং পরিবেশ ভাল। শুরুতে ইপিজেডে ইউনিয়ন নিষিদ্ধ থাকালেও, সরকার চাপের মুখে আইন সংশোধন করে সেখানে শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার অধিকার দিয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের নিরাপত্তা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। যদিও ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে ২০১০ সালে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি স্বত্ত্বেও তারা এখন সর্বনিম্ন মজুরি সমন্বয়ের দাবি মানছে না। যদিও নেতৃত্বস্থানীয় বিদেশী ব্র্যান্ডগুলো এই মজুরি সমন্বয়ের প্রতি সমর্থন দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠন ইউএস এ্যাসোসিয়েশন অব ইম্পোর্টার্স অব টেক্সটাইল এ্যান্ড এ্যাপারেলের প্রেসিডেন্ট জুলিয়া কে হাগস বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানাগুলোর উন্নত মান ও পরিবেশ।
তিনি বলেন, কোন কোম্পানিই বলছে না বাংলাদেশের সর্বনিম্ন মজুরি বাড়ানো উচিত নয়। কিন্তু তারা কেউ বলছে না, এই মজুরি কত হওয়া উচিত। তারা শুধু বলছে মজুরি বাড়ানো উচিত।
কারখানা মালিকরা বলছে, অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতারা সত্যিকার অর্থেই মূল্য বাড়াতে চায়। তবে পোশাক ক্রয়ের ক্ষেত্রে তারা কম মূল্যের পোশাক খোঁজে। এই কম মূল্যের কারণে ওয়ালমার্ট ও টার্গেটের মতো বিখ্যাত ব্র্যান্ডের কাজও ছেড়ে দিতে হয়েছে অনেক গার্মেন্টস কারখানাকে।
নিউইয়র্ক টাইমসের খবর
এদিকে নিউইয়র্ক থেকে এনা জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাশালী এবং বিশ্বনন্দিত নিউইয়র্ক টাইমসে আরেকটি সংবাদ এসেছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের স্বল্প মজুরির উপর। এটি হচ্ছে টানা তৃতীয় দিনের সংবাদ-যা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ব্যাপারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে টানা দুদিন বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ২৪ আগস্ট প্রকাশিত হয়েছে শীর্ষ সংবাদ হিসেবে ‘এক্সপোর্ট পাওয়ারহাউজ ফিল্্স প্যাঙ্গস অব লেবার স্ট্রাইফ’ শিরোনামে এবং ২৩ আগস্ট প্রকাশিত এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. ইউনূসকে অপসারণের পর এমডি নিয়োগে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাকে ‘বেহায়াপনা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। উভয় প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নারীদের স্বনির্ভর হবার প্রসঙ্গ রয়েছে এবং বর্তমান সরকারের নানা কর্মকা-ে তা ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করা হয়েছে। আর ২৫ আগস্টে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম হচ্ছে ‘ওয়েজেস ইন বাংলাদেশ ফার বিলো ইন্ডিয়া’ (ডধমবং রহ ইধহমষধফবংয ঋধৎ ইবষড়ি ওহফরধ)। এ সংবাদে বলা হয়েছে, বর্তমানে চীনের পর বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে তৈরি পোশাকের বাজারে দ্বিতীয়, কিন্তু বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরের অস্থিরতা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি জোরালো হওয়ায়। মাত্র ক’বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালেও তৈরি পোশাক রফতানির বাজারে ভারতের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। কিন্তু বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন একেবারেই কম হওয়ায় (ভারতের তুলনায়) রফতানি বাজারে ভারতের স্থান দখল করেছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন অবশ্য বাংলাদেশের নারী শ্রমিকের পারদর্শিতা। স্বল্প বেতন সত্ত্বেও তারা জীবিকার প্রয়োজনে যতটা সম্ভব চমৎকার সার্ভিস দিচ্ছেন সেলাই কাজে। বিলাসী মানুষের প্রথম পছন্দের পোশাক হচ্ছে টমি হিলফিগার, গ্যাপ, ক্যালভিন ক্লাইনের মতো সেরা ব্র্যান্ডের কাপড় তারা তৈরি করছেন নিপুণ কারিগরের মতো। যদিও তাদের মাসিক বেতন হচ্ছে মাত্র ৩৭ ডলার প্রতি মাসে এবং এটি হচ্ছে জাতীয় ন্যূনতম মাসিক মজুরি। অপরদিকে, নিকট প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন একই পরিমাণের না হলেও বাংলাদেশের তুলনায় বেশি বলে নিউইয়র্ক টাইমস উল্লেখ করেছে। খবরে বলা হয়েছে, গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন সম্প্রতি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে কম বেতন হচ্ছে হরিয়ানা রাজ্যে এবং তা মাসিক ৫০০০ ইন্ডিয়ান রুপি অর্থাৎ ৯০ মার্কিন ডলার এবং নয়াদিল্লীতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ১১৭ ডলার করে। টাইমস লিখেছে, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত জুলাই মাসে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন হয়। সে আন্দোলনে মারুটি সুজুকি ফ্যাক্টরিতে তালা লাগানোর পর একজন ম্যানেজারও খুন হয়েছেন। সে ফ্যাক্টরির মাসিক ন্যূনতম মজুরী হচ্ছে ১২৬ ডলার করে। এর আগের দিনের সংবাদে ঈশ্বরদীর এক্সপোর্ট প্রমোশন জোনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি চরম অবজ্ঞা এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মজুরি বৃদ্ধি না করার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে র্যাব কর্তৃক নিগৃহীত হবার ঘটনা বিবৃত হয়েছে ২৪ আগস্টের প্রতিবেদনে।
এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে এবং একই সঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে প্রতিযোগিতার বাজারে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে এহেন আচরণের জের পড়তে পারে গোটা শিল্পে।
নিউইয়র্ক টাইমসের মতো একটি পত্রিকায় টানা তিনদিন বাংলাদেশের হট ইস্যু প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ইমেজ আরেকবার প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন এবং এ প্রচারণা বিশেষ মহলের মদদে হতে পারে বলেও কানাঘুষা রয়েছে কম্যুনিটিতে। তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এসব সংবাদের কোন ব্যাখ্যা অথবা প্রতিবাদ পাঠানো হচ্ছে বলে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত জানা যায়নি।
No comments