দৌলতদিয়ায় রাজধানীমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড়
ঈদের ছুটি শেষে গতকাল শনিবারও রাজধানীমুখী মানুষের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে। পন্টুন থেকে শুরু করে লঞ্চঘাট পর্যন্ত সেতুটির ওপর গিজগিজ করছিল মানুষ। এদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলাচলকারী লঞ্চগুলোতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল দুপুরের দিকে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের লঞ্চঘাট মোড় এলাকা থেকে ঘাট পর্যন্ত মানুষের ভিড় লেগেই আছে। প্রতিটি লঞ্চ নির্ধারিত ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা লঞ্চে যাত্রী ওঠানামার ক্ষেত্রে নিয়ম বেঁধে দিচ্ছেন। লঞ্চগুলোতে পর্যাপ্ত যাত্রী ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার পরও যাত্রীরা নিষেধ না মেনে উঠে পড়ছেন লঞ্চে। এ ছাড়া লঞ্চে ওঠানামার কোনো সিঁড়ি না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে অনেককেই লাফিয়ে ওঠানামা করতে দেখা যায়।
ঘাটে ভেড়ানো লঞ্চ ‘অনন্যা’র মাস্টার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তাঁর লঞ্চে মোট ধারণক্ষমতা ১০০ জন। কিন্তু তিনি প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী বহন করছেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের সময় যাত্রীদের চাপ পড়বেই। লঞ্চের সংখ্যাও কম। তাই যাত্রীরা কিছু না মেনে উঠে পড়েন লঞ্চে। তবে সামর্থ্য অনুযায়ী যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কোনো আশঙ্কা নেই।
ঘাটের ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, প্রতিবছর ঈদের সময় এ ঘাটে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ পড়ে। কর্তৃপক্ষ আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে তেমন সমস্যা হতো না।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার বলেন, ‘অনেক সময় লঞ্চের স্টাফরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করেন। এ কারণে আমি নিজেই ঘাটে এসে বিষয়টি তদারকি করছি।’
ঝুঁকি নিয়ে বেশি যাত্রী বহনের কারণ জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের বন্দর কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘তিন দিন ধরে লঞ্চঘাটে অতিরিক্ত মানুষের চাপ পড়েছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে মোট ৩৭টি লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে একটি দুই দিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। বাকি ৩৬টির মধ্যে বর্তমানে ১২টি আরিচা-নগরবাড়ী রুটে এবং ২৪টি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে চলছে। সব রুটেই এখন যাত্রীদের ভিড়।
এদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথের চ্যানেলের সামনে পানি দ্রুত কমে যাওয়ায় ফেরি চলাচলে সমস্যা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বছর নতুন করে চ্যানেল ঠিক রাখতে ২২ আগস্ট থেকে দৌলতদিয়ার সামনে চ্যানেলের মুখে একটি খনন মেশিন (ড্রেজার) বসানো হয়েছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় নয় হাজার ঘনমিটার মাটি খনন করা হয়েছে। আরও একটি ড্রেজার (কুশিয়ারা) এনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে সেটাও চালু করা হবে।’
No comments